Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
CAB

যুগান্তকারী, সিএবি নিয়ে বললেন প্রধানমন্ত্রী || ‘গণতন্ত্রের কালো দিন’ মন্তব্য সনিয়ার

কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী আজকের দিনটিকে ‘কালো দিন’ আখ্যা দিয়েছেন।

রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল।

রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:০৮
Share: Save:

সোমবার লোকসভার পর বুধবার রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। প্রায় সাত ঘণ্টার টান টান বিতর্কের শেষে এই বিল নিয়ে ভোটাভুটি হয় ভোটের ফল ১২৫-১০৫। অর্থাৎ বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ১২৫টি, বিপক্ষে ১০৫। এ বার রাষ্ট্রপতি সই করলেই আইনে পরিণত হবে এই বিল। এই বিল পাশের জন্য সব সাংসদকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

বিল আইনে পরিণত হওয়ার পর ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে ছ’টি অ-মুসলিম (হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি, খ্রিস্টান) শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত সরকার।

বিল পাশের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টুইট, ‘‘দেশ ও দেশবাসীর ভাবাবেগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন আজ। রাজ্যসভায় সিএবি-২০১৯ পাশ হওয়ায় আমি খুশি। বিলের পক্ষে যাঁরা ভোট দিয়েছেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। যাঁরা বহু বছর ধরে ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার, তাঁদের স্বস্তি দেবে এই বিল।’’ অন্য দিকে, টুইট করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “সংসদে নাগরিকত্ব বিল পাশ হওয়ায় কয়েক কোটি বঞ্চিত মানুষের স্বপ্ন পূরণ হল আজ। এর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”

আরও পড়ুন: রাজ্যসভাতেও পাশ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ১২৫- ১০৫ ভোটে জয় শাসক দলের

অন্য দিকে, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী আজকের দিনটিকে ‘কালো দিন’ আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর টুইট, ‘‘ভারতের সংসদীয় ইতিহাসে আজ এক কালো দিন। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের মাধ্যমে ভারতের বহুত্ববাদকে হারিয়ে সংকীর্ণ মানসিকতা ও অসহিষ্ণুতার জয় হল।

রাজ্যসভায় বিলের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের দৌত্যে এনডিএ জোটের পাশে দাঁড়াল একাধিক দল। অন্য দিকে, নিজেদের একজোট করতে ব্যর্থ হল বিরোধীরা।

আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ দুই রাজ্য, ত্রিপুরায় পুলিশের গুলি, গুয়াহাটিতে কার্ফু

সোমবার পাশ হয়েছিল লোকসভায়। এর পর বুধবার বিল পেশ হওয়ার পর রাজ্যসভায় দীর্ঘ বিতর্ক হয় শাসক ও বিরোধী দলের সাংসদদের মধ্যে। কংগ্রেস, তৃণমূল, বামদলগুলি এই বিলের বিরোধিতায় সরব হয়। কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা, কপিল সিব্বল, পি চিদম্বরমদের বক্তব্য, সংবিধান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। এই বিল ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে। ভারতীয় সংবিধানের উপর, ভারতের আত্মার উপর আঘাত।

তার আগে বিল পেশের পরে পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, দেশভাগের জন্য দায়ী কংগ্রেস। সেই প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহের উদ্দেশে কংগ্রেস সাংসদ আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘আপনি কংগ্রেসের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উপর দেশভাগের দোষ চাপাচ্ছেন, এটা ঠিক নয়। এই ভাবে ইতিহাস বদলানো যায় না। আপনি রাজনীতি করব না বলেও রাজনীতি করছেন।’’ কপিল সিব্বলও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, ‘‘আপনি কোন ইতিহাস পড়েছেন জানি না। আপনি ইতিহাসই পাল্টে ফেলতে চাইছেন. কিন্তু এই ভাবে ইতিহাস বদলানো যায় না।’’

বিল পেশের শুরুর দিকেই বিতর্কে অমিত শাহ অবশ্য মুসলিমদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘এ দেশে বসবাসকারী মুসলিমদের আশঙ্কার কোনও কারণ নেই।’’ বিলের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

বিতর্কের সময় তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘হিটলারের মতো ভুয়ো প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। যাঁরা দেশে রয়েছেন তাঁদের অধিকারই সুরক্ষিত নয়। আপনারা আশ্বাস দিলেও আশঙ্কার কারণ আছে। কারণ নোটবন্দির সময়েও আপনি আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সকলে জানেন কী পরিস্থিতি হয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE