Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মিজোরামের বিরুদ্ধে অবরোধ বরাকে

মিজোরামে অ-মিজোদের উপর নির্যাতনের অভিযোগে বরাক উপত্যকার স্থানে স্থানে আজ দিনভর অবরোধ চলে। মিজোরামগামী সব সড়কে ভোরে অবরোধ শুরু হয়। এতে মিজোরাম বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অ-মিজোদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্ট কালের জন্য অবরোধ চলবে বলে শুরুতে জানানো হলেও, সন্ধ্যায় প্রশাসনের অনুরোধে সব জায়গা থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর ও হাইলাকান্দি শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৫
Share: Save:

মিজোরামে অ-মিজোদের উপর নির্যাতনের অভিযোগে বরাক উপত্যকার স্থানে স্থানে আজ দিনভর অবরোধ চলে। মিজোরামগামী সব সড়কে ভোরে অবরোধ শুরু হয়। এতে মিজোরাম বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অ-মিজোদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্ট কালের জন্য অবরোধ চলবে বলে শুরুতে জানানো হলেও, সন্ধ্যায় প্রশাসনের অনুরোধে সব জায়গা থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এ দিন আন্দোলনে সামিল ছিলেন বরাকের দুই বিধায়ক— কংগ্রেসের সিদ্দেক আহমদ এবং এআইইউডিএফ-এর আতাউর রহমান মাঝারভুঁইয়া।

কাছাড় জেলার লায়লাপুর দিয়ে মূলত মিজোরামে যানবাহন ঢোকে। হাইলাকান্দির জামিরা এবং ধলছড়া দিয়েও যাতায়াত রয়েছে। রাস্তা রয়েছে করিমগঞ্জের আছিমগঞ্জ হয়ে। এ দিন সবকটি সড়ক ছিল অবরোধকারীদের দখলে। জামিরায় মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালথানহাওলার কুশপুতুল দাহ করা হয়। বারবার মিজোরাম প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। বহু সংগঠন সামিল হলেও মূল নেতৃত্ব দেয় কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি, ছাত্র মুক্তি সংগ্রাম সমিতি ও ক্রিয়েটিভ পিপলস স্টুডেন্টস ফোরাম। অবরোধের দরুন পণ্যবাহী বহু লরি রাস্তায় আটকে পড়ে। প্রশাসনের তরফে কড়া নজরদারি ছিল। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল দুই রাজ্যের সীমানা এলাকায়। কাছাড় ও হাইলাকান্দিতে দুই ডিএসপি-কে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেটও। বিকেলে সরকারের পক্ষে কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ ও অতিরিক্ত জেলাশাসক এম কে দাস লায়লাপুরে ছুটে যান। তাঁরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রতিশ্রুতি দেন, রাজ্য সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে। পরে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এম জি ভি কে ভানু টেলিফোনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, রাজ্য সরকার মিজোরামের সঙ্গে কথা বলছে। শীঘ্র দু’পক্ষের বৈঠক হবে। তিনি ৭ দিনের সময় চেয়ে নেন। তাঁর আশ্বাসে সন্ধ্যায় লায়লাপুরে আন্দোলন প্রত্যাহৃত হয়।

হাইলাকান্দিতে জেলাশাসক বরুণ ভুঁইয়া আন্দোলনকারীদের ডেকে কথা বলেন। সেখানেও অতিরিক্ত মুখ্য সচিব ভানু আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। পরে মিজোরামের বিরুদ্ধে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের পক্ষে সাধন পুরকায়স্থ বলেন, ‘‘শীঘ্র অ-মিজোদের সুরক্ষার নিশ্চয়তা না-পেলে ফের অর্থনৈতিক অবরোধ শুরু হবে মিজোরামের বিরুদ্ধে।’’

একই হুঁশিয়ারি দেন সিদ্দেক আহমেদ ও আতাউর রহমান মাঝারভুঁইয়া। প্রাক্তন সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন মন্ত্রী সিদ্দেক বলেন, ‘‘দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। সেখান থেকে মানুষ যখন বলেন, উলঙ্গ করে পেটানো হয়েছে— তখন সহ্য করা যায় না।’’ আতাউরের কথায়, ‘‘মিজো সংগঠন অ-মিজোদের উপর নির্যাতন করলেও সরকার চুপ।’’ তাঁর অভিযোগ, ছাত্র সংগঠন নয়, এটি আসলে জঙ্গি সংগঠন। মিজোরাম সরকার তাদের মদত দিচ্ছে। কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরউদ্দিন লস্কর ও পিপিএসএফের সভাপতি ইমরান হোসেন জানিয়ে দেন, এ বারও সরকারি পর্যায়ে চুক্তি সই আর সদ্ভাবের কথা বলে নির্যাতন চলতে থাকলে চরম শিক্ষা দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE