Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মহিলা-বান্ধব ত্রাণ শিবিরের দাবিতে সই সংগ্রহ অসমে

রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পাকা শৌচাগার তৈরি করছে সরকার। কিন্তু বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে শৌচাগারগুলি মাটি থেকে যথেষ্ট উচ্চতায় না হওয়ায় বন্যা এলেই সেগুলি ডুবছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০৪:১১
Share: Save:

রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পাকা শৌচাগার তৈরি করছে সরকার। কিন্তু বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে শৌচাগারগুলি মাটি থেকে যথেষ্ট উচ্চতায় না হওয়ায় বন্যা এলেই সেগুলি ডুবছে। ফলে বন্যার সময়ে ত্রাণ শিবিরগুলিতে মহিলাদের শৌচালয়ে যাওয়া সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষ করে সেই সময়ে ঋতুস্রাব চললে। রাজ্যের ১০টি বন্যাপ্রবণ জেলায় অবিলম্বে অন্তত ৫০টি মহিলা-বান্ধব ত্রাণ শিবির তৈরির জন্য অনলাইনে '#ডিগনিটিইনফ্লাডস' নামে স্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু করেছেন সমাজকর্মী ময়ূরী ভট্টাচার্য।

২০১৭ সালে শোণিতপুর, বিশ্বনাথ, নগাঁও জেলায় বন্যার সময়ে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অন্তত ৪০ শতাংশ মহিলা খোলা স্থানে মলত্যাগে বাধ্য হন। ৬৬ শতাংশ মহিলা জানান, তাঁরা প্যাড ব্যবহার করেন না।

ময়ূরীর বক্তব্য, ত্রাণ শিবিরে মেয়েদের জন্য পৃথক শৌচালয় থাকে না। স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা থাকে না। উঁচু স্থানে থাকা স্কুল বা সরকারি ভবনে ত্রাণ শিবির তৈরি হয়। সেখানে পুরুষ-মহিলা, গবাদি পশু ঠাসাঠাসি করে থাকে। পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক শৌচাগার, স্তন্যদান করা ও গর্ভবতী মহিলাদের আলাদা ঘর আগাম তৈরি করে দিলে সমস্যা কমবে। রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন চিকিমিকি তালুকদার বলেন, ‘‘দায়িত্ব নেওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মেয়েদের সমস্যা বিবেচনা করে আমায় সুপারিশের তালিকা পাঠাতে বলেন। তখনই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করেছি। এমনকি, এমনও স্কুল আছে, যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের পৃথক শৌচালয় নেই। তা তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। মেয়েদের স্যানিটারি ন্যাপকিনের জন্য সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। তার পরেও গ্রামে মেয়েদের মধ্যে কাপড়ের চলই বেশি। তাই নীতি নিলেই হবে না। স্কুল পর্যায় থেকে সচেতনতা প্রয়োজন।’’

অনলাইন মঞ্চে আন্দোলন ও স্বাক্ষর সংগ্রহের বিষয়টি বিপর্যয় মোকাবিলা, রাজস্ব ও সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী ভবেশ কলিতারও চোখে পড়েছে। তিনি জানান, এ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন। অসমের ‘প্যাডম্যান’ হিসেবে পরিচিত নয়ন শইকিয়ার কথায়, “দেশে নারী দিবস ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে। ঋতুস্রাব ও স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে তৈরি ছবি পুরস্কৃত হচ্ছে। কিন্তু ঋতুস্রাব বা ন্যাপকিন নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা গ্রামে চলে না। ঋতুমতী থাকাকালীন শীতকালেও মাটিতে শুতে হয়, স্কুলে যেতে দেওয়া হয় না, পুরুষদের থেকে দূরে থাকতে হয়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মেয়েদের যে শোচনীয় অবস্থায় পড়তে হয়, তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE