Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

শিনার মায়ের বিরুদ্ধেই সাক্ষ্য দেবেন সিদ্ধার্থ

পঁচিশ বছর আগে যাঁকে ফেলে চলে গিয়েছিলেন, সেই তিনিই এখন ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অন্যতম সাক্ষী হতে চলেছেন। শিনা বরা খুনের মামলাকে শক্তিশালী করতে মুম্বই পুলিশের তুরুপের তাস এখন সিদ্ধার্থ দাস।

সিদ্ধার্থ দাস

সিদ্ধার্থ দাস

সুনন্দ ঘোষ
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:০৬
Share: Save:

পঁচিশ বছর আগে যাঁকে ফেলে চলে গিয়েছিলেন, সেই তিনিই এখন ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অন্যতম সাক্ষী হতে চলেছেন। শিনা বরা খুনের মামলাকে শক্তিশালী করতে মুম্বই পুলিশের তুরুপের তাস এখন সিদ্ধার্থ দাস। মুম্বই পুলিশের একাংশ রবিবার জানান, সিদ্ধার্থকে তাঁরা এই মামলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হিসেবে পেশ করবেন।

কেন সিদ্ধার্থ?

যুক্তি দিয়ে ওই অফিসার বলেন, ২০১২ সালের ২৪ মার্চ শিনা খুনের বেশ কয়েক দিন পরে মুম্বই শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে রায়গড়ের জঙ্গলে পাওয়া গিয়েছিল এক যুবতীর দেহ। সেই সময়ে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা শুরু করে পুলিশ। পরে তা ধামাচাপা পড়ে যায়। এ বছর মুম্বই পুলিশ কমিশনার রাকেশ মারিয়ার কাছে একটি উড়ো ফোনে কিছু খবর আসার পরে তিন বছর পরে শুরু হয় শিনা বরা হত্যার তদন্ত। মুম্বই পুলিশের এক কনস্টেবলের অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয় সেই মামলা। এখন পুলিশ সিদ্ধার্থর হদিস পেয়েছে। সেই সিদ্ধার্থ, যিনি দাবি করেছেন শিনা তাঁরই সন্তান।

নিজের বাড়িতে সুজিতমোহন সরকার। ছবি: সুমন বল্লভ।

পুলিশের কথায়, এ বার যদি শিনার বাবা হিসেবে সিদ্ধার্থকে এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী করা হয়, তা হলে আইনের চোখে তা আরও শক্তিশালী হবে। তবে তার আগে তিনিই যে শিনার বাবা, তার অকাট্য প্রমাণ চায় পুলিশ। ইতিমধ্যেই ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিদ্ধার্থর রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে। অন্য দিকে শিনার কিছু হাড় ও দাঁতও পাঠানো হয়েছে একই পরীক্ষাগারে। পুলিশের মতে, দু’টি মিলে গেলে এবং শিনার ডিএনএ-র সঙ্গে ইন্দ্রাণীর ডিএনএ মিলে গেলেই প্রমাণ করা যাবে যে ইন্দ্রাণী আর সিদ্ধার্থের মেয়ে শিনা। তবে এ সমস্ত পরিকল্পনা তখনই বাস্তবায়িত হবে, যখন রায়গড়ের জঙ্গলে প্রাপ্ত দেহের সঙ্গে এই দু’জনের ডিএনএ মিলে যাবে। আর না মিললে? পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘তা হলে শিনার বাবা কে নতুন করে খুঁজতে হবে।’’

গত ২ সেপ্টেম্বর সিদ্ধার্থকে মুম্বই নিয়ে এসেছিল পুলিশ। রবিবার তিনি কলকাতায় ফিরেছেন। ফিরেছেন সুজিতমোহন সরকারও। পিটার মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর দেহরক্ষী হিসেবে পরিচিত সুজিতবাবুকে বৃহস্পতিবার মুম্বই নিয়ে যান তদন্তকারীরা। রবিবার সকালে মুম্বই পুলিশের একটি দলই ফের তাঁকে কলকাতায় ফিরিয়ে দিয়ে গিয়েছে বলে জানান সুজিত। তাঁর দাবি, পিটার মুখোপাধ্যায় এবং ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়কে তিনি চিনতেন না। তাঁদের সঙ্গে কোনও দিন কথাও হয়নি।

মুম্বই পুলিশের একটি সূত্র দাবি করছিল, কলকাতায় পিটার ও ইন্দ্রাণী তাঁদের বন্ধু অভিজিৎ সেনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। সুজিত সেই অভিজিৎ সেনের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু এ দিন সুজিত নিজে দাবি করেন, তিনি অভিজিতের অধীনে গত আট-নয় বছর ধরে কাজ করছেন ঠিকই। তবে দেহরক্ষী হিসেবে নয়। সুজিত বলেন, ‘‘অভিজিৎ সেন হয়তো ইন্দ্রাণী এবং পিটারকে চিনতে পারেন। আমি চিনি না।’’ মুম্বই পুলিশের অন্য একটি সূত্র আবার দাবি করছে, ইন্দ্রাণী ও সঞ্জীবের কল রেকর্ডের সূত্র ধরেই সুজিতের নাম পাওয়া যায়। এর পরেই সুজিতকে মুম্বই নিয়ে গিয়ে জেরা করেন তদন্তকারীরা। সুজিত নিজে এ নিয়ে কথা বলতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, তদন্তের ব্যাপারে যা বলার পুলিশ বলবে। বেলেঘাটার বাড়ির একতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের কাছে সুজিত দাবি করেন, মুম্বই পুলিশের সব কথার উত্তর তিনি দিয়েছেন।

সহ প্রতিবেদন: শিবাজী দে সরকার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE