‘দেবী সুলতানা’র মহড়ায় বিশ্ববন্ধু সেন (বাঁ দিকে)। আগরতলায়।—নিজস্ব চিত্র ।
তিনি এখন ত্রিপুরা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার। সুতরাং তাঁর কাজকর্মও নির্দিষ্ট আইনি পরিধিতে বাঁধা পড়ে গিয়েছে। বিশ্ববন্ধু সেনের হাতে এখন হঠাৎ করেই অনেক সময়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি ফের তাঁর ‘পুরনো প্রেম’কে ঝালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তাঁর প্রেম ‘যাত্রাপালার’ সঙ্গে। রাজনীতিতে নামার আগে বিশ্ববন্ধুবাবু দীর্ঘদিন অভিনয় করেছেন যাত্রায়। পাশাপাশি করেছেন পরিচালনার কাজ। বহু পুরস্কারও পেয়েছেন। মাঝে রাজনীতির কারণে প্রায় ৩৫ বছরের বিচ্ছেদ। এ বার আবার ফিরছেন সতীর্থদের নিয়ে। শুরু করছেন তাঁদের পুরনো পালা, ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় রচিত ‘দেবী সুলতানা’ দিয়েই। ধর্মনগরের শতবর্ষ প্রাচীন পৌষ সংক্রান্তি মেলার শেষ দিনে, আগামী ১৯ জানুয়ারি ত্রিপুরার যাত্রা মণ্ডপেই ফের যাত্রার আসরে আবির্ভাব হবে বিশ্ববন্ধুবাবুর।
ধর্মনগরের চার বারের বিধায়ক বিশ্ববন্ধু সেন। প্রথম তিন বার কংগ্রেস বিধায়ক। এ বার বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে জিতে ডেপুটি স্পিকার হন।
‘দেবী সুলতানা’ পালায় নবাব মুর্শিদকুলি খাঁয়ের ভূমিকায় দেখা যাবে বিশ্ববন্ধুবাবুকে। বিশ্ববন্ধুবাবুর কথায়, ‘‘একই সঙ্গে এ পালায় অত্যাচারী মুর্শিদকুলির মানবিক উদারতার দিকটিও প্রণিধানযোগ্য। এক হিন্দু রাজার কন্যা তাঁর সামনেই মেনে ধরেন ইসলামের প্রকৃত রূপটি। যেখানে ধর্মান্তকরণ নেই, অত্যাচার নেই। হিন্দু সমাজ মুর্শিদকুলির হাতে বন্দি মেয়েটিকে ত্যাজ্য করে। সেই ক্রমে হয়ে ওঠে দেবী সুলতানা।’’
সাধারণ ভাবে টেলিভিশন, ইন্টারনেটের এই যুগে বিনোদনের অঙ্গ হিসেবে সর্বত্রই যাত্রাপালা ক্রমশ কোণঠাসা। সে কথা জেনেও পুরনো সতীর্থদের জোটবদ্ধ করে যাত্রার পুনরুজ্জীবনই বিশ্ববন্ধুবাবুর লক্ষ্য। আপাতত বিধায়কের এই নতুন দিকটি নিয়ে ধর্মনগরের পরের প্রজন্মের চরম কৌতূহল। সকলেই অপেক্ষায় আছেন, রাজনীতির মঞ্চের বাইরে যাত্রার মঞ্চে বিশ্ববন্ধুবাবু কতখানি সপ্রতিভ হন তা জানতে। আর সে সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy