কড়া নিরাপত্তা বলয়ে শবরীমালা। ছবি: এএফপি।
মন্দির চত্বর নয়, এ যেন যুদ্ধের ময়দান! পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। রয়েছে কম্যান্ডো বাহিনী। জারি ১৪৪ ধারা। বিগ্রহ দর্শনে আগ্রহীদের নিরাপত্তা দিতে নিশ্ছিদ্র সুরক্ষা ব্যবস্থা। আজ, সোমবার শবরীমালায় আয়াপ্পা মন্দিরের দরজা ফের খুলছে। তার আগে মন্দিরের আশপাশের চত্বরে মাছি গলারও উপায় নেই। অশান্তি এড়াতে নিরাপত্তায় ত্রুটি রাখতে চাইছে না কেরল সরকার।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে শবরীমালায় ঢোকার অধিকার পেয়েছেন ঋতুমতী মহিলারা। সেপ্টেম্বরের সেই ঐতিহাসিক রায়ের পরেও শবরীমালার মন্দিরের আয়াপ্পার বিগ্রহ দর্শন করতে পারেননি ঋতুমতী কোনও মহিলাই। গত মাসে পাঁচ দিনের জন্য মন্দিরের দরজা খোলা ছিল। কিন্তু ঋতুমতীদের ঠেকাতে উদ্যত হয়েছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, হিংসায় বার বার উত্তপ্ত হয়েছে শবরীমালা তথা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত। ইতিমধ্যেই ৩,৭৩১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৫৪৫টি মামলাও রুজু করা হয়েছে।
এই আবহে এ দিন ফের বিকেল ৫টায় মন্দিরের দরজা খুলছে। আগামিকাল রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তা খোলা থাকবে। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, শবরীমালা মন্দির যাওয়ার আগের ২০ কিলোমিটার রাস্তায় জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। শনিবার মধ্যরাত থেকে রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে নিলক্কল, পাম্বা, সন্নিধানম এবং এলাভুঙ্কলে।নিলক্কল বেসক্যাম্পে ঢুকতে পার হতে হবে নিরাপত্তার একাধিক বেড়া।সংবাদমাধ্যমের কর্মী বা ভক্তেরা ছাড়া অন্যেরা নিলক্কল থেকে পাম্বার দিকে যেতে পারবেন না। সুরক্ষা বলয়ের দায়িত্বে রয়েছেন হাজার পাঁচেক পুলিশকর্মী। এর মধ্যে রয়েছে ২০টি কম্যান্ডো দল-সহমহিলা পুলিশকর্মীদের ১০০টি দল। এ ছাড়া, মন্দিরের গর্ভগৃহের নিরাপত্তার দেখাশোনা করবেন ইনস্পেপেক্টর ও সাব-ইনস্পেপেক্টর পদমর্যাদার ৩০ জন মহিলা পুলিশ আধিকারিক, যাঁদের প্রত্যেকেই পঞ্চাশোর্ধ্ব। গোটা সুরক্ষা ব্যবস্থার নজরদারির দায়িত্বে রয়েছেন দু’জন ইনস্পেক্টর জেনারেল, পাঁচ জন এসপি এবং দশ জন ডিএসপি। পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা টি নারায়ণন বলেন, “দুপুরের পর থেকে ভক্তরা ছাড়া অন্য কাউকেই মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে মন্দিরে যাওয়ার রাস্তাগুলিতে সমস্ত গতিবিধিতে কড়া নজর রাখা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: ‘চূড়ান্ত সময়সীমা’ দিল আরএসএস, রামের চাপে নাকাল মোদী
আরও পড়ুন: দিওয়ালির আগে ফের ‘রুদ্ধশ্বাস’ রাজধানী! নিরাপদ মাত্রার চেয়ে ২০ গুণ বেশি দূষণ
কড়া প্রহরার পরীক্ষা পেরিয়ে যেতে হচ্ছে প্রত্যেককেই। নিলক্কলে পিটিআইয়ের তোলা ছবি।
শবরীমালায় যাওয়ার জন্য কোট্টায়মে বিপুল সংখ্যক সংঘ সমর্থকেরা শিবির করে জমায়েত হয়েছেন। সেই সূত্রেই রাজ্যের এক শীর্ষ বাম নেতার অভিযোগ, “শবরীমালায় সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের উদ্দেশ্যে আরএসএস তাদের কর্মীদের নিয়োগ করেছে। সে কাজে কুন্নুরের এক আরএসএস নেতা বলসন তিল্লানকেরিকেদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন: আমাদের থেকে উন্নয়ন প্রকল্পের দান নিয়ে মূর্তি বানাচ্ছ? ফুঁসছে ব্রিটেন
আরও পড়ুন: বিশুদ্ধ রাম নামই ভোটে অস্ত্র কম্পিউটার বাবার
শবরীমালা নিয়ে উত্তেজনার এই আবহে অশান্তি রুখতে সতর্ক রাজ্যের বাম সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, শবরীমালা নিয়ে ডিজিপি লোকনাথ বহেরাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে সীমিত বিকল্প রয়েছে। তবে আমরা আইনের রক্ষা করব।”
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy