Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পণের দাবিতে বধূনির্যাতনে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারবে পুলিশ, জানাল সুপ্রিম কোর্ট

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮-এ জামিনঅযোগ্য ধারা। তাতে স্বামী-শ্বশুরবাড়ির লোকেদের তিন বছর পর্যন্ত জেলের নিদান রয়েছে। এর অপব্যবহার হচ্ছে, মিথ্যে অভিযোগে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এই অভিযোগের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টই ২০১৭-র জুলাইয়ে রক্ষাকবচ হিসেবে কিছু নির্দেশিকা তৈরি করে দেয়

বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। ফাইল চিত্র।

বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১৯
Share: Save:

৪৯৮-এ ধারায় অভিযোগ এলে পুলিশ তখনই এফআইআর দায়ের করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারবে। পণের দাবিতে বধূনির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার কাজ ফের পুলিশের হাতেই তুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮-এ জামিনঅযোগ্য ধারা। তাতে স্বামী-শ্বশুরবাড়ির লোকেদের তিন বছর পর্যন্ত জেলের নিদান রয়েছে। এর অপব্যবহার হচ্ছে, মিথ্যে অভিযোগে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এই অভিযোগের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টই ২০১৭-র জুলাইয়ে রক্ষাকবচ হিসেবে কিছু নির্দেশিকা তৈরি করে দেয়। বিচারপতি আদর্শ কুমার গয়াল ও বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়, প্রতি জেলায় এক বা একাধিক পরিবার কল্যাণ কমিটি তৈরি হবে। আইনের সঙ্গে পরিচিত ব্যক্তি, সমাজকর্মী, সরকারি অফিসারদের স্ত্রী বা অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নিয়ে তিন সদস্যের ওই কমিটিই প্রথমে অভিযোগ খতিয়ে দেখবে। কারণ অনেক ক্ষেত্রে স্বামী-শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের উপর অন্য কারণে রাগ করেও পণের দাবিতে বধূনির্যাতনের মামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে কমিটির রিপোর্ট দিলেই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। তার আগে এফআইআর-ও দায়ের করতে পারবে না। এর বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়।

আজ প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ ওই দুই বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশিকাকে খারিজ করে দিয়েছে। প্রধান বিচারপতির মতে, পরিবার কল্যাণ কমিটি তৈরি করে ৪৯৮-এ ধারায় পুলিশি পদক্ষেপে ভারসাম্য আনার চেষ্টা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এই ধরনের কোনও কমিটির জায়গা নেই। আইনে ফাঁক থাকলেও, আদালত তা পূরণ করতে পারে না। সংবিধান আদালতকে সেই ক্ষমতা দেয়নি। আইনে বদল করতে হলে তা সংসদকেই করতে হবে। তবে ৪৯৮-এ ধারার অপব্যবহার, বধূনির্যাতনের মিথ্যে অভিযোগে স্বামী, শ্বশুরবাড়ির লোকেদের হেনস্থা রুখতে সুপ্রিম কোর্টের দাওয়াই, প্রতি থানায় ৪৯৮-এ-র মামলা দেখার জন্য নির্দিষ্ট অফিসার থাকবেন। তিনি যাতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেন, তার জন্য তাঁকে কঠোর প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তা ছাড়া, আগাম জামিনের জন্যও কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া যাবে।

আরও পড়ুন: ৪৯৮-এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে খুশি সব পক্ষই

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চের যুক্তি, আইনের ৪৯৮-এ ধারায় কোনও দোষ নেই। পণের দাবিতে বধূনির্যাতন রুখতেই ১৯৮৩ সালে ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এই ধারা যুক্ত করা হয়েছিল। দোষ রয়েছে পুলিশে গ্রেফতার করার ক্ষমতার অপপ্যবহারে। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘যা ইচ্ছা তাই করতে পারি ভেবে পুলিশ সম্রাটের মতো আচরণ করে, সেখানেই সমস্যা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

498A Police Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE