অযোধ্যা। ফাইল চিত্র।
পুলিশি কড়াকড়ি বেড়েছে দিন চারেক আগে থেকেই। এসেছে বাড়তি সিআরপিএফ। তবে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে প্রথম ৬ ডিসেম্বরে বিকেল পর্যন্ত স্বাভাবিক ছিল অযোধ্যা। হেঁটে যেতে বাধা তো দূর, অধিকাংশ রাস্তায় অবাধে চলছিল গাড়ি।
বিকেল চারটে নাগাদ নয়াঘাটের গেটে বদলে গেল সেই ছবি। আচমকা বন্ধ করে দেওয়া হল রাস্তা। মিনিট পনেরোর মধ্যে বেড়ে গেল বন্দুকধারীর সংখ্যা। আনাগোনা বাড়ল পুলিশের বড় মাথাদেরও। মুহূর্তে ছড়াল জল্পনা। পুলিশের থেকে জানা গেল, রামলালা বিরাজমানের দর্শনে আসছেন কমলেশ তিওয়ারির স্ত্রী কিরণ তিওয়ারি। ঝুঁকি এড়াতেই বাড়তি তৎপরতা।
অক্টোবরে হিন্দু সমাজ পার্টির নেতা কমলেশের দিনে-দুপুরে হত্যা ঘুম কেড়েছিল যোগী আদিত্যনাথের সরকারের। খোদ মুখ্যমন্ত্রী যোগী দেখা না-করা পর্যন্ত ছেলের দেহ দাহ না-করার পণ করেছিলেন মা কুসুম তিওয়ারি। স্ত্রী কিরণ-সহ পুরো পরিবারের অভিযোগের তির ছিল উত্তরপ্রদেশ সরকারের দিকে। কিরণই এখন হিন্দু সমাজ পার্টির নেত্রী। স্বামীর মতো উগ্র হিন্দুত্বের প্রচারক। হত্যার হুমকি মেলায় পুলিশি সুরক্ষার হকদারও। তবু স্রেফ কিরণ আসছেন বলে এমন আঁটসাঁট নিরাপত্তা?
ডিউটিতে থাকা দুই অফিসার বলেন, “ঝুঁকি নেওয়ার প্রশ্ন নেই। কে বলতে পারেন, কে কোন মতলবে আসে।” তাঁদের বক্তব্য, সাম্প্রদায়িক হিংসা সাম্প্রতিক অতীতে অযোধ্যায় সে ভাবে হয়নি। এ-ও সত্যি যে, মঠে-মন্দিরে-বাড়িতে প্রদীপ জ্বালানো ছাড়া ‘শৌর্য দিবস’ পালনের হিড়িকও এ বার নেই। নেই মুসলিম মহল্লায় মোমবাতি মিছিলও। তবু বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২৭ বছর পেরিয়ে আসা অযোধ্যা আজও এমনই ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যে সামান্য ঝুঁকি নেওয়ার জো নেই। এএসপি শিব রাজ বলছিলেন, “৬ ডিসেম্বরের সেই আতঙ্ক আর নেই। এখন লোকের হাতে বড়জোর উৎসবের প্রদীপ কিংবা শোকের মোমবাতি। তবু আগুন তো।” ৮টায় দেখি, কড়াকড়ি কমেছে। শান্তিতে রাত পোহালে তবে নিশ্চিন্তি পুলিশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy