Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
বিজেপিকে খোঁচা পাকিস্তানের
National News

জিন্না-টিপু টিপ্পনীতে মেরুকরণের কৌশল

কথায় কথায় বিজেপি সভাপতি টেনে আনেন কংগ্রেস থেকে সাসপন্ড হওয়া মণিশঙ্কর আইয়ারের প্রসঙ্গও। যিনি পাকিস্তানে গিয়ে জিন্নাকে ‘মহান নেতা’ আখ্যা দিয়েছিলেন। অমিত বলেন, ‘‘গুজরাত হোক বা কর্নাটক, সব ভোটের আগে কংগ্রেস ‘বি-টিম’ তৈরি রাখে। যারা সংখ্যালঘুদের একজোট করার চেষ্টা করে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ০৪:৫৯
Share: Save:

টিপু থেকে জিন্না। কর্নাটকে ভোট-পর্বের শেষ লগ্নে মেরুকরণই তাস নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের। লক্ষ্য, হিন্দু ভোট একজোট করা আর সংখ্যালঘু ভোটে ভাঙন ধরানো। কর্নাটকে ভোট প্রচারে গিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ টেনে আনলেন টিপু সুলতানের প্রসঙ্গ। বললেন, ‘‘ভোটব্যাঙ্ক বাঁচাতেই সুলতানদের জয়ন্তী পালন করছে কংগ্রেস।’’ আর অমিত শাহের মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া শুধুই টিপু-টিপু জপ করছেন। মুখ্যমন্ত্রী আর পাকিস্তান একই ভাষায় কথা বলছেন।’’ গত শুক্রবারই টিপুর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছে পাকিস্তান সরকার।

কথায় কথায় বিজেপি সভাপতি টেনে আনেন কংগ্রেস থেকে সাসপন্ড হওয়া মণিশঙ্কর আইয়ারের প্রসঙ্গও। যিনি পাকিস্তানে গিয়ে জিন্নাকে ‘মহান নেতা’ আখ্যা দিয়েছিলেন। অমিত বলেন, ‘‘গুজরাত হোক বা কর্নাটক, সব ভোটের আগে কংগ্রেস ‘বি-টিম’ তৈরি রাখে। যারা সংখ্যালঘুদের একজোট করার চেষ্টা করে।’’

মোদী-শাহের জোড়া আক্রমণের পরে অবশ্য এর জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। এমনকি, জবাব এসেছে খোদ পাকিস্তান থেকেও। পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফইজল বলেন, ‘‘গুজরাত হোক বা কর্নাটক, ভারতের ভোটে ফায়দা তুলতে মরিয়া হয়ে পাকিস্তানকে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে টেনে আনে বিজেপি। নিজেদের বিষয় ও শক্তিতে ভর করে ভোটে লড়ুন।’’ আর সিদ্দারামাইয়ার পাল্টা তোপ: ‘‘টিপু-পাকিস্তান, কোনও আক্রমণই কাজে আসবে না। আমরা তিরিশ জন মহান ব্যক্তির জয়ন্তী পালন করি। শুধু টিপুর কথা বলে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতিটা আসলে কে করছেন?’’

মেরুকরণের তাস খেলে বিজেপি এক দিকে হিন্দু ভোটকে একজোট করতে চায়। পাশাপাশি সংখ্যালঘু ভোটে ভাঙন ধরানো তাদের লক্ষ্য। যাতে সেই ভোটের পুরোটা কংগ্রেসের ঘরে না যায়, তার একটা ভাগ পায় দেবগৌড়ার জেডিএস-ও। সেই কারণেই নরেন্দ্র মোদী প্রথমে দেবগৌড়ার প্রশস্তি করেও পরে সমালোচনার পথে হেঁটেছেন। রাহুল মন্দির-যাত্রা শুরুর পরে বেকায়দায় পড়েছিল বিজেপি। এখন কংগ্রেসের গায়ে সংখ্যালঘু দলের তকমা সুকৌশলে সেঁটে দিতে চাইছে।

দুর্নীতির প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নে কর্নাটকে অস্বস্তিতে রয়েছে বিজেপি। খনি মাফিয়া রেড্ডিদের টিকিট দেওয়া নিয়ে গোড়া থেকেই আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন রাহুল গাঁধী ও তাঁর দলের নেতারা। এরই পাল্টা হিসেবে মোদী আজ দুর্নীতির প্রশ্নেই আক্রমণ করেন কংগ্রেসকে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্তদের আশ্রয় দেওয়া ছাড়া কংগ্রেসের আর কোনও কাজ নেই।’’ এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের ‘দিল’ (হৃদয়) নেই। তারা নানা ‘ডিল’ করতেই ব্যস্ত। তারা দলিতদের নিয়ে চিন্তাও করে না।’’ স্পষ্টতই ‘ডিল’ বলতে বেআইনি সমঝোতার কথাই বুঝিয়েছেন মোদী। টেনেছেন ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলার কথা। মোদী বলেন, ‘‘মা-ছেলেকে জামিন নিতে হয়েছে। তাঁদের দলের নেতারাই আবার কর্নাটকে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বি এস ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।’’

দুর্নীতির অভিযোগে ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয়েছিল। খাটতে হয়েছে জেলও। রেড্ডিদের সঙ্গে তাঁর যোগ নিয়েও প্রশ্ন আছে। এই ভোটে কেন রেড্ডিদের টিকিট দেওয়া হল তা নিয়ে ইয়েদুরাপ্পা আজ বলেন, ‘‘জেতাটাই বড় কথা। রেড্ডিদের সম্পর্কে সতর্ক হয়েই এগোব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE