Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
লক্ষ্য বিহার নির্বাচন

রামমন্দির নিয়ে সরব সঙ্ঘ-বিজেপি

বিহার নির্বাচনে ফায়দা তুলতে হিন্দুত্বের তাস খেলা শুরু করে দিল বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার। দিল্লিতে আজ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রবীণ নেতা অশোক সিঙ্ঘল ও বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে রামমন্দির নির্মাণের ব্যাপারে জানুয়ারি মাসে একটি সম্মেলনের কথা ঘোষণা করলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৫৮
Share: Save:

বিহার নির্বাচনে ফায়দা তুলতে হিন্দুত্বের তাস খেলা শুরু করে দিল বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার।

দিল্লিতে আজ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রবীণ নেতা অশোক সিঙ্ঘল ও বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে রামমন্দির নির্মাণের ব্যাপারে জানুয়ারি মাসে একটি সম্মেলনের কথা ঘোষণা করলেন। জানুয়ারি মাসের এখনও ঢের দেরি। সচরাচর এত আগে কোনও সম্মেলনের ঘোষণা হয় না। কিন্তু বিহার ভোটের আগে রামমন্দির নির্মাণের প্রসঙ্গটি সুকৌশলে তোলার জন্যই আজ এই ঘোষণা করা হল। কিন্তু কেন? সঙ্ঘ সূত্রের মতে, বিহারের হিন্দুরা জাতপাতে বিভক্ত। এই পরিস্থিতিতে ফের রামমন্দিরের প্রসঙ্গটি তুলে হিন্দুদের একজোট করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। উচ্চবর্ণরা যাতে বিজেপির পক্ষেই ভোট দেয়, তার প্রয়াসও রয়েছে।

রামমন্দির প্রসঙ্গ উঠলেই যে বিরোধীরা আবার বিজেপিকে আক্রমণ করবে, সেটা নিশ্চিত। কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি যেমন আজই বলেছেন, বিহার ভোটের আগে বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতি করতে চাইছে। বিরোধীদের দাবি, বিজেপি ও আরএসএস দেশকে ধর্মের নামে ভাগ করার রাজনীতিই করে। সে কারণেই একের পর এক রাজ্যে গোষ্ঠী-সংঘর্ষ হচ্ছে। গরুর মাংস খেলে হত্যা করা হচ্ছে। ঠিক যেমন হয়েছে গতকাল, দিল্লি থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে বিসারা গ্রামে। কিন্তু বিজেপি ভাবছে, মুলায়ম সিংহ যাদব ও আসাদুদ্দিন ওয়াইসির মতো নেতারা যদি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় বিজেপিকে দুষে লালুর ভোট কাটতে পারেন, তা হলে লাভ তাদেরই।

কাল রামমন্দির আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা মহন্ত আদিত্যনাথের নামে একটি ডাকটিকিটও প্রকাশ করবেন বিহারের বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। এই নিয়ে ইতিমধ্যে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। রবিশঙ্কর আজ বলেন, ‘‘ভারতের ইতিহাসে প্রায় একশো জন ধর্মীয় নেতার নামে ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছে। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান সব ধর্মের ব্যক্তিরাই তাতে রয়েছেন। এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।’’

কিছু দিন আগে বিজেপি ও আরএসএসের সমন্বয় বৈঠকেই স্থির হয়েছিল, রামমন্দির নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে এখন কোনও বিপাকে ফেলবে না সঙ্ঘ। কিন্তু বিহার ভোটের আগে দেখা যাচ্ছে, হিন্দুত্বের তাস খেলতে আগ্রহী দু’তরফই। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রবীণ তোগাড়িয়া মোদী-বিরোধী হলেও অশোক সিঙ্ঘল বরাবরই মোদীর পক্ষে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগেও মোদীকে তিনি সমর্থন করেছিলেন। তাই সিঙ্ঘলের মুখ দিয়ে রামমন্দিরের প্রসঙ্গ ফের খুঁচিয়ে তোলা সঙ্ঘ-বিজেপির রণকৌশল বলেই মনে করা হচ্ছে। কালই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রবীণ নেতা অশোক সিঙ্ঘলের নব্বই বছর পূর্ণ হওয়ার জন্য আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতও দিল্লি আসছেন।

সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর দাবি, আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, বাবরি মসজিদের জায়গাতেই রামমন্দির ছিল। পুরাতত্ত্ব বিভাগও সেই প্রমাণ দিয়েছে। এখন শুধু সুপ্রিম কোর্ট জানাবে, মসজিদ অন্য কোথায় সরানো হবে। স্বামীর কথায়, ‘‘মুসলিম সংগঠনের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা চলছে। সরকার সমর্থন জানালে এর সমাধান সম্ভব।’’

সংরক্ষণের দাবিতে সভা

ভোটের মুখে সংরক্ষণের দাবি তুলে বিহারে চারটি সভা করবেন হার্দিক পটেল। পতিদার তথা পটেল সংরক্ষণের দাবিতে বাইশ বছরের এই যুবক ইতিমধ্যে গুজরাতে তোলপাড় ফেলেছেন। বুধবার দিল্লিতে হার্দিক জানান, বিহারে ভোট শেষ হওয়ার ঠিক পরেই দিল্লির রামলীলা ময়দানে সংরক্ষণের দাবিতে সভা ডাকবেন তিনি। ঠিক যে ভাবে অণ্ণা হজারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে রামলীলায় আন্দোলনে বসেছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE