সুষমা স্বরাজ।
সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দু’বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে মোদী সরকার দেশে জাতীয়তাবাদের জোয়ার আনতে সক্রিয়। আর তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে সার্ক সংক্রান্ত বৈঠকে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করলেন সুষমা স্বরাজ। করমর্দন দূরস্থান, কুরেশিকে এড়াতে বৈঠকের মাঝখানেই বেরিয়ে যান ভারতের বিদেশমন্ত্রী। তবে তার আগে সুষমা সরব হয়েছেন সন্ত্রাসবাদ নিয়ে।
নিউ ইয়র্কে আজ পূর্বনির্ধারিত ছিল সার্ক-ভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলন। সার্ক যখন, অন্য দেশগুলির সঙ্গে থাকার কথা ছিল পাক বিদেশমন্ত্রী কুরেশিরও। আজ কিছুটা নাটকীয় ভাবেই ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী সম্মেলন কক্ষে প্রবেশের আগে মন্ত্রকের কর্তারা গিয়ে দেখে আসেন, কে কোথায় বসেছেন! বৈঠক শুরু হয়ে যাওয়ার একটু পরে ঢোকেন সুষমা এবং বসেন পাক বিদেশমন্ত্রীর থেকে যথাসম্ভব দূরে। নিজের বক্তব্য পেশ করার পরেই দ্রুত কক্ষত্যাগ করেন তিনি। এই ধরনের বৈঠকের পরে সবাই মিলে ছবি তোলার রেওয়াজ থাকে। থাকে নেতাদের করমর্দন এবং শুভেচ্ছা বিনিময়। কিন্তু পাক বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে এক ফ্রেমেও থাকতে চাননি সুষমা।
ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীর তড়িঘড়ি এই প্রস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। কুরেশির মতে, গোটা বিষয়টি ‘বিস্ময়কর’, ‘দুর্ভাগ্যজনক’ এবং এর ফলে সার্ক-ভুক্ত দেশগুলির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটবে। কিছুটা ব্যঙ্গের সুরে কুরেশি বলেছেন, ‘‘উনি (সুষমা) মাঝপথে বৈঠক থেকে চলে গেলেন। হয়তো ওঁর শরীরটা খারাপ লাগছিল!’’ সাংবাদিকদের পাক বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘এই মঞ্চ থেকে যদি কিছু লাভ অর্জন করতে হয়, তা হলে সামনের দিকে এগোতে হবে। পরবর্তী বৈঠকের তারিখ স্থির করতে হবে। বলতে দ্বিধা নেই, একটি মাত্র দেশ সার্কের অগ্রগতিতে বাধা তৈরি করছে। গোটা অঞ্চলের সংযোগ, সমৃদ্ধিতে বাধা তৈরি করছে। সার্ক-এর মূল উদ্দেশ্যটাকেই নষ্ট করে দিচ্ছে। একটি মাত্র দেশ সার্ককে কাজ করতে দিচ্ছে না।’’
‘একটি মাত্র দেশ’ বলে ভারতকেই যে বিদ্ধ করতে চেয়েছেন পাক বিদেশমন্ত্রী, তা স্পষ্ট। সাউথ ব্লক সূত্রে পাল্টা বলা হয়েছে, ‘‘পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর অভিযোগগুলির কোনও গুরুত্ব নেই। তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং বাস্তবের সঙ্গে তার কোনও মিলই নেই। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ তাঁর বক্তব্যে আঞ্চলিক গোষ্ঠী হিসেবে সার্কের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেছেন এবং সার্ক সংক্রান্ত প্রকল্পগুলির কথা বিশদে জানিয়েছেন।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বৈঠক ছাড়ার আগে নিজের বক্তৃতায় সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ তুলে ইসলামাবাদকে বিঁধেছেন সুষমা। বলেছেন, ‘‘আমাদের অঞ্চলের শান্তি এবং সুস্থিতি ধ্বংস করার জন্য সন্ত্রাসবাদ সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই জঙ্গিপনার উৎসকে এবং তার গোটা আশ্রয়স্থলকে ঝাড়ে-বংশে নির্মূল করাটা প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy