বাহাত্তরতম স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন ডলারের দাম দাঁড়াল সত্তর টাকা। টাকার দামের এমন পতন এর আগে আর কখনও হয়নি।
সোমবার দিনের শেষে ডলারের দাম ছিল ৬৯.৯৩ টাকা। এ দিন লেনদেন শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই তা পৌঁছে যায় ৭০.১০ টাকায়। শেষ পর্যন্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপে হাল কিছুটা ফেরে। ডলারের দাম একটু কমে হয় ৬৯.৮৯ টাকা।
রাত পোহালেই লাল কেল্লার র্যামপার্টে বক্তৃতা দিতে উঠবেন নরেন্দ্র মোদী। তার আগে এমন ঘটনা তাঁর পক্ষে বিড়ম্বনার। বিশেষ করে তিনি নিজেই যখন ইউপিএ আমলে টাকার দাম নিয়ে লাগাতার বিঁধেছিলেন মনমোহন সিংহকে। বলেছিলেন, ডলারের দাম শীঘ্রই তাঁর অর্থমন্ত্রীর বয়স (৬৮) ছুঁয়ে ফেলবে।
আজ সেই কটাক্ষ ফিরিয়ে দিতে দেরি করেনি কংগ্রেস। তারা বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য হল টাকার দরকে মার্গদর্শকমণ্ডলীর বয়স, পঁচাত্তরের কোঠায় পাঠিয়ে দেওয়া।
রাজনৈতিক দ্বৈরথের বাইরে টাকার দাম নিয়ে অন্য গুরুতর দুশ্চিন্তা রয়েছে। অর্থ মন্ত্রকের আশঙ্কা মূল্যবৃদ্ধির যে হার অনুমান করে বাজেট কষা হয়েছে, তা ছাপিয়ে যেতে পারে। বাড়বে তেল আমদানির খরচ, রাজকোষ ঘাটতি, বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি। মূল্যবৃদ্ধির হার বাড়লে সুদের হার বাড়ার সম্ভাবনা। সে ক্ষেত্রে এমনিতেই ঝিমিয়ে থাকা শিল্প-লগ্নি আরও মার খাবে।
কেন্দ্রের অর্থ বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গের অবশ্য দাবি, ‘‘এখনই চিন্তার কারণ নেই।’’ তাঁর যুক্তি, দেশের অর্থনীতির দুর্বলতা নয়, বিশ্ব অর্থনীতিতে কিছু টালমাটালের কারণেই টাকার দাম পড়েছে। অর্থনীতিবিদরাও মানছেন, মার্কিন শুল্ক-যুদ্ধের চাপে তুরস্কের মুদ্রা লিরার দর পড়ে যাওয়ায় ফলেই ডলারের দাম বাড়তে শুরু করেছে। অর্থ মন্ত্রক আরও বলছে, টাকার দর এমনিতেই বেশি রয়েছে বলে কৌশিক বসুর মতো অর্থনীতিবিদও মত দিয়েছিলেন। টাকার দর পড়লে বরং রফতানিকারীদের লাভ হতে পারে।
কিন্তু এটাও ঘটনা যে, এশিয়ার মুদ্রাগুলির মধ্যে ভারতের টাকার ছবিই সব থেকে খারাপ। কংগ্রেস মনে করিয়ে দিচ্ছে, ২০০৮-এ মনমোহন জমানায় বিশ্ব জোড়া আর্থিক সঙ্কটের আঁচও এতটা লাগেনি। পাশাপাশি, মোদীর একটি বক্তৃতার ভি়ডিয়ো টুইট করেছেন রাহুল গাঁধী। যাতে মোদী অভিযোগ করেছিলেন, অর্থনীতি নয়, টাকার পতনের জন্য দুর্নীতিও দায়ী। কংগ্রেসের প্রশ্ন, তা হলে এ বার কী বলবেন মোদী? টুইটে দলের কটাক্ষ, ‘৭০ বছরে আমরা যা পারিনি, মোদী তা-ই করে দেখালেন!’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy