—ফাইল চিত্র।
নীতির প্রশ্নে সরকারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ বেধেছে বারবার। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের পদ ছাড়ার পরেও। এ বার সরকারকে সহিষ্ণুতার পাঠ দিলেন রঘুরাম রাজন। এবং বেশ কড়া ভাষায়।
রাজন বর্তমানে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি পড়ান। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি আজ এক দীর্ঘ নিবন্ধে গণতন্ত্রে সমালোচনা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটাই সবিস্তার মনে করিয়ে দিয়েছেন। লিখেছেন, ‘‘বিরুদ্ধ মতকে দমন করলে তার জেরে খারাপ নীতি প্রণয়নের বিপদ বাড়ে। যে সরকার অন্দরের বা আমজনতার সমালোচনা সম্পর্কে অসহিষ্ণু, আখেরে তারা নিজেদেরই বড় ক্ষতি করে। প্রকৃত ছবিটাই তারা দেখতে পায় না।
বিজেপি বা নরেন্দ্র মোদী সরকারের নাম না-করে রঘুরাম ছত্রে ছত্রে সমালোচনা করেছেন শাসক পক্ষের।
লিখেছেন, ‘‘সমালোচনা করলেই যদি প্রত্যেকে সরকারের কোনও না কোনও অংশ থেকে ফোন পান ও তাঁকে মুখ বন্ধ রাখতে বলা হয়, কিংবা শাসক দলের ‘বাহিনী’ তাঁকে ‘ট্রোল’ করতে শুরু করে— অনেকেই তবে সমালোচনার সুর নরম করে ফেলবেন।’’ অথচ, সমালোচনাই যদি না থাকে, সরকার তবে কৃত্রিম এক সন্তুষ্টির বৃত্তে থেকে যাবে। একটা সময় কিন্তু কঠোর সত্যকে অস্বীকার করার কোনও উপায়ই থাকবে না বলে সতর্ক করেছেন রঘুরাম। রঘুরাম বলেছেন, ‘‘সমালোচনাই পথ শোধরানোর সুযোগ করে দেয়। ভারত এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ এক চ্যালেঞ্জের মুখে। যারা এগিয়ে চলার পথে বাধা সৃষ্টি করছে, সমাজকে আত্মসন্তুষ্ট করে তুলছে— তাদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে দেশকে।’’
রঘুরামের মতে, ভাবনাচিন্তা কোনও সম্প্রদায়ের একচেটিয়া হতে পারে না। গরিষ্ঠের সংস্কৃতি চাপিয়ে দিলে সংখ্যলঘুর চরিত্রই হারিয়ে যাবে। দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে তা কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে। রঘুরাম লিখছেন, ‘‘অতীতের দিকে তাকানো ও গৌরবের বিষয় খুঁজে নেওয়ার প্রবণতা রয়েছে আমাদের। ইতিহাসকে বোঝা ভাল। তবে নিজেদের ইতিহাস এত মহান বলে বুক পেটানোটা আসলে নিরাপত্তহীনতারই পরিচয়। এর ফলও খারাপ হতে পারে।’’ সব শেষে প্রতিযোগিতায় না-যাওয়ার প্রবণতা ঝেড়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন রঘুরাম। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিদেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় গেলেই দেশের সংস্কৃতি, ভাবনা ও প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যাবে, এতটাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারি না আমরা। দেওয়াল তুলে নিজেদের বাঁচাতে গিয়েই বরং আমরা পিছিয়ে পড়েছি। এমনকি শিকার হয়েছি ঔপনিবেশিকতার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy