বিচারপতি নিয়োগে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। জাতীয় বিচারবিভাগীয় নিয়োগ কমিশন বাতিল করে দু’দশকের পুরনো কলেজিয়াম ব্যবস্থাকেই বহাল রাখার কথা ঘোষণা করল শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্ট ও বিভিন্ন রাজ্যের হাইকোর্টগুলির বিচারপতিদের নিয়োগে দীর্ঘ দুই দশকের কলেজিয়াম ব্যবস্থাকে পাল্টে দিয়েছিল কেন্দ্র। এ জন্য জাতীয় বিচারবিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। কিন্তু কমিশন গঠনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একটি আর্জি দাখিল হওয়ায় বিষয়টি নয়া মোড় নেয়। প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তু প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি লিখে জানিয়ে দেন, যত ক্ষণ না কমিশনের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ তাঁদের সিদ্ধান্ত শোনাচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর পক্ষে নিয়োগ কমিশনের বৈঠকে যোগ দেওয়া সম্ভব নয়। এর পরেই সরকার প্রধান বিচারপতির অবস্থান ঠিক করে দিতে সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে আর্জি জানায়। মে মাসে সেই মামলার শুনানিতে নতুন ব্যবস্থার দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। আর এ দিন সেই ব্যবস্থাকেই একেবারে বাতিল ঘোষণা করলেন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
নতুন ব্যবস্থাকে গড়ে তুলতে গিয়ে দাবি করা হয়েছিল, এটি বিচারবিভাগের কাজকে অর্থবহ করে তুলবে এবং নিয়োগ কমিশনে বিখ্যাত ব্যক্তিদের উপস্থিতি দায়বদ্ধতা বাড়াবে। পাশাপাশি, বাছাই প্রক্রিয়াতেও স্বচ্ছতা আনবে। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, দু’জন রাজনীতিক, তার মধ্যে ‘স্যান্ডুইচ’ হয়ে থাকা প্রধান বিচারপতি এবং দু’জন নিতান্ত আনকোরা ব্যক্তি কী ভাবে বিচারবিভাগের নিয়োগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন?
এ দিন এনজেএসি-কে অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এই কমিশন আদালতের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের সমান। বিচারপতিদের নিয়োগ করার অধিকার রয়েছে একমাত্র বিচারপতিদের।
সরকার সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে। রায় ঘোষণা হতেই কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী ডি ভি সদানন্দ গৌড়া বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমরা বিস্মিত। ২০টি রাজ্যের সরকার এনজেএসি আইনকে সমর্থন করেছিল। এই আইনে দেসের সাধারণ মানুষের সমর্থন রয়েছে।’’ গৌড়া জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করবে সরকার। সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘সুুপ্রিম কোর্টের এই রায় সংসদের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy