অসমের বঙ্গভাষীদের সমস্যা নিয়ে কথা বললেন দুই বাঙালি। এক জন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। অন্য জন শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব।
এনআরসি ও ডি ভোটার (সন্দেহজনক ভোটার) নিয়ে অসমে বাঙালিরা যে সঙ্কটের মুখে— নানা উদাহরণ দিয়ে তা রাষ্ট্রপতিকে বোঝানোর চেষ্টা করেন সুস্মিতাদেবী। তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। সব শুনে রাষ্ট্রপতি মুখোপাধ্যায় তাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনার পরামর্শ দেন। তিনি নিজেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরকারের অবস্থান জানতে চাইবেন বলে সুস্মিতাদেবীকে আশ্বাস দেন।
রাষ্ট্রপতিকে এ সংক্রান্ত স্মারকলিপি দিয়ে শিলচরের কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘‘এনআরসি সংশোধনের সময় বিদেশি সন্দেহে পুলিশ অনেককে ধরে জেলে পুরছে। এতে বঙ্গভাষীদের সঙ্কট বেড়েছে।’’ সুস্মিতার আর্জি, কেন্দ্র যেন এনআরসি প্রক্রিয়া চলাকালীন ধরপাকড় বন্ধ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এনআরসি প্রণয়নের বর্তমান নির্দেশিকায় ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর যাঁরা এ দেশে এসেছেন, তাঁদের বিদেশি বলে চিহ্নিত করার বিধান রয়েছে। এ নিয়েও উদ্বিগ্ন শিলচরের সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের কোনও বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। ফলে বাংলাদেশ তাঁদের নিতে চাইবে না। তখন তাঁদের কী হবে? রাষ্ট্রহীন হয়ে থাকবে আজীবন? এ কি ভারতের মতো সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পক্ষে সম্মানজনক?’’
বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের নিয়ে নানা ধরনের কথা বলছে বিজেপি। একাংশ নেতার বক্তব্য— শরণার্থীর স্বীকৃতি দি য়ে নাগরিকত্ব প্রদানের কথা হচ্ছে। এ নিয়ে সুস্মিতাদেবী রাষ্ট্রপতিকে আর্জি জানান, ‘‘আপনি দয়া করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দিল্লির অবস্থান জানতে চান।’’ তাঁর দাবি, শরণার্থী, ধর্মীয় বিভাজনের পথে না হেঁটে, বরং ২০১৪ সালের ভোটার তালিকাকে ভিত্তি করে সবাইকে নাগরিকত্ব প্রদান করা হোক। তা হলে রাষ্ট্রহীন হয়ে কাউকে থাকতে হবে না, বিদেশি সমস্যারও চিরতরে অবসান ঘটবে।
রাইসিনা হিল থেকে বেরিয়ে সুস্মিতাদেবী বলেন, ‘‘মুখোমুখি অনেক দিন পর তাঁর সঙ্গে কথা হল। বাংলাতেই মত বিনিময় হল। বাবার সঙ্গে খুব ঘনিষ্টতা ছিল। কথায় কথায় এর উল্লেখ করছিলেন। আসার সময় পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে চাইলাম। কাছে ডেকে নিলেন। আশীর্বাদ করলেন।’’
কিন্তু অসমের বঙ্গভাষীদের সমস্যা নিয়ে কী বললেন বাঙালি রাষ্ট্রপতি? সুস্মিতার কথায়, ‘‘রাষ্ট্রপতি আগে থেকেই সব জানেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’’ কতটা আশ্বস্ত হয়েছেন সন্তোষমোহন দেবের কন্যা? কিছুটা থেমে থেকে জবাব দেন, ‘‘না হলে আন্দোলনে নামতে হবে। পথে বেরিয়ে আন্দোলন করব। বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বার্থে দাবি আদায় করেই ছাড়ব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy