Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

‘চোখের মণিই’ নাটের গুরু! দাবি রাহুলের

নরেন্দ্র মোদীর ‘নয়নের মণি’ গুজরাত ক্যাডারের এক সিবিআই অফিসারই বিজয় মাল্যকে পালাতে সাহায্য করেছেন বলে তোপ দাগলেন কংগ্রেস সভাপতি। নীরব মোদী ও মেহুল চোক্সীর পালানোর পিছনেও এ কে শর্মা নামে ওই অফিসারের হাত ছিল বলে অভিযোগ রাহুলের।

‘প্রমাণ’ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।ছবি পিটিআই

‘প্রমাণ’ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।ছবি পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৫৬
Share: Save:

আর নিছক প্রশ্ন বা অভিযোগ নয়। ‘প্রমাণ’ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।

নরেন্দ্র মোদীর ‘নয়নের মণি’ গুজরাত ক্যাডারের এক সিবিআই অফিসারই বিজয় মাল্যকে পালাতে সাহায্য করেছেন বলে তোপ দাগলেন কংগ্রেস সভাপতি। নীরব মোদী ও মেহুল চোক্সীর পালানোর পিছনেও এ কে শর্মা নামে ওই অফিসারের হাত ছিল বলে অভিযোগ রাহুলের।

দেশ ছাড়ার আগে তিনি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন বলে মাল্যর মন্তব্যের পরেই রাহুল প্রশ্ন তোলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই কি এই শিল্পপতিকে পালাতে দেওয়া হয়েছিল? একধাপ এগিয়ে শুক্রবার তিনি বলেন, মোদীর সৌজন্যেই মাল্য পালাতে পেরেছেন। আজ ফের প্রধানমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলে রাহুলের অভিযোগ, সিবিআইয়ের যুগ্ম-অধিকর্তা এ কে শর্মা ‘লুকআউট নোটিস’ দুর্বল করে মাল্যকে পালাতে দেন। গুজরাত ক্যাডারের এই আইপিএস প্রধানমন্ত্রীর স্নেহধন্য বা ‘ব্লু আইড বয়’। রাহুলের দাবি, এই অফিসারই নীরব-মেহুলের পালানোর পরিকল্পনার দায়িত্বে ছিলেন। রাহুলের এমন কড়া আক্রমণের পরেই আসরে নেমে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, তাদের অফিসারেরা নীরব-মেহুলের দেশ ছাড়ার সঙ্গে কোনও ভাবে জড়িত নন।

যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই এ কে শর্মা ওরফে অরুণ কুমার শর্মা সিবিআইয়ে যুগ্ম-অধিকর্তা হিসেবে যোগ দেন ২০১৫-র এপ্রিলে। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে। সিবিআইয়ে যোগ দেওয়ার কয়েক মাস পরেই তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ নীতি বিভাগের দায়িত্ব দেওয়ার পিছনে সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে হস্তক্ষেপ করা হয় বলে তখনই অভিযোগ ওঠে। নোট বাতিলের পরে ডিসেম্বরে তাঁকে ব্যাঙ্ক প্রতারণার সমস্ত মামলার তদন্ত দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পিএনবি-র প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার প্রতারণা করে নীরব-মেহুলদের দেশ ছেড়ে পালানো শর্মার জমানাতেই। আজ রাহুল সে দিকেই আঙুল তুলেছেন।

গুজরাতে থাকাকালীন শর্মার নাম একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছে। মোদী মুখ্যমন্ত্রী এবং অমিত শাহ গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন ইশরাত জহান ভুয়ো সংঘর্ষের মামলায় শর্মা সিবিআইয়ের তদন্ত ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। রাজ্যের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘সাহেব’-এর হয়ে বেঙ্গালুরুর এক মহিলার উপরে শর্মা নজরদারি চালিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। অমিতের এই ‘সাহেব’ আসলে মোদী বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

সিবিআইয়ের এক সূত্রের দাবি, মাল্য পালানোর পরে ব্যাঙ্ক কর্তাদের প্রশ্নের মুখে পড়েন তৎকালীন সিবিআই অধিকর্তা অনিল সিন্হা জানান, মাল্যর নামে ‘লুকআউট নোটিস’ যে বদলে ফেলা হয়েছে, তা তাঁর জানা ছিল না। পরে শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ নিয়ে তিনি শর্মাকে প্রশ্ন করলে অনড় শর্মা জানান, মাল্য লন্ডনে গিয়ে আর ফিরবেন না, এমন প্রমাণ সিবিআইয়ের কাছে ছিল না। তিনি তদন্তে সাহায্য করছিলেন। ডাকলে হাজিরও হয়েছেন। বাস্তবে অবশ্য সে সবের আগেই ‘লুকআউট নোটিস’ বদলানো হয়েছিল।

যে কোনও ব্যাঙ্ক প্রতারণার মামলাতেই দেখা মাত্র গ্রেফতারির ‘লুকআউট নোটিস’ জারি হয় বলে সিবিআইয়ের এক অফিসারের যুক্তি। ব্যতিক্রম শুধু মাল্যর ক্ষেত্রে। সেখানে সিবিআই অধিকর্তার অনুমতিও চাওয়া হয়নি। অথচ ৬০ কোটি টাকা পর্যন্ত প্রতারণার মামলায় যুগ্ম-অধিকর্তা স্তরেই সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে দাবি ওই সিবিআই কর্তার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Attack Rahul GAndhi Narendra Modi Vijay MAllya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE