তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পালানিসামি শপথ নিলেন ঠিকই। কিন্তু সরকার টেকাতে পারবেন কি না, সংশয় রয়েছে এখনও। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ টানাপড়েন কাটিয়ে অবশেষ মুখ্যমন্ত্রী পালানিসামিই। বৃহস্পতিবার বিকেলে চেন্নাইয়ের রাজ ভবনে তামিলনাড়ুর নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ইকে পালানিসামি। তাঁর সঙ্গে শপথ নিয়েছেন আরও ৩০ জন মন্ত্রী।
রাজ্যপাল সি বিদ্যাসাগর রাও তামিলনাড়ুর নতুন মন্ত্রিসভাকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার জন্য পালানিসামিকে রাজ্যপাল ১৫ দিন সময় দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই নতুন সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, ১৫ দিন অপেক্ষা করবে না সরকার। পরশু অর্থাৎ শনিবারই তামিলনাড়ু বিধানসভায় আস্থা ভোট হবে। আস্থা ভোটে জয়ী হওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী তামিলনাড়ুর নতুন মুখ্যমন্ত্রী। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতেই নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিয়েছে বলে শশিকলা শিবিরের দাবি। তবে পনীরসেলভম শিবির এখনও হাল ছাড়েনি। পরশু আস্থা ভোট হলেও পালানিসামি সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারবেন না বলে পনীরসেলভম ঘনিষ্ঠদের কেউ কেউ দাবি করছেন।
মুখ্যমন্ত্রী পদে পালানিসামি থাকলেও সরকারের নিয়ন্ত্রণ যে জেলবন্দি শশিকলার হাতেই থাকবে, তা নিয়ে তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক মহলে সংশয় নেই। —ফাইল চিত্র।
২৩৪ আসনের বিধানসভায় ১১৮ জন বিধায়ক সঙ্গে থাকলেই সরকার গঠন করা যায়। শশিকলা নটরাজন মনোনীত ইকে পালানিসামি রাজ্যপালের কাছে বিধায়কদের যে সমর্থনপত্র জমা দিয়েছিলেন, তাতে ১১৮ জনের বেশি বিধায়কের নামই ছিল। ফলে আস্থা ভোটে জয় সময়ের অপেক্ষা বলে পালানিসামির দাবি। সেই কারণেই রাজ্যপালের দেওয়া সময়সীমার শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান না পালানিসামি। দ্রুত আস্থা ভোটে গিয়ে সরকারের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে নিতে চান তিনি। কারণ যত বেশি সময় গড়াবে, পনীরসেলভমরা শশিকলা শিবিরে ভাঙন ধরানোর জন্য তত বেশি সময় পেয়ে যাবেন। পনীরদের সে সুযোগ দিতে চান না পালানিসামি। তাই পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকতে থাকতেই আস্থা ভোট সেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: দশ হাজার শাড়ি, সাড়ে সাতশো জুতো!
রাজ্যপাল পালানিসামিকে ১৫ দিন সময় দেওয়ার পরও পনীরসেলভম শিবির থেকে বলা হয়েছিল, সরকার টেকানো সহজ হবে না পালানিসামির পক্ষে। ১৫ দিনে যে কাবেরী দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে যেতে পারে, সে ইঙ্গিতই দিতে চেয়েছিলেন পনীররা। সেই কারণেই দ্রুত আস্থা ভোট সেরে সরকারের উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আগামী ছ’মাসের জন্য পাকা করে নিতে চাইছেন পালানিসামিরা। পরশুর মধ্যে বিপুল সংখ্যায় বিধায়ক ভাঙিয়ে নেওয়া পনীরের পক্ষে সম্ভব হবে না, এমনই মনে করছে শশিকলা শিবির। পনীরসেলভমরা অবশ্য হাল ছাড়তে নারাজ। তামিলনাড়ুর সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘ওঁদের কাছে সংখ্যা রয়েছে, আমাদের কাছে মানুষ রয়েছে।’ পালানিসামি শেষ পর্যন্ত আস্থা ভোটে জিতবেন, নাকি আরও কিছু বিধায়ক ভাঙিয়ে পনীরসেলভমরা নতুন সরকারকে সংখ্যালঘু করে দিতে সক্ষম হবেন, তা শনিবারই স্পষ্ট হয়ে যাবে। তবে শশিকলা শিবির যে স্বস্তিতে নেই, তড়িঘড়ি আস্থা ভোট সেরে ফেলার সিদ্ধান্তেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy