নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
রাফাল নিয়ে জবাব দিতে না পারলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইস্তফা দেওয়া উচিত বলে এ বার দাবি তুললেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।
ফরাসি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দাসো অ্যাভিয়েশনের নিজস্ব নথিতেই লেখা রয়েছে, রাফাল যুদ্ধবিমানের বরাত পেতে হলে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে বরাত দেওয়া ‘বাধ্যতামূলক’ ছিল।
ফরাসি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এই নথিকে নতুন অস্ত্র হিসেবে হাতে নিয়েই আজ রাহুল জানান, দাসো-র নথির থেকে স্পষ্ট, ৩৬টি রাফালের বরাতের ‘বিনিময়ে’ তারা অনিল অম্বানীর সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছিল। রাহুল বলেন, ‘‘অনিল অম্বানীর পকেটে এই ৩০ হাজার কোটি টাকার বরাত প্রধানমন্ত্রী ভরে দিয়েছেন। উনি বলেছিলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হতে চাই না, চৌকিদার হতে চাই। এখন জানা গেল, উনি অনিল অম্বানীর চৌকিদার!’’ তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা চাকরি খুঁজছেন। চাষিরা নিপীড়িত হচ্ছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনিল অম্বানীর চৌকিদারি করছেন!’’
একটি ফরাসি সংবাদমাধ্যমে এর আগে ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বলেছিলেন, মোদী সরকারই অনিলের সংস্থাকে বেছেছিল। বুধবার রাতে ওই সংবাদমাধ্যমেই প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দাসো-র দ্বিতীয় শীর্ষকর্তা ২০১৭-র মে মাসে সংস্থার বৈঠকে বলেন, অম্বানীর সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাধ্যতামূলক। দাসো-কে অনিলের সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নাগপুরে কারখানা গড়তে হবে। দাসো অবশ্য পরে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা নিজেদের পছন্দেই অনিলের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছিল।
ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবারই ফ্রান্সে পৌঁছেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক ছাড়াও দাসো-র কারখানায় যাওয়ার কথা তাঁর। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাহুল বলেন, ‘‘এই সফরের একটাই যুক্তি— দাসো-র উপরে চাপ তৈরি করে ঘটনাটা ধামাচাপা দেওয়া।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘রাফাল চুক্তিকে বৈধ দেখাতে এখন কাল্পনিক বৈঠকের বিবরণী তৈরি হবে!’’
তবে ফ্রান্সে সফররত নির্মলা এ দিন রাহুলের অভিযোগের জবাব দেন। তিনি বলেন, ‘‘ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে হওয়া রাফাল চুক্তিতে কোনও সংস্থার নাম ছিল না।’’ একই সঙ্গে দাসো-র কারখানায় যাওয়া প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমার আমন্ত্রণ আছে। তা ছাড়া ক্রেতা হিসেবেও আমি তো সেখানে যেতেই পারি।’’
তবে রাফাল ক্রমশই অস্বস্তি বাড়াচ্ছে মোদী তথা বিজেপির। দাসো-র নথিকে রাহুল এ দিন অস্ত্র করলেও মোদী সরকারের কোনও মন্ত্রীই এ নিয়ে মুখ খোলেননি। সূত্রের খবর, সরকারি স্তরে দাসো-র ওই নথি নিয়ে খোঁজ শুরু হয়েছে। এত স্পর্শকাতর নথি কী ভাবে সংবাদমাধ্যমের হাতে গেল, তা-ও দেখা হচ্ছে।
রাহুলের আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীকে ‘মিডলম্যান’ বলার পাশাপাশি গাঁধী পরিবারকেই ‘মিডলম্যানদের পরিবার’ বলেছেন। এই মন্তব্য নিয়ে নানা মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। তবে এ সবে কান না দিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘আরও প্রতিরক্ষা চুক্তিতে আরও দুর্নীতি বের হবে। একে একে সে সবও সামনে আসবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy