অশোক গহলৌত।
মাঠে নেমেছে দু’পক্ষই। আসলে তিন পক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত বনাম বিদ্রোহী সচিন পাইলট শিবিরের দ্বন্দ্বের মধ্যেই কংগ্রেসের অভিযোগ, সচিন-শিবিরকে আড়াল থেকে সাহায্য করছে বিজেপি। কারণ কংগ্রেসের অন্তর্কলহের সুযোগ নিয়ে কিছু বিধায়ককে ভাঙিয়ে কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজস্থানেও সরকার গড়তে সক্রিয় নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহের দল। এই পরিস্থিতিতে নিজের শিবিরের বিধায়কদের ধরে রাখতে রাজধানী জয়পুরের একটি পাঁচতারা হোটেল থেকে সরিয়ে সোনার কেল্লার শহর জয়সলমেরের হোটেল-দুর্গ সূর্যগড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনটি চার্টার্ড বিমানে চাপিয়ে প্রথম দফায় ৫০ জন বিধায়ককে থর মরুভূমির কাছে ওই পাঁচতারা হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরবর্তী ধাপে বাকিদেরও ওই হোটেল-সহ বিভিন্ন রিসর্টে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজস্থানের পরিবহণ মন্ত্রী প্রতাপ সিংহ। আগামী ১৭ অগস্ট বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষা দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন গহলৌত নিজেই। তত দিন পর্যন্ত নিজের শিবিরের বিধায়কদের ধরে রাখতে পারাটাই চ্যালেঞ্জ তাঁর।
কিন্তু শেষ রক্ষা হবে তো? প্রবল আশাবাদী হয়েও বিজেপিকে নিয়ে চিন্তা থেকেই যাচ্ছে গহলৌতের। সচিন পাইলটের বিদ্রোহ সামাল দেওয়ার অঙ্কের মধ্যেই বিজেপিকে নিয়ে উদ্বেগ আড়াল করছেন না তিনি। কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ বা তারও আগের গোয়ার উদাহরণ অজানা নয় গহলৌতের। তাই সরাসরিই অভিযোগ করেছেন, রাজ্যপাল বিধানসভা অধিবেশনের দিন ঠিক করার পরে কংগ্রেসের বিধায়কদের কেনার জন্য ‘দর’ বাড়াচ্ছে বিজেপি। কেন্দ্রের শাসক দল অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু বিজেপি যে রাজস্থানেও মধ্যপ্রদেশ-কর্নাটক ‘মডেল’ কাজে লাগাচ্ছে, তা প্রমাণ করতে গহলৌত সরকার এখন সঞ্জয় জৈনের মামলাটি নিয়ে সক্রিয় হয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, এই সঞ্জয় জৈন বিজেপি নেতা এবং তিনি বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়ক ও সচিন শিবিরের নেতা বনোয়ারলাল শর্মার মাধ্যমে কয়েক জন বিধায়ককে টাকার টোপ দিয়েছিলেন। এই সংক্রান্ত একটি অডিয়ো টেপ হাতে থাকার দাবিও করেছে রাজস্থান সরকার। বিজেপি বিষয়টি অস্বীকার করলেও আদালতে অভিযোগ প্রমাণ করতে সঞ্জয় জৈনের কণ্ঠস্বরের নমুনা পেশ করতে চায় রাজস্থান পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপ (এসওজি)। সঞ্জয় জৈন সেই নমুনা দিতে অস্বীকার করায় বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে যাচ্ছে এসওপি। আজও দুর্নীতির অভিযোগে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক বনোয়ারলাল ও বিশ্বেন্দ্র সিংহকে হরিয়ানার মানেসরের হোটেলে নোটিস দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে এসওপি। রাজস্থান-কাণ্ডের প্রথম থেকেই কংগ্রেস অভিযোগ করছে, বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় গিয়ে তদন্ত চালাতে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের বিধানসভার সদস্যপদ খারিজ নিয়ে মামলায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজস্থান কংগ্রেসের চিফ হুইপ মহেশ জোশী। ১৯৯২ সালের রায়কে হাতিয়ার করেই হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তিনি।
গহলৌত সরকারকে বিপাকে ফেলতে বিএসপি-র ৬ বিধায়কের কংগ্রেসে যোগদানের বিষয়টি নিয়ে আদালতে গিয়েছে বিজেপি। তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে মায়াবতীর দল। এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না কংগ্রেস। মায়াবতীর দলকে বিজেপির ‘বি’ টিম আখ্যা দেয় তারা। গহলৌত আজ টুইট করে বলেন, গত বছর তেলুগু দেশমের ৪ জন রাজ্যসভা সাংসদ বিজেপিতে যোগ দেন। সেটি যদি ন্যায় হয়, তা হলে এই ঘটনায় অন্যায় কোথায়, প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: লাদাখে আরও লাল ফৌজ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy