যোগাসনে: নরেন্দ্র মোদীর পোস্ট করা ভিডিয়োয় নানা কসরত। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। ছবি: টুইটার
দু’হাত তুলে এগোচ্ছেন। হাত জোড় করে পিছোচ্ছেন। কখনও পাথরে চিত হয়ে কোমর সোজা করছেন। কখনও পা মুড়ে বসে অনুলোম-বিলোম। কখনও বা খালি পায়ে হাঁটছেন নুড়ি পাথরে, ঘাসে। কখনও দৌড় ভারসাম্য রেখে।
গাছপালা, বুদ্ধমূর্তি, সকালের স্তব্ধতা, ময়ূরের ডাক— নিখুঁত সাজানো প্রধানমন্ত্রী বাসভবন। গলায় আসামের ‘গামোসা’ আর কালো ট্র্যাকসুট পরে শরীরচর্চা করছেন নরেন্দ্র মোদী।
আজ রাহুলের ইফতারের দিনেই নজর কাড়তে নিজের শরীর চর্চার ভিডিয়োটি পোস্ট করলেন। এমন একটি দিনে, যখন পাক গোলায় সীমান্তে চার জওয়ান মারা গিয়েছেন। তেলের দাম আকাশ ছুঁয়েছে।
কংগ্রেসের ইফতারের টেবিলে প্রবল হাসাহাসি মোদীর এই ভিডিয়ো নিয়ে। সীতারাম ইয়েচুরিকে বললেন রাহুল গাঁধী, ‘‘এই যে! আপনার ভিডিয়োটা কবে পোস্ট করছেন?’’ ইয়েচুরি কাঁচুমাচু মুখ করার ভান করে বললেন, ‘‘ক্ষান্তি দিন ভাই, অনেক হয়েছে!’’ সকলের হাসি থামার পরে রাহুলের মন্তব্য, ‘‘উদ্ভট ব্যাপার সব!’’
অন্য চ্যালেঞ্জের কী হবে
• পেট্রল-ডিজেলের দাম
• অর্থনীতি
• পাক হানায় জওয়ানদের মৃত্যু
• বিরোধী জোট
• উপনির্বাচনে পরাজয়ের হিড়িক
কারও কারও মনে পড়েছে
গ্রিক পুরাণে রাজা সিসিফাসকে তাঁর শঠতার জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছিল, একটা বড় পাথরকে পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত ঠেলে নেওয়া এবং শীর্ষে পৌঁছনোর আগে আবার গড়িয়ে নামানো। এই ভাবে অনন্তকাল পাথর ঠেলা
মোদীর পরামর্শে নিজের অফিসে ‘পুশ-আপ’ করে টুইটে ‘হাম ফিট তো ইন্ডিয়া ফিট’ চ্যালেঞ্জটি শুরু করেছিলেন তাঁর ক্রীড়ামন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠৌর। তার পর তা ছড়াতে শুরু করে। ক্রিকেটার বিরাট কোহলি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন প্রধানমন্ত্রীকে। মোদী তা গ্রহণ করেন। তা-ও দিন কুড়ি আগে।
চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী এখানেই থামলে না হয় কথা ছিল। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন টেবিল টেনিস খেলোয়াড় মনিকা বাত্রাকে। আইপিএস অফিসারদের, বিশেষ করে যাঁরা চল্লিশোর্ধ। আর এর সঙ্গেই জুড়লেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীকে। যিনি বিজেপির সঙ্গে ‘গোপন’ সমঝোতা ছিন্ন করে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেধে সরকার গড়েছেন। আর আজই সে রাজ্যের উপনির্বাচনে প্রথম বার জোট গড়ে জয় হয়েছে কংগ্রেসের প্রার্থীর।
মনিকা, আইপিএস অ্যাসোসিয়েশন তো প্রধানমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জকে স্বাগত জানালেন। কিন্তু কুমারস্বামী প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টা খোঁচাটি দিতে ছাড়েননি। টুইটেই মোদীকে লিখলেন, ‘‘আমার স্বাস্থ্য নিয়ে আপনার উদ্বেগের জন্য ধন্যবাদ। যোগ-ট্রেডমিল রোজই করি। কিন্তু আমি রাজ্যের ফিটনেস নিয়েই বেশি চিন্তিত। সে জন্য আপনার সহযোগিতা চাই।’’ বিজেপি অবশ্য কুমারস্বামীর ঘা খেয়ে বলছে, ‘‘রাজ্যের জন্য কেন মোদীর সহযোগিতা চাইলেন তিনি? তার মানে কংগ্রেস কি তাঁকে সহযোগিতা করছে না?’’
কংগ্রেস বলছে, কর্নাটকে সরকার না-গড়তে পারার হতাশা এখনও কাটেনি প্রধানমন্ত্রীর। তাই নিরন্তর নানান ফন্দি এঁটে চলেছেন। কিন্তু এতে লাভ হবে না। কংগ্রেসের নেতা প্রমোদ তিওয়ারি বলেন, ‘‘সীমান্তে জওয়ান মরছেন। তেলের দাম আকাশছোঁয়া। প্রধানমন্ত্রীর ভ্রূক্ষেপ নেই। তিনি নিজের বিপণনে ব্যস্ত।’’
কংগ্রেসের ইফতারে হাসাহাসির খবর পৌঁছনোর পরেও থামেননি মোদী। তাঁর অনুপ্রেরণায় কত মানুষ যোগ শুরু করে দিয়েছেন, রাতেও সেই সবের ছবি টুইট করেছেন। কারও কারও প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy