Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অযোধ্যা মামলায় মধ্যস্থতাকে সুযোগ দিতে চায় আদালত

রামমন্দির-বাবরি মসজিদ ঘিরে জমি বিবাদ মধ্যস্থতার মাধ্যমে মেটানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে চায় সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৪
Share: Save:

রামমন্দির-বাবরি মসজিদ ঘিরে জমি বিবাদ মধ্যস্থতার মাধ্যমে মেটানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে চায় সুপ্রিম কোর্ট।

শীর্ষ আদালতের যুক্তি, যদি পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সমাধানের ১ শতাংশও সুযোগ থাকে, তা হলে সেই সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ আজ এ বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি।

এর আগে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের আমলে মধ্যস্থতার মাধ্যমে অযোধ্যা বিবাদ মেটানোর কথা উঠেছিল। সে প্রায় আড়াই বছর আগের কথা। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি খেহর বলেছিলেন, তিনি নিজে মধ্যস্থতা করতে রাজি। তার পরে অবশ্য কোনও ফয়সালা হয়নি। শ্রীশ্রীরবিশঙ্কর মধ্যস্থতার চেষ্টাও করেছিলেন।

কিন্তু বিশেষ লাভ হয়নি। পরবর্তী প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সিদ্ধান্ত নেয়, অযোধ্যা মামলাকে নিছক সম্পত্তি বিবাদ বা জমির উপর অধিকারের মামলা হিসেবেই দেখা হবে।

কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আজ ভিন্ন অবস্থান নিল শীর্ষ আদালত। আজ সুপ্রিম কোর্টে বর্তমান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ

বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে অযোধ্যা মামলার শুনানি ছিল। বেঞ্চের অন্যতম বিচারপতি শরদ এ বোবদে হিন্দু ও

মুসলমান, দু’পক্ষকেই প্রশ্নের সুরে বলেন, ‘‘আপনারা কি সত্যিই মনে করেন, এত বছরের বিবাদ শুধুই জমির অধিকার নিয়ে! আমরা সম্পর্কের ক্ষতে মলমের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে চাইছি। সম্পত্তি বিবাদের মামলার তো ফয়সালা করাই যায়।’’

সুপ্রিম কোর্টের এই প্রস্তাবে অবশ্য সকলে রাজি হননি। হিন্দুদের মধ্যে নির্মোহী আখাড়া, মুসলিম পক্ষের কয়েক জনের আইনজীবী রাজি হলেও রামলালা বিরাজমানের আইনজীবী, অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা ও মহন্ত সুরেশ দাসের আইনজীবীরা এতে রাজি হননি। রামলালা-র আইনজীবী সি এস বৈদ্যনাথন যুক্তি দেন, আগে এই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এই মামলার দ্রুত ফয়সালা হোক।

কিন্তু বিচারপতি বোবদে বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে কখনও মধ্যস্থতার চেষ্টা হয়নি। আমরা এটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবছি। এখানে কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ হচ্ছে না। এটি আসলে পুজো করার নাগরিক অধিকারের প্রশ্ন। আমরা তাই মধ্যস্থতার সম্ভাবনাকে একটা সুযোগ চাই।’’ মধ্যস্থতা হলেও গোটা বিষয়টিই গোপন থাকবে বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি বোবদে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোনও পক্ষের বিবৃতিতে সবটা ভেস্তে যাক, তা আমরা চাই না।’’

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আগামী ৬ মার্চ মধ্যস্থতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আজ প্রধান বিচারপতি

ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, সংস্কৃত, গুরুমুখী মিলিয়ে ৩৮ হাজার পৃষ্ঠার নথি আইনজীবীদের হাতে তুলে দেন। অযোধ্যা মামলার সমস্ত নথি এখনও সুপ্রিম কোর্টের তরফে অনুবাদ করার কাজ শেষ হয়নি।

উত্তরপ্রদেশ সরকার যে সব নথির অনুবাদ করেছিল, তা সব পক্ষ মেনে নিতে রাজি কি না, তা জানতে চান প্রধান বিচারপতি।

মুসলিম পক্ষের আইনজীবী রাজীব ধওয়ান জানান, নথি খতিয়ে দেখে তা জানাতে আট সপ্তাহ সময় লাগবে। যদি আদালত মধ্যস্থতার পক্ষেই রায় দেয়, তা হলে ওই আট সপ্তাহ সময় মধ্যস্থতার জন্য কাজে লাগানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ayodhya Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE