Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

আসারাম মামলা এত ধীরে কেন, প্রশ্ন কোর্টের

বাবা রাম রহিমের ভক্তদের সম্পর্কে নরম সুর নিয়ে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে তোপের মুখে পড়েছিল হরিয়ানার বিজেপি সরকার। এ বার আর এক ধর্মগুরু আসারাম বাপুর মামলায় গা ছাড়া ভাব নিয়ে গুজরাতের বিজেপি সরকারও সুপ্রিম কোর্টের আক্রমণের মুখে পড়ল।

আসারাম বাপু। ফাইল চিত্র।

আসারাম বাপু। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৭ ০৪:০৪
Share: Save:

এক ‘বাবা’কে নিয়ে রক্ষা নেই। আর এক ‘বাপু’র চিন্তা হাজির।

বাবা রাম রহিমের ভক্তদের সম্পর্কে নরম সুর নিয়ে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে তোপের মুখে পড়েছিল হরিয়ানার বিজেপি সরকার। এ বার আর এক ধর্মগুরু আসারাম বাপুর মামলায় গা ছাড়া ভাব নিয়ে গুজরাতের বিজেপি সরকারও সুপ্রিম কোর্টের আক্রমণের মুখে পড়ল।

রাম রহিমের মতো ৭৬ বছরের আসারাম বাপুও ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত। কেন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা ধীর গতিতে চলছে, তা নিয়ে আজ সুপ্রিম কোর্ট গুজরাত সরকারের জবাবদিহি দাবি করেছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ভি রামান্না ও বিচারপতি অমিতাভ রায়ের বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘‘ধর্ষণের মামলায় সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল নির্যাতিতার সাক্ষ্য। কেন এখনও আদালতে নির্যাতিতাদের বক্তব্যই শোনা হয়নি?’’ আসারামের বিরুদ্ধে ওই মামলায় দু’জন প্রধান সাক্ষী ইতিমধ্যেই খুন হয়ে গিয়েছেন। আরও ১৭ জন সাক্ষী হামলায় আহত হয়েছেন। তা সত্ত্বেও কেন এত দেরি, তা নিয়ে গুজরাত সরকারকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা।

আরও পড়ুন: বিশ বছর জেল ধর্ষক ধর্মগুরুর

ধর্ষণের দায়ে ধর্মগুরু

• আসারাম বাপু গুজরাত

• নারায়ণ সাই গুজরাত

• গঙ্গানন্দ তীর্থপাঠ কেরল

• মেহন্দি কাশিম মহারাষ্ট্র

• স্বামী অমৃত চৈতন্য কেরল

• স্বামী প্রেমানন্দ তামিলনাড়ু

• জ্ঞানচৈতন্য কেরল

আসারাম বাপু ও তার ছেলে নারায়ণ সাইয়ের বিরুদ্ধে সুরাতের দুই বোন ধর্ষণ ও বেআইনি ভাবে আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছিলেন। বড় বোনের অভিযোগ ছিল, আসারাম তাঁকে ১৯৯৭ থেকে ২০০৬-এর মধ্যে বারবার যৌন নির্যাতন করে। সে সময় তাঁরা আমদাবাদের কাছে আসারাম বাপুর আশ্রমেই থাকতেন। রাজস্থানের এক কিশোরীও আসারামের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তোলে। যোধপুরের কাছে মানাই গ্রামে আসারামের আশ্রম। উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরের ওই কিশোরী যোধপুরের ওই আশ্রমেই থাকত। এই সব অভিযোগের পরেই ২০১৩-র অগস্টে আসারামকে গ্রেফতার করে যোধপুর পুলিশ। আসারামের বিরুদ্ধে চার্জশিটে তার স্ত্রী লক্ষ্মীবেন, কন্যা ভারতী এবং ধ্রুভবেন, নির্মলা, জস্সি ও মীরা নামের চার শিষ্যার বিরুদ্ধে ধর্ষণে মদত দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

এর আগে আসারাম নানা যুক্তিতে জামিন চাইলেও সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করে দিয়েছে। এপ্রিল মাসে কোর্টই সুরাতের নিম্ন আদালতকে দ্রুত সাক্ষীদের বয়ান নথিভুক্ত করে মামলা গোটানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সে সময়ও নির্যাতিতারা-সহ ৪৬ জনের সাক্ষ্য নথিভুক্ত কররা বাকি ছিল। আজ আসারামের আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়েই সুপ্রিম কোর্টে জানান, মামলা ধীর গতিতে চলছে। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা যুক্তি দেন, নির্যাতিতাদের নিরাপত্তার কারণেই এখনও তাঁদের সাক্ষ্য নেওয়া যায়নি। কিন্তু বিচারপতিরা বলেন, মামলা অকারণে ধীর গতিতে চলছে। আর সাক্ষীরা হামলার শিকার হচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE