Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
National news

‘দুর্নীতিগ্রস্ত’! আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর

আজই, বুধবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন গভর্নরের দায়িত্ব নিয়েছেন শক্তিকান্ত দাস। কোনও দুঁদে অর্থনীতিবিদ নন তিনি। ইতিহাসে এমএ করেছেন। তাই নতুন গভর্নর হিসেবে যখন তাঁর নাম ঘোষণা হয়েছে, ভ্রূ কুঁচকেছেন অনেকেই।

বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী ও নতুন আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস।

বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী ও নতুন আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:৩৭
Share: Save:

উর্জিত পটেলের ইস্তফার পরই জল্পনা চলছিল এ বার কার হাতে উঠবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভার। সে জল্পনা অবশ্য মিটে গিয়েছে।আর সেই সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন গভর্নরের নিয়োগ নিয়ে বেশ কয়েকটিপ্রশ্নও তুলে দিয়েছে।

আজই, বুধবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন গভর্নরের দায়িত্ব নিয়েছেন শক্তিকান্ত দাস। কোনও দুঁদে অর্থনীতিবিদ নন তিনি। ইতিহাসে এমএ করেছেন। তাই নতুন গভর্নর হিসেবে যখন তাঁর নাম ঘোষণা হয়েছে, ভ্রূ কুঁচকেছেন অনেকেই। জোর আলোচনা শুরু হয়েছে, রঘুরাম রাজন-উর্জিত পটেলের মতো অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদরা যেখানে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের পদ সামলেছেন, সেখানে ইতিহাসে এমএ করা এক জন ব্যক্তিকে দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার মাথায় বসিয়ে দেওয়া হল কী ভাবে?

তবে শক্তিকান্তের নিয়োগ নিয়ে যিনি সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছেন, তিনি আর কেউ নন, বিজেপির প্রবীণ নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। শক্তিকান্তকে ‘দুর্নীতিপরায়ণ’ বলেছেন তিনি। স্বামী প্রশ্ন তুলেছেন, যে ব্যক্তি পি চিদম্বরমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দুর্নীতি করেছেন, সে রকম এক ব্যক্তিকে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে মোটেই ভাল করেনি কেন্দ্র। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ,চিদম্বরমের বিরুদ্ধে যখন দুর্নীতির মামলা চলছিল, এই শক্তিকান্ত দাসই তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। স্বামীর তাই প্রশ্ন, এমন এক জন ব্যক্তিকে কী ভাবে গভর্নরের পদে বসানো হল তা বুঝে উঠতে পারছেন না। শক্তিকান্তের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন বলে জানিয়েছেন স্বামী।

আরও পড়ুন: এই প্রবণতা থাকলে লোকসভায় ১০০ আসন খোয়াতে পারে বিজেপি?

আরও পড়ুন: গহলৌত না পাইলট? মুখ্যমন্ত্রীর ‘তাজ’ কার মাথায় উঠবে, জোর জল্পনা রাজস্থানে

স্বামী আরও জানান, উর্জিত যখন ইস্তফা দেওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন তাঁকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনতে। উর্জিতের ইস্তফা দেশের অর্থনীতির পক্ষে ক্ষতি বলে মনে করছেন স্বামী। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি বলেন, “এই সময়ে উর্জিতের ইস্তফা সরকারের জন্য তো বটেই, দেশের অর্থনীতি এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষে বিশাল ক্ষতি। প্রধানমন্ত্রীর উচিত এখনই তাঁকে ডেকে ব্যক্তিগত কারণটা কী তা জিজ্ঞাসা করা। এবং তাঁকে বুঝিয়ে আবার ফিরিয়ে আনা। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রীর এটা করা প্রয়োজন।”

স্বামীর মতো অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন শক্তিকান্তের নিয়োগ নিয়ে। গুঞ্জন চলেছে, সমালোচনা চলছে, কিন্তু প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেননি।

সরকারি সূত্রের অবশ্য যুক্তি, অর্থনীতিবিদ না হলেও শক্তিকান্ত বরাবরই তামিলনাড়ু ও কেন্দ্রীয় সরকারে আর্থিক দফতর সামলেছেন। তিনি ইউপিএ আমলে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। আবার বর্তমান অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিরও ঘনিষ্ঠ তিনি। আর্থিক বিষয়ক সচিবের পদ থেকে অবসরের পর জি-২০-তে ভারতের শেরপা বা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। ওড়িশার এই অফিসার এখন পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সদস্য।

কেন্দ্রের আমলা মহলের একাংশের মতে, শক্তিকান্তের আসল উপযোগিতা অন্য জায়গায়। তা হল তাঁর ঐকমত্য তৈরির ক্ষমতা। কেন্দ্রের সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সংঘাতের আবহে তাঁর এই ক্ষমতা কাজে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, জেটলির অর্থ মন্ত্রক যখন লোকসভা ভোটের আগে খয়রাতি করতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে থাকা উদ্বৃত্ত অর্থের ভাগ চাইছে, তখন সেই জেটলির অধীনে সচিব হিসেবে কাজ করা শক্তিকান্তের পক্ষে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতা বজায় রাখা সম্ভব হবে তো?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE