Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভারসাম্য রেখে চলছেন সনিয়া

লোকসভা ভোটে হারের দায় নিয়ে রাহুল সভাপতি পদে ইস্তফা ঘোষণার পরেই কংগ্রেসের প্রবীণদের একটি অংশ দলের রাশ হাতে তুলে নিতে তৎপর হন।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪৫
Share: Save:

কংগ্রেসের সভাপতি থাকাকালীন রাহুল গাঁধী যাঁদের উপর ভরসা রেখেছিলেন, সনিয়া গাঁধী দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁদের গুরুত্ব লঘু করতে সক্রিয় দলেরই অনেকে। এই পরিস্থিতিতে ভারসাম্য বজায় রেখে পা ফেলতে হচ্ছে কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভাপতিকে।

লোকসভা ভোটে হারের দায় নিয়ে রাহুল সভাপতি পদে ইস্তফা ঘোষণার পরেই কংগ্রেসের প্রবীণদের একটি অংশ দলের রাশ হাতে তুলে নিতে তৎপর হন। সেটি বুঝে রাহুল শেষ মুহূর্তে তাঁদের প্রচেষ্টায় জল ঢালার চেষ্টা করেন। অবশেষে সনিয়াই দলের ভার নেন। সভাপতি পদে থেকে রাহুল যেটি করতে পারেননি, সনিয়া এখন করার চেষ্টা করছেন। তাতেও প্রতি পদে বাধা আসছে। সনিয়া দায়িত্বে থাকায় প্রবীণদের মধ্যে চাপ দিয়ে আদায়ের প্রবণতাও বাড়ছে।

যেমন হরিয়ানা। সামনেই সেখানে বিধানসভা ভোট। কিন্তু সে রাজ্যে দলের নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা নিজের শর্তে অনড়। শর্ত না মানলে তিনি দল ছাড়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন। তাঁর দাবি, রাহুল যে অশোক তানওয়ারকে দলের সংগঠনের ভার দিয়েছেন, তাঁকে সরাতে হবে। ভোটের আগে নিজে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হতে চাইছেন হুডা। আর ছেলে দীপেন্দ্র হুডাকে বসাতে চাইছেন অশোকের জায়গায়। ক’দিন আগে হরিয়ানার রোহতকে ‘মহাপরিবর্তন সভা’ করে শক্তিও দেখিয়েছেন তিনি।

কংগ্রেসের এক নেতা জানান, ‘‘হুডা আসলে ভোটের আগে ক্ষমতা চাইছেন, যাতে প্রার্থী বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত তাঁর হাতে থাকে। সনিয়া আগেই ভেবে রেখেছিলেন, হুডার দাবি মেনে অশোককে সরানো হতে পারে। বদলে শৈলজার মতো তৃতীয় কোনও ব্যক্তিকে সেখানে বসানো হবে। কিন্তু হুডা এতে রাজি নন।’’ আজ

১০ জনপথে হুডাকে ডেকে পাঠান সনিয়া। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং দলের প্রবীণ নেতা গুলাম নবি আজাদ। অনেকেই ভেবেছিলেন, আজই ফয়সালা ঘোষণা হবে। কিন্তু রাত পর্যন্ত জট কাটেনি।

অশোক তানওয়ার অবশ্য এখনও বলে চলেছেন, ‘‘পদ থেকে সরানোর গল্প অনেক বছর ধরেই চলছে। যাঁদের কান্নাকাটি করার করুক।’’ দিল্লিতেও বদল করতে চাইছেন সনিয়া। শীলা দীক্ষিত বেঁচে থাকার সময়ই দিল্লির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পি সি চাকোর সঙ্গে তাঁর নিরন্তর বিবাদ বাধত। কংগ্রেস সূত্রের মতে, চাকোকে সরিয়ে এ বারে তারিক আনোয়ারকে আনতে চাইছেন সনিয়া। মহারাষ্ট্রে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তুলে পাঁচ বারের বিধায়ক সতীশ চতুর্বেদীকে ছয় বছরের জন্য বের করে দিয়েছিলেন অশোক চহ্বাণ। সনিয়া তাঁকে ফিরিয়ে এনেছেন।

মধ্যপ্রদেশে দীপক বাবরিয়াকে সরাতে চাইছেন সনিয়া। কর্নাটকে বিরোধী দলের নেতা হতে চাইছেন ডি কে শিবকুমার, বাদ সাধছেন সিদ্দারামাইয়া। সেখানেও হস্তক্ষেপ করতে হবে তাঁকে। নরেন্দ্র মোদীর তারিফ করায় শশী তারুরের ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন কেরল কংগ্রেসের সভাপতি। অনেকেই মনে করেন, রাহুলের নির্দেশেই সেটি হয়েছিল। শশী প্রকাশ্যে অনড় অবস্থান নেওয়ার পর আজ কেরল কংগ্রেসের সভাপতি মুল্লাপল্লী রামচন্দ্রন জানান, তারুরের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট। শাস্তি হবে না তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sonia Gandhi Rahul Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE