বেলাইন।—ছবি এএফপি।
আজ ভোর রাতে দিল্লিগামী আপ সীমাঞ্চল এক্সপ্রেসের ১১টি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে তিন মহিলা-সহ ছয় যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে তিন জন পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা। বাকিরা বিহারের খগরিয়া জেলার বাসিন্দা। জখমের সংখ্যা অন্তত ৩০। রেল কর্তাদের প্রাথমিক ধারণা, প্রবল ঠান্ডায় রেল লাইনে ফাটল ধরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে তদন্তে পূর্বাঞ্চলের কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি লতিফ খান ঘটনার তদন্তে নেমেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, ভোর চারটে নাগাদ প্রবল আওয়াজে তাঁদের ঘুম ভাঙে। প্রথমে অনেকেরই বড় বিস্ফোরণ বলে মনে করেন। লাইন থেকে ছিটকে যাওয়া ১১টি বগির যাত্রীরা ঘটনার তীব্রতায় নিজেদের আসন থেকে এদিক-ওদিক ছিটকে পড়েন। আস্তে আস্তে তাঁরা বুঝতে পারেন ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
মৃতদের মধ্যে ৩ জন বিহারের এবং ৩ জন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। মৃত সুদর্শন দাস (৬০), ইলচা দেবী (৬৬), ইন্দিরা দেবী (৬০) বিহারের খগরিয়ার বাসিন্দা। অন্য দিকে, শায়দা খাতুন (৪৫), আনসার আলম (১৯) ও শামসুদ্দিন আলম (২৬) পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার বাসিন্দা। জখমদের মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গের অনেকে রয়েছেন।
বিহারের বৈশালী জেলার হাজিপুর-বছওয়ারা ডিভিশনে মহেনার এবং সরদই বুজুর্গ স্টেশনের মাঝে এই দুর্ঘটনাস্থলের অদূরেই লোকবসতি। ফলে সরকারি বা রেলের উদ্ধারকারী দল আসার আগেই স্থানীয় মানুষ কামরায় অবরুদ্ধ মানুষের উদ্ধারে নামেন। চলে আসে স্থানীয় হাসপাতাল বা ক্লাবের একাধিক অ্যাম্বুল্যান্স। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এনডিআরএফের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদকুমার যাদব হাজির হন। ভোররাত থেকেই ঘটনাস্থলে রয়েছেন বৈশালীর জেলাশাসক রাজীব রঞ্জন এবং এসপি মানবজিৎ সিংহ ধিঁলো। খবর পেয়ে আসেন রেল প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিংহ। জখমদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন কুম্ভমেলার তীর্থযাত্রী। বেলার দিকে, বাকি ১২টি বগি নিয়ে ফের রওনা দেয় ট্রেনটি। বেলাইন হওয়া কামরার যাত্রীদের অন্য ট্রেনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বেলাইন হওয়া কামরাগুলির মধ্যে স্লিপার ক্লাস ও সাধারণ বগিই বেশি রয়েছে। দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। জখমদের দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা। চিকিৎসার সমস্ত খরচ রেল মন্ত্রকই বহন করবে। বিহার সরকারও মৃতদের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy