Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ধাক্কা যোগীর, সাংবাদিককে কোর্টের জামিন

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে টুইট ও ফেসবুক পোস্ট করার পরেই প্রশান্তের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৯ ০২:৪৮
Share: Save:

সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগী আদিত্যনাথকে নিয়ে মন্তব্য করে গ্রেফতার হওয়া সাংবাদিক প্রশান্ত কানোজিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সাংবাদিকের স্ত্রী-র করা মামলার শুনানির সময়ে শীর্ষ আদালত বলেছে, ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার নিয়ে কোনও আপস চলবে না।

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে টুইট ও ফেসবুক পোস্ট করার পরেই প্রশান্তের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। পরে সাদা পোশাকের পুলিশ ওই সাংবাদিককে গ্রেফতার করে। একটি আদালতের বিচারক তাঁকে আগামী ২২ জুন পর্যন্ত হেফাজতে রাখার নির্দেশও দিয়েছিলেন। এর পরেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন প্রশান্তের স্ত্রী জগীশা অরোরা। শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা আজ ওই সাংবাদিককে জামিন দিলেও জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই টুইট ও পোস্টগুলিকে অনুমোদন করে তাঁরা এই রায় দিচ্ছেন, এমন নয়। বরং গোটা ঘটনাক্রমে ওই সাংবাদিকের স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। শীর্ষ আদালত মনে করছে, রাজ্য সরকার ওই ঘটনায় যে পদক্ষেপ করেছে, তা নেহাতই বাড়াবাড়ি। সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, ‘‘সংবিধান নাগরিকদের স্বাধীনতার যে অধিকার দিয়েছে, তা অলঙ্ঘনীয়। এর সঙ্গে কোনও আপস চলে না। নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের উপর রাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করতে পারে না।’’

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার জন্য কাউকে এত দিন জেলে রাখার সমালোচনা করে বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অজয় রাস্তোগির অবকাশকালীন বেঞ্চ বলেছে, ‘‘নাগরিকদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার এটা জ্বলন্ত উদাহরণ।’’ তবে ওই সাংবাদিককে নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়াবাড়ি করায় তাঁরা জামিনের রায় দিলেও আইন অনুযায়ী প্রশান্তের বিরুদ্ধে মামলা চলবে বলেই আদালত জানিয়েছে। শীর্ষ আদালত মন্তব্য করেছে, ‘‘কখনও কখনও আমাদেরও সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। কখনও তার ভিত্তি থাকে, কখনও থাকেও না। কিন্তু আমাদের যতটুকু ক্ষমতা, তার ভিত্তিতেই পদক্ষেপ করতে হবে।’’ আদালত বলেছে, ‘‘হয়তো এই টুইটগুলিকে আমরা অনুমোদন করছি না। কিন্তু প্রশ্ন হল, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই পোস্ট করার জন্য অভিযুক্তকে জেলে থাকতে হবে কি না।’’

স্বামীর গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে হেবিয়াস কর্পাস পিটিশন দাখিল করেছিলেন সাংবাদিকের স্ত্রী। উত্তরপ্রদেশের সরকারের হয়ে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বিক্রমজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আইনজীবী স্বরূপমা চতুর্বেদী যুক্তি দেন, এ ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালত হেবিয়াস কর্পাস মামলার বিচার করতে পারে না। কারণ, অভিযুক্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের যুক্তি, আবেদনকারীর এলাহাবাদ হাইকোর্টে যাওয়া উচিত। আদালত তখন বলেছে, ‘‘এ ব্যাপারে আইনের বিষয়টি স্পষ্ট। কোনও নাগরিক তাঁর মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন না। ...সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি গ্রহণ করছে। নাগরিকদের ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হলে আদালত হাত গুটিয়ে থাকতে পারে না।’’

অন্য দিকে যোগী সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য সম্প্রচার করায় একটি চ্যােনলের সম্পাদক অনশুল কৌশিককে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। আগেই ওই চ্যানেলের দুই কর্তা গ্রেফতার হন।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE