Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
PNB Scam

চোক্সী-মাল্যদের ৬৮ হাজার কোটির ঋণ মকুব হয়েছে, জানাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক!

রামদেবের পতঞ্জলীর শাখা সংস্থা রুচি সয়া ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামও। এই সংস্থার মকুব করা ঋণের অঙ্ক ২২১২ কোটি।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২০ ১৮:৫৫
Share: Save:

ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে তা না মিটিয়ে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন কেউ। কেউ আবার দেশে থেকেও ঋণের টাকা ফেরত দেননি। উল্টে তাঁদের বিপুল পরিমাণ ঋণ মকুব করে দিয়েছে দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। তথ্য জানার অধিকার আইনে এমন ৫০টি সংস্থার তালিকা সামনে আসতেই এ নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। এই তালিকা দিয়েছে আরবিআই। ওই তালিকায় রয়েছে মেহুল চোক্সী, বিজয় মাল্যদের মূল ও সহযোগী সংস্থার নামও। মোট ঋণ মকুব করা হয়েছে ৬৮ হাজার কোটিরও বেশি। এই তথ্য সামনে আসতেই সরকারকে তেড়েফুড়ে আক্রমণে নেমেছেন বিরোধীরা।

আরটিআই কর্মী সাকেত গোখলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে তথ্যের অধিকার আইনে স্বেচ্ছায় ঋণ মেটাননি এমন ৫০টি সংস্থার নামের তালিকা এবং এ বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁদের ঋণের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। আরবিআই-এর কেন্দ্রীয় তথ্য আধিকারিক অভয় কুমার ২৪ এপ্রিল সেই তালিকা দিয়েছেন। তাতেই উঠে এসেছে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৫০টি সংস্থার ৬৮ হাজার ৬০৭ কোটি টাকার ঋণ মকুব করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলি। আরবিআই-এর ভাষায় এই ঋণগ্রহীতাদের ঋণের অঙ্ক ব্যাঙ্কের হিসেব থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এই ঋণ অনদায়ী বা অনুৎপাদক সম্পদ।

৫০টি সংস্থার মধ্যে শীর্ষ রয়েছে মেহুল চোক্সীর সংস্থা গীতাঞ্জলি জেমস লিমিটেড-এর নাম। এই সংস্থাকেই সবচেয়ে বেশি ৫৪৯২ কোটি টাকা মকুব করে দেওয়া হয়েছে। মেহুল চোক্সীরই অন্য দুই সংস্থা গিলি ইন্ডিয়া লিমিটেড এবং নক্ষত্র জেমস লিমিটেডের ঋণ মকুব করা হয়েছে যথাক্রমে ১৪৪৭ কোটি এবং ১ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। ১ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা মকুব করা হয়েছে বিজয় মাল্যর সংস্থা কিংফিশার এয়ারলাইন্সের।

আরও পড়ুন: রাজ্যের ৫ জেলায় নতুন সংক্রমণ ২৮ জনের, এই মুহূর্তে মোট আক্রান্ত ৫২২

ওই তালিকাতেই রয়েছে সন্দীপ ও সঞ্জয় ঝুনঝুনওয়ালার সংস্থা আরইআই অ্যাগ্রো লিমিটেডের ৪৩১৩ কোটি এবং যতীন মেহতার উইনসাম ডায়মন্ডস অ্যান্ড জুয়েলারির ৪ হাজার ৭৬ কোটি টাকা মকুবের হিসেব। এই দুই সংস্থার বিরুদ্ধেই সিবিআই ও ইডি তদন্ত চালাচ্ছে। রয়েছে রামদেবের পতঞ্জলীর শাখা সংস্থা রুচি সয়া ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামও। এই সংস্থার মকুব করা ঋণের অঙ্ক ২২১২ কোটি।

মেহুল চোক্সী ও তাঁর ভাগনে নীরব মোদী পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা না মিটিয়ে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন। মেহুল চোক্সী অ্যান্টিগা ও বার্বাডোজের নাগরিকত্ব নিয়ে সেই দেশেই রয়েছেন। নীরব মোদী রয়েছেন লন্ডনে। তাঁদের মতোই একাধিক ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় ৯ হাজার কোটির ঋণ না মিটিয়ে বিদেশে পালিয়েছেন বিজয় মাল্য। তিনিও ব্রিটেনে রয়েছেন। সবাইকেই প্রত্যপর্ণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিবিআই ও ইডি। কিন্তু দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এমন সব সংস্থার ঋণ মকুব নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভূমিকায়।

আক্রমণে নেমেছে কংগ্রেস। দলের সাংসদ রাহুল গাঁধীর অভিযোগ, এই নামগুলি তিনি সংসদে জানতে চাইলেও শাসক দল তা আনেনি। তার অন্যতম কারণ, ঋণ মুকুব হওয়া অনেক সংস্থাই বিজেপির ‘বন্ধু’। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘সংসদে আমি খুব সাধারণ একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিলাম— ব্যাঙ্ক দুর্নীতিতে জড়িত ৫০ জনের নাম প্রকাশ করুন। অর্থমন্ত্রী উত্তর দেননি। এখন আরবিআই-এর তালিকায় নীরব মোদী, মেহুল চোক্সীদের নাম রয়েছে। এই জন্যই সংসদে সত্যটা লুকিয়ে রেখেছে শাসক দল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mehul Choksi Vijay Malya RBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE