সনিয়া গাঁধী। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে রাজ্যে দলগুলির মধ্যে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকারকে উৎখাতের প্রশ্নে এনডিএ-বিরোধী দলগুলিকে দ্বন্দ্ব ভুলে একজোট হয়ে লড়তে হবে বলে জানালেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধী। সূত্রের খবর, আজ ১৭টি বিরোধী দলের বৈঠকে সনিয়ার এই বক্তব্যের পরে স্থির হয়েছে, বিরোধী দলগুলি ফের সরকার বিরোধিতায় কক্ষ সমন্বয় শুরু করবে।
উপনির্বাচনে রাজস্থানের তিনটি আসনই বিজেপির থেকে ছিনিয়ে আনার পরে আজ দৃশ্যতই উজ্জীবিত ছিল রাহুল গাঁধীর দল। সংসদীয় লাইব্রেরি কক্ষে প্রায় সোয়া দু’ঘণ্টা বৈঠকের পর হাসিমুখে বেরোন সনিয়া এবং রাহুল। পাশে মনমোহন সিংহকে নিয়ে গাড়িতে ওঠার আগে সাংবাদিকদের রাহুল বলেন, ‘‘আজকের বৈঠক খুব ভাল হয়েছে।’’ সনিয়া বলেন, ‘‘বাকিটা গুলাম নবি আজাদ আপনাদের বলবেন।’’ ওই বৈঠকে এনসিপি, সমাজবাদী পার্টি, সিপিএম-সিপিআই, আরজেডি, ডিএম-কে-সহ একাধিক দলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। রাজস্থানে সাফল্যের জন্য সকলেই অভিনন্দন জানান মা-ছেলেকে।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে সনিয়া আজ বিরোধীদের বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য রাজনীতির কারণে বিরোধী ঐক্যে যেন কোনও ভাবে ফাটল না ধরে। আজকের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপস্থিত থাকার জন্য একাধিক বার
অনুরোধ জানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। আজ কিছুটা হতাশার সুরে তাঁদের বক্তব্য, রাজস্থানে জয়ের পরে কংগ্রেস যখন মোদী-বিরোধিতার প্রশ্নে চাঙ্গা, ঠিক সেই সময়েই হাজির থাকলেন না মমতা।
মমতা নিজে না এলেও প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনকে। বৈঠকের পরে কংগ্রেস-প্রশ্নে নিজেদের অবস্থানও বদল করল তৃণমূল। গত সংসদীয় অধিবেশন থেকে কংগ্রেসকে সঙ্গে না নিয়ে নিজের মতো করে সরকার বিরোধিতার নীতি নিয়ে চলছিলেন মমতা। আজ সনিয়ার ডাকা বৈঠকের পরে ডেরেক বলেন, ‘‘নিজেদের মধ্যে কক্ষ সমন্বয়ের ব্যাপারে সব দলগুলিই একমত হয়েছে।’’
বৈঠকের পরে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘সংসদীয় দলনেত্রী হিসেবে সনিয়া গাঁধী এই বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম বক্তৃতা দিয়ে আলোচনার ভিত তৈরি করে দেন। এর পর প্রত্যেক নেতা সেই ভিতের উপর দাঁড়িয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বলেছেন।’’ সনিয়া-রাহুল যে বিষয়গুলির উপর বিরোধীদের বিশেষ করে নজর দিতে বলেছেন, তার মধ্যে রয়েছে ঘৃণার রাজনীতি, জাত-সম্প্রদায়ের নামে হিংসা, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে খাটো করার মতো ঘটনা। এ সবের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে রুখে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন সনিয়া। রাহুল বলেছেন, রাজ্যের মধ্যে এনডিএ-বিরোধী দু’টি দলের মধ্যে যদি মতপার্থক্য হয়, তা হলে সেটা সেখানেই সামলে নেওয়া হোক। তার জের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে টেনে এনে যেন বিজেপি-বিরোধী আন্দোলনকে দুর্বল না করা হয়।
বিরোধী সমন্বয়ের জন্য আগে ৭টি দলের একটি গোষ্ঠী বানানো হয়েছিল। আজ গুলাম নবি জানিয়েছেন, সেই গোষ্ঠীকে আবার চাঙ্গা করা হচ্ছে। তাঁরা সমস্ত বিরোধী দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে সংসদের ভিতরে-বাইরে রাজনৈতিক কর্মসূচি তৈরি করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy