সিএএ-প্রতিবাদ দমনে উত্তরপ্রদেশে পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা ও রাহুল গাঁধী। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
সেজে উঠছে জয়পুরের ঐতিহাসিক অ্যালবার্ট হল। চল্লিশ ফুট উঁচু কাট-আউটও চারদিকে। আগামিকাল ‘যুব-আক্রোশ’ জনসভা করবেন রাহুল গাঁধী।
বেশ কয়েক মাস ধরেই সভাপতি পদে ফের রাহুল গাঁধীকে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি চলছে কংগ্রেসে। কিন্তু সেটি ‘খুব শীঘ্র’ হচ্ছে, তেমনটি বলছেন না রাহুল ঘনিষ্ঠ নেতারা। তবে আজ প্রথম বার কংগ্রেসের সংগঠনের দায়িত্বে থাকা কে সি বেণুগোপাল কবুল করেন, রাহুলকে ফেরাতে আগ্রহী দলের অনেকেই। তাঁর কথায়, ‘‘দলের উপর থেকে নীচ পর্যন্ত সকলে চান, রাহুল আমাদের নেতৃত্ব দিন। কিন্তু তাঁর সিদ্ধান্ত নেওয়া এখনও বাকি। আমরা অপেক্ষায় আছি।’’
তবে রাহুল ‘সিদ্ধান্ত’ না নিলেও নিজের টিমকে নামিয়ে দিচ্ছেন দেশের কোণায় কোণায়। আগামিকাল জয়পুরের পরে রাজ্যওয়াড়ি প্রচারও করবেন। দলের এক নেতা রসিকতা করে বললেন, ‘‘এ সবের খরচ জোগাচ্ছেন কোষাধ্যক্ষ আহমেদ পটেলই। বলতে পারেন, বাধ্যই হচ্ছেন। কারণ, সনিয়া গাঁধীও তাই চান।’’ নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় উত্তরপ্রদেশ সরকার ও পুলিশের ‘নির্যাতন’-এর নালিশ জানাতে আজ দিল্লিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে যাওয়ার কথা ছিল প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে জানানো হল, রাহুলই নেতৃত্ব দেবেন। পরে প্রিয়ঙ্কাও টুইট করে বললেন, ‘‘রাহুলের নেতৃত্বেই যাওয়া হয়েছে আজ।’’ ঠিক যে ভাবে রামলীলা ময়দানে ‘রাহুলজি, আমার নেতা’ বলে সম্বোধন শুরু করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা। এর আগে উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপালের কাছে ‘পুলিশি নির্যাতন’-এর সব অভিযোগ, ছবি, ভিডিয়ো, প্রমাণ-সহ জমা দিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কারা। সাড়া না পেয়ে আজ দিল্লিতে মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হলেন। উপস্থিত কংগ্রেসের নেতারা জানান, বৈঠকে প্রিয়ঙ্কাই বলেন, ‘পুলিশ মিত্র’-এর নামে আরএসএসের কর্মীদের ভর্তি করা হচ্ছে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে। কমিশনকে বোঝানোর সে ছবিও বাইরে আসে। কিন্তু পরে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাহুলই আসলে বৈঠকে বলেছেন, ‘‘পুলিশ মিত্রদের ব্যবহার করে ‘গোটা দেশে’ ধারাবাহিক আক্রমণ চালানো হচ্ছে। যেটি সংবিধান ও ভারতের ভাবনার পরিপন্থী। এমন দেশ হতে পারে না, যেখানে শাসক নিজ দেশবাসীর উপরেই নির্যাতন চালায়। সমস্যার গভীরে গেলে কমিশন বুঝতে পারবে।’’ টুইট করেও রাহুল এ কথা জানান। পরে প্রিয়ঙ্কাও টুইট করলেন ‘রাহুলের নেতৃত্ব’-এ জোর দিয়ে।
আরও পড়ুন: সংবিধান ফেরালেন মোদী, দাবি কংগ্রেসের
কংগ্রেসের এক নেতা জানান, রাহুল এ বারে শুরু করবেন রাজ্যে রাজ্যে সফর। বাজেটের আগেই যাবেন কেরলে। আর যুব কংগ্রেসকে বলেছেন, গোটা দেশে বেকারির পঞ্জি তৈরি করতে। সে তালিকা দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীকে। সংসদের বাজেট অধিবেশনের সময়েই। সনিয়া গাঁধী আজ এর মধ্যেই সংসদের কৌশল ঝালিয়ে নিয়েছেন। নাগরিকত্ব আইন, এনপিআর, এনআরসি, বেকারি নিয়ে সরকারকে নিশানা করা হবে। সনিয়া জানান, বিরোধী দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে সংসদে আক্রমণাত্মক হতে হবে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশে ‘কৃষক যাত্রা’ শুরু করবেন প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু বিজেপির অভিযোগ, আগামিকাল কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে রাহুলের সভার জন্য স্কুলে-স্কুলে নির্দেশ গিয়েছে, বাস ভরে আসতে হবে জনসভায়। ছুটি থাকবে স্কুল! আর কত বার রাহুলকে ফেরাতে চায় কংগ্রেস?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy