নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ডি রাজা, ফারুক আবদুল্লা এবং শরদ পওয়ার। রবিবার সর্বদল বৈঠকে। ছবি: পিটিআই
গো-রক্ষার নামে গণপিটুনি নিয়ে সোমবার থেকে সংসদ উত্তাল করতে চাইছে এককাট্টা বিরোধী জোট। তার ঠিক আগে প্রধানমন্ত্রী আজ ফের গোরক্ষকদের তাণ্ডব নিয়ে মুখ খুললেন। কিন্তু এ বারে বলটি সুকৌশলে ঠেলে দিলেন রাজ্যের ঘাড়ে।
সংসদ শুরুর আগে আজ সর্বদল বৈঠকে কংগ্রেস থেকে বাম— সকলেই স্পষ্ট করে দেয়, দেশজুড়ে গোরক্ষকদের তাণ্ডব নিয়ে ঝড় তুলবে তারা। পরিস্থিতি বুঝে বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী সেই হাওয়া বের করার চেষ্টা করে বললেন, গোরক্ষার নামে যে সব অসামাজিক শক্তি অপরাধ করছে, রাজ্য সরকারের উচিত তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া। কারণ, আইনরক্ষা রাজ্যেরই দায়িত্ব। রাজ্যকে এই মর্মে একটি নির্দেশিকাও পাঠিয়েছে কেন্দ্র। মোদীর বক্তব্য, গো-মাতাকে রক্ষার নামে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া বরদাস্ত করা যায় না। গোরক্ষার নামে সাম্প্রদায়িক রং দিয়ে রাজনৈতিক লাভ ওঠানোর দৌড় শুরু হয়েছে, তাতে দেশের কোনও মঙ্গল হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কথাতেও বিরোধীদের ক্ষোভ কমেনি। বিরোধীরা বলছেন, সাবরমতী আশ্রমে দাঁড়িয়ে আবেগঘন গলায় মোদীর হুঁশিয়ারির পরেও গণপিটুনি তো চলছেই। সে কথা মনে করিয়ে কংগ্রেসের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, ‘‘কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পরেই দেশের নানা প্রান্তে গোরক্ষকদের তাণ্ডব বেড়েছে। গেরুয়া শিবিরের প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে এর পিছনে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তিন বছর ়লাগল নির্দেশিকা পাঠাতে? অধিকাংশ ঘটনাই তো ঘটছে বিজেপিশাসিত রাজ্যে। প্রধানমন্ত্রী এর আগেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তাতেই বা কী লাভ হয়েছে? আজ তো রাজ্যের কোর্টে বল ঠেলে দায় এড়িয়ে গেলেন তিনি!’’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি ভোট আজ
সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিও বলেন, ‘‘শুধু গোরক্ষক নয়, বিভিন্ন জায়গায় ‘প্রাইভেট আর্মি’ তৈরি হচ্ছে এই সরকারের আমলে। সামাজিক ঐক্য ও অখণ্ডতা এর ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সামনেই আমি বলেছি, সংসদে এই নিয়ে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হওয়া দরকার।’’
এরই মধ্যে বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়েছে নাগপুর পুলিশ। নাগপুরে গোমাংস নিয়ে যাওয়ার ‘অপরাধে’ বিজেপিরই কর্মী সেলিম শাহকে মারধর করে এক দল দুষ্কৃতী। আজ নাগপুর পুলিশ জানিয়েছে, সেলিম গোমাংসই নিয়ে যাচ্ছিলেন। ফরেন্সিক পরীক্ষায় এ কথা জানা গিয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, কাল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। তার উপর ৯ অগস্ট ভারত-ছাড়ো আন্দোলন নিয়ে বিশেষ অধিবেশন করতে চান প্রধানমন্ত্রী। সাকুল্যে ১৪ দিন হাতে সময় আছে। এরই মধ্যে সরকার ১৬টি বিল আনছে। আর দুই কক্ষ মিলিয়ে এখনও ১৮টি বিল বকেয়া। এই অবস্থায় সরকার মুখে যাই বলুক, গোরক্ষকদের নিয়ে আলোচনার কোনও সুযোগই রাখতে চাইছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy