পরিকাঠামোগত প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন এক বছর সময়। তা হলেই গোটা দেশে একই সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন করা সম্ভব হবে বলে জানাল নির্বাচন কমিশন।
গত কাল ভোপালে একটি অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার ওমপ্রকাশ রাওয়ত জানান, কমিশন এ বিষয়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের পর থেকে গোটা দেশে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন করাতে সক্ষম হবে কমিশন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, লোকসভা নির্বাচন যেখানে ২০১৯ সালে হওয়ার কথা, তার ঠিক আগে সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে কেন এ ভাবে মুখ খুললেন নির্বাচন কমিশনার। কংগ্রেসের অভিযোগ, আসলে কমিশনের মাধ্যমে অন্য দলগুলির উপরে চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছে বিজেপি।
অপচয় রুখতে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট এক সঙ্গে করার দাবি বিভিন্ন সময়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এক সময়ে সরব ছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। সম্প্রতি তৎপর হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। দেশ জুড়ে একই সময়ে ভোটের প্রশ্নে কথা বলেন বিজেপি ও শরিক দলগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও। তার পরেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর কমিশনকে এ বিষয়ে প্রস্তুতির নির্দেশ পাঠায়।
রাওয়ত বলেছেন, কমিশনের কাছে কেন্দ্র জানতে চেয়েছিল একই সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন করতে কী কী প্রয়োজন? কমিশন জানায়, বিপুল সংখ্যক ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট কিনতে হবে। তার জন্য অর্থ চাই। কমিশনের জন্য অর্থ বরাদ্দ হতেই ইভিএম ও ভিভিপ্যাট কেনার বরাত দেয় কমিশন। রাওয়ত জানান, ‘‘পরিকাঠামোগত ভাবে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কমিশন একই সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে।’’ তবে কমিশন জানিয়েছে, এর জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সংশোধন করতে হবে কেন্দ্রকে।
আরও পড়ুন: ব্ল্যাকমেল নয়, কথা চাই, দাবি মাদ্রিদের
বিরোধী কংগ্রেস শিবির আজ জানিয়েছে, তারা যে কোনও সময়ে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু প্রশ্ন হল, এ বছর গুজরাতে ভোট। ২০১৮ সালে ১৩টি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। আর ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের বছরে রয়েছে ৯টি রাজ্যে ভোট। সব মিলিয়ে আগামী দেড় বছরের মধ্যে লোকসভা ছাড়াও অন্তত ২৫টি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে কেন এক সঙ্গে ভোট করার পক্ষে সওয়াল করলেন কমিশন কর্তারা? তা-ও প্রকাশ্যে। এক কংগ্রেস নেতার কথায়, ‘‘কেন্দ্র প্রস্তুতি নিতে বলেছিল। কমিশন তা নেয়। কিন্তু সেই প্রস্তুতি কবে শেষ হবে, ঘটা করে তা বলার কী দরকার ছিল!’’
বিরোধী শিবিরের মতে, কেন্দ্র ও রাজ্যে নিজেদের কর্তৃত্ব ধরে রাখতেই এই কৌশল নিতে চাইছে বিজেপি। কারণ অধিকাংশ বিজেপি-শাসিত রাজ্যে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়া। আর তাই মোদীকে সামনে রেখে এক ধাক্কায় লোকসভা ও বিধানসভা বৈতরণী পার করতে চাইছেন তাঁরা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, এর আগে ১৯৯৯ সালে আইন কমিশনও এক সঙ্গে ভোটের পক্ষে সওয়াল করেছিল। মন্ত্রকের মতে— পরিকাঠামোগত ভাবে প্রস্তুত হলেও, কমিশনকে আগে সব দলের সঙ্গে বসে ঐকমত্য তৈরি করতে হবে। আইন সংশোধনও করতে হবে। কিন্তু সেটা যে খুবই শক্ত, তা মানছেন মন্ত্রকের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy