Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আরও সময় আধারে, জানাল সুপ্রিম কোর্ট

আধার মামলার নিষ্পত্তি যত দিন না হয়, ব্যাঙ্ক এবং মোবাইলে আধার যোগের সময়সীমা তত দিন বাড়িয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সরকারের ‘কনসলিডেটেড ফান্ড’ থেকে যে সব প্রকল্পে খরচ হয়, সেগুলির ক্ষেত্রে এখনও আধার নম্বর চাইতে পারে প্রশাসন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩১
Share: Save:

পরিষেবায় আধার সংযুক্তিকরণ প্রশ্নে সাময়িক রেহাই।

আধার মামলার নিষ্পত্তি যত দিন না হয়, ব্যাঙ্ক এবং মোবাইলে আধার যোগের সময়সীমা তত দিন বাড়িয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সরকারের ‘কনসলিডেটেড ফান্ড’ থেকে যে সব প্রকল্পে খরচ হয়, সেগুলির ক্ষেত্রে এখনও আধার নম্বর চাইতে পারে প্রশাসন। আদালতের ওই নির্দেশে স্বস্তিতে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

আধারের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি পুট্টাস্বামী-সহ বেশ কয়েক জন আবেদনকারী। গত ডিসেম্বরে আধার যোগের সময়সীমা ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ায় সুপ্রিম কোর্ট। ৬ মার্চ এই মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল ইঙ্গিত দেন, সরকার ফের সময়সীমা বাড়াতে তৈরি। আজ ফের সে কথাই জানান সরকারি কৌঁসুলি। আবেদনকারীদের আইনজীবী পি চিদম্বরম জানান, আধার আইন অর্থবিল হিসেবে পাশ করানো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তার বৈধতা বিচারের অধিকার আদালতের রয়েছে।

দু’পক্ষের সওয়াল শোনার পরে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানায়, আধারের বৈধতা নিয়ে আগে ফয়সালা হওয়া প্রয়োজন। তার পরে আদালত বিচার করে দেখবে মোবাইল বা ব্যাঙ্কের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণের প্রয়োজন রয়েছে কিনা। যে সব প্রকল্পে ‘কনসলিডেটেড ফান্ড’ থেকে অর্থ খরচ করা হয়, সেখানে আধার নম্বর চাইতে পারে সরকার। আইন অনুযায়ী, আধার না থাকলেও ওই সব প্রকল্পের সুবিধে পেতে পারেন নাগরিকেরা। সে ক্ষেত্রে তাঁদের পরিচয় অন্য উপায়ে নিশ্চিত করা হয়।

আরও পড়ুন: এমন মিছিল কবে হবে, প্রশ্ন রাজ্যে রাজ্যে

লোকসভা নির্বাচনের আগে আধার প্রশ্নে বিশেষ বাড়াবাড়ি করতে আর রাজি নয় বিজেপি। দলের নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় জানাচ্ছেন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে আধারভিত্তিক রেশন ব্যবস্থার গোলমালের জেরে খাবার না পেয়ে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে এ ভাবে মৃতের সংখ্যা বাড়লে সমস্যা বাড়বে বিজেপির।

এরই মধ্যে আজ সংসদে গাঁধী মূর্তির সামনে আধার নিয়ে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সাংসদেরা। মূলত বিভিন্ন সরকারি কল্যাণমূলক প্রকল্প ও ব্যাঙ্ক ও মোবাইলের সঙ্গে সংযুক্তিকরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান ওই সাংসদেরা। বিজেপি শিবিরের দাবি, আধারের কারণে সরকারি প্রকল্পে প্রচুর ভুয়ো ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। গত আড়াই বছরে ওই খাতে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকারের দাবি, এর ফলে প্রতি বছর ১১০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে সরকারের। যা শুনে কংগ্রেসের দাবি, তাহলে ইউপিএ আমলে কেন নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীরা ওই প্রকল্পের বিরুদ্ধে ছিলেন তার ব্যাখ্যা দিতে হবে।

বিজেপি তথা সঙ্ঘের একাংশ মনে করছে ব্যাঙ্ক, মোবাইল, পাসপোর্ট-সহ সব ক্ষেত্রে আধার বাধ্যতামূলক করায় আমজনতার মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের আধার নিয়ে বক্তব্য এবং অন্য দিকে সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান, সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত। উপরন্তু পিএনবি কেলেঙ্কারির পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন ওঠে, আধারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের উপর সরকার নজরদারি চালাচ্ছে, কিন্তু নীরব মোদী কি নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার লিঙ্ক করেছিলেন!

সব মিলিয়ে আধার নিয়ে আর বিতর্ক বাড়াতে চাইছে না বিজেপি। তাই এই রায়ে আপাত স্বস্তি শাসক শিবিরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE