সরসঙ্ঘচালক মোহন ভগবত এবং কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।
প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পরে এ বার রাহুল গাঁধীও কি সঙ্ঘের সভায় বক্তৃতা দেবেন! দিনভর আজ ওই জল্পনাই চলল দিল্লিতে।
সম্প্রতি হিসেব কষে নিজেদের কট্টর ভাবমূর্তি পাল্টাতে উদ্যোগী হয়েছে সঙ্ঘ পরিবার। গত জুনে তারা নাগপুরে নিজেদের একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে। সঙ্ঘের দাবি, অধিকাংশ বিরোধী দলেরই আরএসএস সম্পর্কে ভুল ধারণা রয়েছে। সঙ্ঘ মানেই যে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন নয়, সঙ্ঘের সঙ্গে রাজনীতির যে যোগ নেই— সেই বার্তা দিতেই দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে ১৭ অগস্ট তিন দিনের একটি আলোচনা সভা করতে চলেছেন মোহন ভাগবতরা। আলোচনার বিষয়বস্তু ‘সঙ্ঘের প্রেক্ষাপটে ভারতের ভবিষ্যৎ’। প্রথম দু’দিন বক্তৃতা দেবেন সঙ্ঘ ও বিভিন্ন দলের নেতারা। শেষ দিনে সঙ্ঘ সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দেবেন সঙ্ঘ প্রধান ভাগবত।
আজ সঙ্ঘ পরিবারের পক্ষ থেকে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়, ওই আলোচনা সভায় সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের পাশাপাশি ডাকা হবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রথম সারির নেতাদের। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, তালিকায় কি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীও রয়েছেন? এ প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি সঙ্ঘের প্রচার প্রমুখ অরুণ কুমার। তিনি জানান, ‘‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে, তা ঠিক করার বিষয়টি সংগঠনের হাতেই ছেড়ে দিন।’’ রাহুলের পাশাপাশি সীতারাম ইয়েচুরির নাম নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। কংগ্রেস অবশ্য জানিয়েছে, আগে আমন্ত্রণ আসুক। তার পরে সিদ্ধান্ত
নেওয়া হবে।
আজ আমন্ত্রণ-বিতর্কের মধ্যেই সঙ্ঘের ভূমিকা নিয়ে সম্প্রতি বিদেশে কংগ্রেস সভাপতির বক্তব্য খণ্ডনে তৎপর হন আরএসএস নেতারা। আরবের মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সঙ্ঘের তুলনা টেনে রাহুল বলেছিলেন, ‘‘সঙ্ঘ-বিজেপি দেশবাসীর মধ্যে বিভাজন তৈরি করছে। তারা ঘৃণা ছড়াচ্ছে।’’ স্বভাবতই রাহুলের ওই বক্তব্যের সমালোচনায় সরব হয়েছিল বিজেপি। আজ মুখ খুলেছে সঙ্ঘ।
রাহুলের মন্তব্যের প্রসঙ্গে অরুণ কুমার বলেন, ‘‘সঙ্ঘ কী রাহুল তা জানেন না। ভারত সম্বন্ধেও তাঁর কোনও ধারণা নেই। আসলে রাহুলের ওই বক্তব্য অসার। কারণ মুসলিম সন্ত্রাসবাদের হাত কতটা বড়, তা তিনি জানেন না!’’
রাহুলের সঙ্ঘ-বিরোধী বক্তব্যের পরে বিজেপি দাবি করে, কংগ্রেস সেবাদল এর আগে বিবৃতি দিয়ে আরএসএসের সংগঠন ও কাজের প্রশংসা করেছে। পরে অবশ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব বিবৃতি দিয়ে জানায়, ‘‘ভুয়ো জাতীয়তাবাদের মুখোশ পরে দেশে ধর্ম, জাতি, ভাষার নামে ঘৃণা ছড়ায় সঙ্ঘ। রাজনৈতিক লাভের জন্য তারা মানুষের মন বিষিয়ে দিচ্ছে। সুতরাং সেবাদলের পক্ষ থেকে সঙ্ঘের প্রশংসা করার প্রশ্নই নেই। পুরোটাই ভুয়ো খবর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy