Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পদোন্নতিতে জারি সংরক্ষণ: সুপ্রিম কোর্ট

তফসিলি জাতি-জনজাতি প্রার্থীদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে শর্তগুলি নিয়ে আপত্তি তোলে কেন্দ্র। অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল যুক্তি দেন, দীর্ঘ সময় ধরেই এই মানুষেরা সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশ

গ্রাফিক- তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক- তিয়াসা দাস।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১৮
Share: Save:

সরকারি চাকরির পদোন্নতিতে তফসিলি জাতি-জনজাতির সংরক্ষণের জন্য কোনও শর্ত রাখল না সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত আজ জানিয়ে দিয়েছে, পদোন্নতির প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরার জন্য সরকারকে কোনও তথ্যও হাজির করতে হবে না।

সরকারি চাকরির পদোন্নতিতে তফসিলি জাতি-জনজাতির জন্য সংরক্ষণ আদৌ প্রয়োজন কি না, তা নিয়েই মামলা ছিল শীর্ষ আদালতে। ২০০৬ সালে, এম নাগরাজ মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, পদোন্নতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সরকারকে কয়েকটি শর্ত পালন করতে হবে। প্রার্থীটি আদৌ কতটা পিছিয়ে পড়া, চাকরিতে সংরক্ষিত পদের অভাব রয়েছে কি না কিংবা সামগ্রিক প্রশাসনিক দক্ষতার প্রশ্নকে নিয়ে তথ্য দিতে হবে। তার পরেই পদোন্নতির প্রশ্নে তফসিলি জাতি-জনজাতির প্রার্থীরা সংরক্ষণের সুযোগ পেতে পারবেন। কিন্তু এ দিন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ যে রায় দিয়েছে, তাতে এখন থেকে সরকারকে আর ওই ধরনের তথ্য হাজির করাতে হবে না। শীর্ষ আদালত বলেছে, নাগরাজ মামলার রায়টি ১৯৯২ সালের ইন্দ্র সাহনি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের ৯ সদস্যের বেঞ্চের রায়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। মামলাটি মণ্ডল কমিশন মামলা হিসেবে পরিচিত।

২০০৬ সালের নাগরাজ মামলার রায়টি পুনর্বিবেচনার জন্য ৭ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে পাঠানোর আর্জি জানিয়েছিল কেন্দ্র। তবে ৯ সদস্যের বেঞ্চের রায়ের কথা উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। নাগরাজ মামলার রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি আবেদন জানিয়েছিল। তফসিলি জাতি-জনজাতি প্রার্থীদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে শর্তগুলি নিয়ে আপত্তি তোলে কেন্দ্র। অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল যুক্তি দেন, দীর্ঘ সময় ধরেই এই মানুষেরা সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশ। ফলে এদের পদোন্নতিতে অহেতুক শর্ত আরোপ করা উচিত নয়। সংরক্ষণ বিরোধীদের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদীর পাল্টা যুক্তি, কেউ সরকারি চাকরি পেলেই পিছিয়ে পড়ার তকমা শেষ হয়ে যায়। ফলে তার পদোন্নতির প্রশ্নে সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়ার অর্থ হয় না। দ্বিবেদীর মতে, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে সংরক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। উপরের শ্রেণিতে নয়।

৫৮ পৃষ্ঠার সর্বসম্মত রায়ে বিচারপতিরা বলেছেন, তফসিলি জাতি-জনজাতিরা সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের মধ্যেও সব চেয়ে দুর্বল। তবে এদের অবস্থাপন্ন অংশকে নিয়ে নাগরাজ মামলায় রায় নতুন করে খতিয়ে দেখতে চায়নি কোর্ট। এ নিয়ে আদালতের মন্তব্য, ‘‘দুর্বল অংশের মানুষ যাতে বাকিদের সমান হয়ে উঠতে পারে, সে জন্যই সংরক্ষণের ব্যবস্থা। তবে সেটা সম্ভব হবে না, যদি এদেরই অবস্থাপন্ন অংশ পছন্দের চাকরিগুলির সব সুবিধা নিয়ে নেয় আর বাকিদের সেই পিছিয়ে পড়া অবস্থাতেই রেখে দেয়।’’ কেন্দ্র অবশ্য তফসিলি জাতি-জনজাতিদের সামগ্রিক অংশকেই সংরক্ষণের আওতায় রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়েছে। বেণুগোপালের মতে, তফসিলি জাতি-জনজাতিদের মধ্যে অবস্থাপন্ন কোনও ব্যক্তিকে আজও বিয়ে করতে হয় কোনও দলিতকেই। বিএসপি নেত্রী মায়াবতী আজকের রায়কে সমর্থন জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Supreme Court Court Reservation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE