Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গরু-রাজনীতি, দুষছে দু’পক্ষই

মাদ্রাজ হাইকোর্টে গত কাল চার সপ্তাহের স্থগিতাদেশ জারি করে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে, কেন তাদের জারি করা গো-বিধি বাতিল করা হবে না।

বিক্ষোভ: গো-বিধিতে প্রতিবাদ রুখতে মরিয়া পুলিশ। বুধবার চেন্নাইয়ে আইআইটি-র সামনে। ছবি: পিটিআই।

বিক্ষোভ: গো-বিধিতে প্রতিবাদ রুখতে মরিয়া পুলিশ। বুধবার চেন্নাইয়ে আইআইটি-র সামনে। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৭ ০৩:৪০
Share: Save:

কেন্দ্রের একটি বিধির জেরে দেশ জুড়ে এখন তুমুল বিতর্ক গরু নিয়ে! রাজনীতি থেকে ব্যবসা, আইনশৃঙ্খলা থেকে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক, সংবিধান থেকে বিচার— সব জড়িয়ে গিয়েছে তাতে।

মাদ্রাজ হাইকোর্টে গত কাল চার সপ্তাহের স্থগিতাদেশ জারি করে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে, কেন তাদের জারি করা গো-বিধি বাতিল করা হবে না। আর আজ কেরল হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, কেন্দ্রের জারি করা গবাদি পশু সংক্রান্ত বিধিতে কোথাও বলা নেই, গো-হত্যা বা গোমাংস খাওয়া নিষিদ্ধ। মেলা বা হাটে না কাটলেই হল। কাটার জন্য গরু বাড়ি থেকে বিক্রি করা যেতেই পারে। এক এক রাজ্যের হাইকোর্ট এ ভাবে এক-এক রকম নির্দেশ দেওয়ায় মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি বেড়েছে বৈ কমেনি।

কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল, ডিএমকে, প্রায় সব বিরোধী দলই কেন্দ্রের ওই বিধির বিরোধিতায় মুখর। কংগ্রেসের মুখপাত্র রাজীব শুক্লর বক্তব্য, বরাবর তারা গোহত্যার বিরোধিতা করে এসেছে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে বিজেপি এখন গরু ও রাম মন্দির নিয়ে রাজনীতি করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছেন, তাঁর সরকার কেন্দ্রের গো-বিধি মানবে না। এক সুরে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও আজ মনে করিয়ে দেন, গবাদি পশু সংবিধানে রাজ্যের তালিকাভুক্ত। একে ঘিরে বাণিজ্যের বিষয়টিও রয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকায়। ফলে গবাদি পশু কেনাবেচা নিয়ে কেন্দ্র যে বিধি জারি করেছে, তা ঠিক নয়। সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাটের সংযোজন, হিমাচল প্রদেশ হাইকোর্ট গো-হত্যা নিষিদ্ধ করে যে রায় দিয়েছিল, তার উপরে স্থগিতাদেশ রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। গরু কেনা-বেচার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মোদী সরকার বাঁকা পথে আইনের অপব্যহার করছে। বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে দলের এক কর্মিসভায় বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘‘গরু নিয়ে মমতা রাজনীতি করছেন।’’

আরও পড়ুন: হামলাকারীদের গ্রেফতারির দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল আইআইটি-মাদ্রাজ

গরু-কাহনে নয়া মোচড় এনেছেন মেঘালয়ের ভারপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা নলীন কোহলি। বলেছেন, ‘‘স্থানীয় খাদ্যাভ্যাস অনুযায়ী রাজ্য সরকার গোহত্যা নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে ও আইন করে নিতে পারে। এর সঙ্গে গরু কেনাবেচা সংক্রান্ত বিধির সম্পর্ক নেই।’’ মনে করা হচ্ছে, উত্তর-পূর্বে নজর এখন বিজেপির। সেখানেই বিরূপ প্রভাব পড়ছে বুঝে বিজেপি নেতৃত্ব কৌশলে ওই এলাকার ভারপ্রাপ্ত এক নেতাকে দিয়ে কথাগুলি বলিয়েছেন। গোমাংসের ভোজ নিয়ে মাদ্রাজ আইআইটিতে কেরলের এক পড়য়াকে মারধরের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেরলের স্পিকার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন, দোযীদের যেন কড়া শাস্তি হয়। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন আগামিকাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE