বন্যার জন্য প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাড়ুকে দুষল কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার। আজ সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে কেরল সরকার জানিয়েছে, তামিলনাড়ু সরকার ওই বাঁধ থেকে আচমকা প্রচুর জল ছাড়তে শুরু করে। সেটাই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
মুল্লাপেরিয়ার বাঁধটি কেরলে অবস্থিত হলেও, সেটিকে চালনা করে তামিলনাড়ু। কেরলের অভিযোগ, বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও আগে থেকে একটু একটু করে জল ছাড়েনি তামিলনাড়ু। তা যদি করা হত, তা হলে বন্যা হত না। বাঁধের জলস্তর প্রথমে ১৩৬ ফুটে পৌঁছেছে, তার পর ১৩৯ ফুটে। তখনও জল ধরে রেখেছিল তামিলনাড়ু। ক্রমশ জলস্তর পৌঁছে যায় ১৪২ ফুটে।
কেরলের বক্তব্য, এই সময়ে তারা ইদুক্কি ও ইদামালায়র বাঁধের জল অল্প অল্প করে সমুদ্রে ছেড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছিল। ১৫ অগস্ট ইদুক্কিতে ভারী বৃষ্টি নামে। এর পরে মুল্লাপেরিয়ার থেকে আচমকা জল ছাড়া হয়। ফলে ইদুক্কি থেকে আরও বেশি পরিমাণ জল ছাড়তে বাধ্য হয় কেরল। তার জেরেই বন্যা।
আরও পড়ুন: ভাসল ভিটের গ্রামও, তবু নীরব ‘ভূমিপুত্র’
কোর্টে তামিলনাড়ু সরকারের পাল্টা বক্তব্য, তারা গত ১৬ অগস্ট জল ছেড়েছিল। তার এক সপ্তাহ আগেই বন্যা শুরু হয়ে গিয়েছিল কেরলে। সুপ্রিম কোর্ট তাদের ১৪২ ফুট পর্যন্ত জল ধরে রাখার অধিকার দিয়েছে বলেও দাবি পলানীস্বামী সরকারের।
দোষারোপ-পাল্টা দোষারোপের মধ্যেই বন্যাত্রাণ শিবিরে গিয়ে রাত কাটানোর ছবি টুইট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আলফোন্স জোসেফ কন্নন্থনম। টুইট করা ছবিটিতে দেখা গিয়েছে, শিবিরের শতরঞ্চিতে ঘুমোচ্ছেন আলফোন্স। সেই ছবি ভাইরাল হতেই সোশ্যাল মিডিয়া ভরে যায় বিদ্রুপে। কেউ কেউ টুইটারে বলেন, এটা সস্তা জনপ্রিয়তা কুড়োনোর সময় নয়।
আরও পড়ুন: কেরলের জন্য বিদেশি অর্থ নিতে ‘ঘুর’ পথ
জল নামলেও এলাকা এবং ঘর-বাড়ির যা অবস্থা, তাতে ত্রাণ শিবির ছেড়ে বাসিন্দাদের বাড়ি ফেরা এখনও অনিশ্চিত। ফলে কার্যত উপচে পড়েছে ত্রাণ শিবিরগুলি। অন্তত ১৩ লক্ষ মানুষ এখনও শিবিরে বসবাস করছেন।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই বন্যা-বিধ্বস্ত এলাকায় বাড়ি-ঘর পরিষ্কারে বাসিন্দাদের সাহায্য করতে একটি কন্ট্রোল রুম খুলেছে সরকার। এ দিনই চেঙ্গান্নুর, আলাপুঝা, চালাক্কুডির মতো জায়গার ত্রাণ শিবিরগুলি ঘুরে ঘুরে বাসিন্দাদের অসুবিধার কথা শুনেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন। আগামী কাল কর্নাটকের কোডাগু এলাকার বন্যা বিধ্বস্ত এলাকাগুলি দেখতে যাবেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy