সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সব বয়সের মহিলারাই সবরিমালা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। —ফাইল চিত্র
নারী-পুরুষ দুই-ই ঈশ্বরের সৃষ্টি। তাহলে মানুষ কেন তাদের ক্ষমতায়নে ভেদাভেদ করবে। সবরীমালা মন্দিরের দরজা সব বয়সের মহিলাদের জন্য খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে এই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। বুধবার প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র-সহ পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ নির্দেশ দেয়।
সবরীমালা মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার দাবি করে একাধিক মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলার শুনানিতে গত বছরের অক্টোবরেই শীর্ষ আদালত সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ প্রশ্ন তোলে। মন্দিরের এই ফরমানে ‘সবার জন্য সমানাধিকার’-এর সাংবিধানিক অধিকার খর্ব হচ্ছে কিনা, সেটা দেখতে মামলা যায় সাংবিধানিক বেঞ্চে। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, এ এম খানউইলকার এবং বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রাকে নিয়ে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ গঠিত হয়।
বুধবার এই বেঞ্চই রায় দিয়েছে, সব বয়সের মহিলাদেরই প্রবেশাধিকার দিতে হবে সবরীমালা মন্দিরে। রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি চন্দ্রচুড় ‘নারী-পুরুষ ঈশ্বরের সৃষ্টি’ মন্তব্য করে বলেন, মহিলাদের কোনও মন্দিরে প্রবেশাধিকার না দেওয়া তাঁদের প্রতি পূজা-অর্চনায় বৈষম্য সৃষ্টি করা। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী পূজা-অর্চনা, ধর্ম ও আচার অনুষ্ঠান পালনে সকলের সমান অধিকার রয়েছে। তার অর্থ এই অধিকার আইনগত নয়, সাংবিধানিক অধিকার।
আরও পড়ুন: ১৫ বছর পর অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হল লোকসভায়
বিচারপতি নরিম্যানের মন্তব্য, মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে ১০ বছরের নীচে ও ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স বেঁধে দেওয়া ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ এবং এর অর্থ, ঋতুমতী থাকাকালীন কোনও মহিলা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: ভোট মিটতেই ‘কাকতাড়ুয়া’ মোদি-অমিত শাহ!
কেরালায় পশ্চিমঘাট পর্বতমালায়সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২৬০ মিটার উপরে একটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত সবরীমালা মন্দির। চারদিকে ১৬টি পাহাড় বেষ্টিত গভীর অরণ্যের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় সবরীমালা মন্দিরে। পেরিয়ার ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের ভিতর দিয়ে আয়াপ্পা স্বামীর এই মন্দিরে যেতে হয়। প্রতিবছর দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে বহু পুরুষ ভক্ত ও পর্যটক এই মন্দিরে যান। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত সেখানে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সি মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। এমনকী, মন্দিরে ঢুকতে গেলে মহিলাদের বয়সের প্রমাণপত্র পর্যন্ত দেখাতে হত মন্দির কর্তৃপক্ষকে। এদিনের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর প্রাচীন কাল থেকে চলে আসা সেই রীতির অবসান হল বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy