ভক্ত: রাজস্থানে বিধানসভা ভোটের প্রচার শুরু করলেন রাহুল গাঁধী। শনিবার জয়পুরের গোবিন্দদেব জি-র মন্দিরে পুজোও দিলেন কংগ্রেস সভাপতি। সঙ্গে ছিলেন সচিন পায়লট। পিটিআই
রাজস্থানে ভোটের প্রচার শুরু করে দিলেন কংগ্রেস সভাপতি। গোড়াতেই স্পষ্ট করে দিলেন, লড়াইটা আসলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তাঁর সরকার ও দলের বিরুদ্ধে। রাজ্যে বসুন্ধরা রাজে সরকারের বিরুদ্ধে হাওয়া কতটা, তা নিয়ে ভাবনা রয়েছে বিজেপির অন্দরেই।
প্রচারে পরের দিকে হয়তো সে সব প্রসঙ্গ আসতে পারে, তবে আপাতত রাফাল দুর্নীতি, দলিত-নিপীড়ন, মোদীর অপশাসন ও কথার খেলাপ— এগুলি নিয়েই সরব হলেন রাহুল। তাঁর জয়পুর সফরে মিশেল রইল একটু নরম হিন্দুত্বেরও।
গুজরাতের গত ভোটে রাহুলের একের পর এক মন্দিরে যাওয়া চাপে ফেলে দিয়েছিল মোদী, অমিত শাহদের। বিজেপি শাসিত রাজস্থানে রোড-শো, জনসভা দিয়ে ভোটের প্রচার শুরু করেই রাহুল আজ পৌঁছে যান এখানকার গোবিন্দদেবজি-র মন্দিরে। পুজো দেন। সংবাদমাধ্যমে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে তাঁর পুজো দেওয়ার ছবি। দলের সহ-সভাপতি হয়েছিলেন এই শহরেই। সভাপতি হওয়ার পরে এই প্রথম পা দিলেন জয়পুরে। বিমানবন্দর থেকে রামলীলা ময়দান পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার রোড-শো করেন রাহুল। দলের কর্মী সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে অন্তত ১৪টি জায়গায় থামাতে হয় তাঁর জন্য বিশেষ ভাবে ডিজ়াইন করা বাস।
সাড়ে চারটেয় সভা। তার আগেই মোদী ও তাঁর বাহিনীকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ শুরু করে দেন রাহুল। টুইটারে দলিতদের বিরুদ্ধে হিংসা বেড়ে যাওয়া নিয়ে খবরের লিঙ্ক পোস্ট করেন। তবে রাফাল চুক্তি নিয়েই রাহুলের আক্রমণের ঝাঁঝ ছিল সব থেকে বেশি। তাঁর বক্তব্য, মোদী নিজেকে দেশের চৌকিদার বলে দাবি করেন। অথচ দেড় ঘণ্টার বক্তৃতায় এক বারও রাফাল প্রসঙ্গে কিছু বলেন না। এর পরে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলে রাহুল বলেন, ‘‘তিন গুণ বেশি দামে ওই যুদ্ধবিমানগুলি কেনা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নন, টাকা গিয়েছে মোদীরই পকেটে। তাঁর বন্ধু হওয়া ছাড়া আর কোনও যোগ্যতাই নেই অনিল অম্বানীর।’’
বছরে দু’কোটি কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারাটা মোদী সরকারের বড় দুর্বলতা। এ নিয়ে জয়পুরের সভায় মোদীকে তুলোধোনা করেন রাহুল। তাঁর বক্তব্য, রাফাল যুদ্ধবিমানগুলি তৈরি হবে ফ্রান্সে। যার অর্থ ভারতীয়রা কাজ পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়াকে’ বিঁধে রাহুল বলেন, ‘‘চিন ২৪ ঘণ্টায় ৫০ হাজার তরুণকে কাজ দেয়। আপনাদের ফোনে লেখা ‘মেড ইন চায়না’। কারণ ওরা সেলফোনের কারখানায় এত লোককে কাজ দেয়। রাহুলের কথায়, ‘‘আমাদের জনসংখ্যা প্রায় একই রকম। আমি মনে করি, আমাদের যুব সম্প্রদায় চিনের যুবকদের চেয়েও বেশি ক্ষমতা ধরেন। কিন্তু তাঁদের হাতে কাজ দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ এই সরকার।’’
মেয়েদের শিক্ষা ও সুরক্ষার প্রশ্নে রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বিধায়ক ধর্ষণ করলে প্রধানমন্ত্রী টুঁ শব্দটি করেন না। তিনি বলেন, বেটি বচাও, বেটি পঢ়াও। মেয়েদের কার হাত থেকে বাঁচাতে হবে, সেটা অবশ্য বলে না সরকার।’’
রাহুলের আরও অভিযোগ, ‘‘এই সরকার দু’বছরে ১৫ জন শিল্পপতির ২ কোটি ৩০ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ হিসেবের খাতা থেকে মুছে ফেলেছে। আমি যখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কৃষকদের ঋণ মকুবের জন্য আর্জি জানালাম, কোনও সাড়া মিলল না।’’ রাহুল তাই বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘‘বড় শিল্পপতিরা ঋণ শোধ না করলে সেটা অনুৎপাদক সম্পদ! আর চাষিরা দেনা শোধ করতে না পারলে ঋণখেলাপি তকমা দিয়ে তাঁদের জেলে পোরা হয়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy