জেল থেকে শম্ভুলাল।
মাস দু’য়েক আগে তার ভিডিও আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে। পশ্চিমবঙ্গের দিনমজুর মহমম্দ আফরাজুলকে কুপিয়ে খুন করে তাঁর দেহ জ্বালিয়ে দিয়ে সেই খুনের ভিডিও আপলোড করেছিল রাজস্থানের রাজসমন্দের বাসিন্দা শম্ভুলাল রেগার। এ বার আরও দু’টি নতুন ভিডিও পোস্ট করে ফের শিরোনামে সে। জোধপুরের জেলে বসে মোবাইল ফোনে শম্ভুলাল কী করে এই জোড়া ভি়ডিও বার্তা রেকর্ড করল, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই শম্ভুলালকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর।
গত বছর ডিসেম্বরের গোড়ায় মালদহের বাসিন্দা আফরাজুলকে নৃশংস ভাবে খুন করে সেই খুনের গোটা প্রক্রিয়া নিজেরই এক নাবালক আত্মীয়কে দিয়ে মোবাইল ভিডিও তুলে রেখেছিল শম্ভুলাল। ‘লভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে কড়া বিবৃতিও দিতে শোনা গিয়েছিল তাকে। পুলিশ তখন জানিয়েছিল, স্থানীয় কোনও এক হিন্দু যুবতীকে বিয়ে করে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে গিয়ে ধর্ম পরিবর্তন করিয়েছিলেন আফরাজুল। এর প্রতিশোধ নিতেই আফরাজুলকে সে খুন করেছে বলে দাবি করেছিল শম্ভুলাল। সেই ভিডিও দেখে পুলিশ শম্ভুলালকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে জোধপুরের এক জেলে বন্দি রয়েছে তিন সন্তানের বাবা বছর ছত্রিশের শম্ভুলাল। একই জেলে রয়েছে আসারাম বাপুর মতো হাই-প্রোফাইল অপরাধীও।
রাজস্থান পুলিশের একটি সূত্র স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, দু’দিন আগে শম্ভুলালের নতুন দু’টি ভিডিও গোটা রাজ্যে ভাইরাল হয়। ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, হুডে মাথা ঢাকা অবস্থায় কানে ইয়ারফোন গুঁজে একটানা বলে চলেছে শম্ভুলাল। ওই ভিডিও বার্তাতেও ‘লভ-জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছে শম্ভুলাল। তার কথায়, ‘‘কোনও হিন্দু মেয়ের প্রতি হুমকি আমি সহ্য করতে পারি না। আমার জীবনটা শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাতে আমার কোনও অনুশোচনা নেই। শুধু পুলিশ আর সংবাদমাধ্যম ওই মেয়েটির সঙ্গে আমার অবৈধ সম্পর্কের কথা চাউর করায় আমি মর্মাহত।’’ প্রসঙ্গত, গোটা দেশের সংবাদমাধ্যমই তখন জানিয়েছিল, আফরাজুল যাঁকে বিয়ে করেছিলেন, তাঁর প্রতি শম্ভুলালেরও সম্ভবত আসক্তি ছিল। আর সেই রাগ থেকেই এই খুন। শম্ভুলাল ভিডিও বার্তায় আরও জানিয়েছে, জেলে তাকে খুব সুরক্ষিত একটি ঘরে রাখা হলেও পশ্চিমবঙ্গেরই এক অপরাধী তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের পরে পড়ে রইলেন ১৮ ঘণ্টা!
এই ভিডিও-র কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ওই জেলে টুজি নেটওয়ার্কের জ্যামার রয়েছে। কিন্তু পুলিশের ধারণা, খুব সম্ভবত, শম্ভুলাল থ্রি-জি বা ফোর-জি নেটওয়ার্কের ফোনে গোটা কাজটি সেরেছে। পুলিশকে শম্ভুলাল নাকি জানিয়েছে, ওই ফোনটি তার নয়। তা হলে কার থেকে পেল সে এই ফোন? কোনও জবাব দেয়নি শম্ভুলাল। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুলাবচন্দ কাটারিয়া গোটা বিষয়টির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এফআইআর দায়ের হয়েছে জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে, শম্ভুলালের সেলে তল্লাশি চালিয়ে কোনও মোবাইলের খোঁজ মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy