মুম্বই বিস্ফোরণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হল আবু সালেমের।—ফাইল চিত্র।
দোষী সাব্যস্ত আবু সালেম। ভারতের বুকে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হল এক কালের এই দাউদ ইব্রাহিম-ঘনিষ্ঠ দুষ্কৃতীকে। শুক্রবার বিশেষ টাডা আদালত ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণ মামলার আরও পাঁচ অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এই ছয় অপরাধীর সাজা ঘোষণা অবশ্য এখনও বাকি। আবু সালেম-সহ ছ’জনকে কী শাস্তি দেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করার আগে ফের দু’পক্ষের কৌঁসুলিদের বক্তব্য শুনবে আদালত। ১৯ জুন থেকে সেই শুনানি শুরু হবে বলে এই মামলার সিবিআই কৌঁসুলি দীপক সালভি জানিয়েছেন।
আবু সালেম ছাড়া যে পাঁচ জনকে এ দিন আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে, তারা হল মুস্তাফা দোসা, ফিরোজ খান, তাহের মার্চেন্ট, রিয়াজ সিদ্দিকি, করিমুল্লা খান। এই দফায় মোট সাত অভিযুক্তের বিচার করেছেন বিশেষ টাডা আদালতের বিচারক। তাদের মধ্যে একমাত্র আবদুল কায়ুম শেখকে আদালত মুক্তি দিয়েছে।
মুম্বইতে ১৯৯৩ সালে হওয়া ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মামলায় এই নিয়ে দ্বিতীয় দফার বিচার শেষ হল টাডা আদালতে। যে সাত জনকে শুক্রবার দোষী সাব্যস্ত করা হল, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল ২০০৩ থেকে ২০১০-এর মধ্যে। এদের আগে ১২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ১০০ জনই আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়। ২০০৬ সালেই তাদের সাজা ঘোষণা করেছিল আদালত। আবু সালেম এবং বাকিরা যখন ধরা পড়েছিল, তখন যে হেতু ওই ১২৩ জনের বিচারের কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিল, সে হেতু এই সাত জনের বিচার আলাদা করে শুরু হয়। আদালত এ দিন ছ’জনকেই দোষী বলে ঘোষণা করেছে। মুম্বই বিস্ফোরণ মামলায় ৩৩ অভিযুক্ত এখনও পলাতক। সেই তালিকায় রয়েছে দাউদ ইব্রাহিম এবং টাইগার মেমনের নামও। রয়েছে দাউদের ভাই আনিস ইব্রাহিমের নাম। আজ যে মুস্তাফা দোসা দোষী সাব্যস্ত হল, তার ভাই মোহম্মদ দোসার নামও ওই তালিকায় রয়েছে।
• ১২ মার্চ, ১৯৯৩-এ মুম্বই জুড়ে ধারাবাহির বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল ২৫৭ জনের, আহত হয়েছিলেন ৭১৩ জন। নষ্ট হয় মোট ২৭ কোটি টাকার সম্পত্তি।
• এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত দাউদ ইব্রাহিম, টাইগার মেমন এখনও ফেরার। তারা পাকিস্তানে আশ্রিত।
• এই মামলার আর এক মূল অভিযুক্ত ইয়াকুব মেমনকে ৩০ জুলাই ২০১৫-এ ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।
কড়া পাহাড়ায় মুম্বই বিস্ফোরণ মামলার মূল অভিযুক্ত আবু সালেম।—ফাইল চিত্র।
• দোষি সাব্যস্ত ছ’ জনের মধ্যে আবু সালেম, মুস্তফা দোসা, ফিরোজ খান, তাহের মার্চেন্ট, আর করিমুল্লা খান—এই পাঁচ জন সক্রিয়ভাবে ২৪ বছর আগের সেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ কাণ্ডের ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিল বলে জানাল বিশেষ টাডা আদালত।
• এদের সকলের বিরুদ্ধেই অস্ত্রশস্ত্র এবং বিস্ফোরক সরবরাহের অভিযোগ প্রমাণিত বলে জানাল আদালত।
• রিয়াজ সিদ্দিকিকে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হলেও, টাডা আইনে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হল।
• পুর্তুগলে পালিয়ে যাওয়া আবু সালেমকে প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যে ভারতে নিয়ে আসা হয় ২০০৫ সালের নভেম্বরে।
• আবু সালেমের বয়ানের ভিত্তিতে রিয়াজ সিদ্দিকি এবং কায়ুম শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
• এই মামলায় প্রাথমিক পর্যায়ে ১০০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। তাদের মধ্যে ৯৩ জন আগেই ছাড় পেয়ে যায়। বাকি সাতজনের মধ্যে ছ’জনকে আজ দোষী সাব্যস্ত করল বিশেষ টাডা আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy