Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

ক্ষোভের আঁচে বন্ধ হয়ে গেল স্টারলাইট

পরিবেশ বাঁচানোর আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছলে গত সপ্তাহে পুলিশের গুলিতে প্রাণ গিয়েছিল ১৩ জন আন্দোলনকারীর। যা নিয়ে ক্ষোভের ঝড় উঠেছিল চেন্নাই থেকে দিল্লি। জনরোষের সেই ঢেউকে আন্দাজ করেই আজ তুতিকোরিনের স্টারলাইট কপার কারখানা পুরোপুরি বন্ধ করে দিল তামিলনাড়ু সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
চেন্নাই শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৮ ০৪:৪৭
Share: Save:

বিরোধিতা চলছিল দু’দশক ধরেই। পরিবেশ বাঁচানোর আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছলে গত সপ্তাহে পুলিশের গুলিতে প্রাণ গিয়েছিল ১৩ জন আন্দোলনকারীর। যা নিয়ে ক্ষোভের ঝড় উঠেছিল চেন্নাই থেকে দিল্লি। জনরোষের সেই ঢেউকে আন্দাজ করেই আজ তুতিকোরিনের স্টারলাইট কপার কারখানা পুরোপুরি বন্ধ করে দিল তামিলনাড়ু সরকার।

তুতিকোরিন বা থুদুকুরিতে স্টারলাইট কপার কারখানার দূষণ থেকে মারাত্মক সব রোগ ছড়াচ্ছে, এই অভিযোগে আশপাশের ১৬টি গ্রামের বাসিন্দারা তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছিলেন। স্টারলাইট তাদের কারখানা সম্প্রসারণের যে পরিকল্পনা সামনে এনেছিল, তাতেও আপত্তি করছিলেন গ্রামবাসীরা। আন্দোলনের ১০০তম দিনে তুতিকোরিনে বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর শুরু করে। নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। প্রথম দিনের মৃত্যুমিছিলও দমাতে পারেনি এডিএমকে সরকারের পুলিশকে। পরের দিন বিক্ষোভকারীদের উপর ফের গুলি চালায় তারা। পুলিশের ভূমিকা কতটা অমানবিক হতে পারে, সেই ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছিল। এর মধ্যেই তামিলনাড়ুর দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বিতর্কিত কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয়। তার পরেই আজ বিতর্কিত কারখানাটিকে পুরোপুরি বন্ধ করার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী ই পলানীস্বানী।

আগামিকাল থেকে শুরু তামিলনাড়ুর বিধানসভা অধিবেশন। সরকারের ইস্তফার দাবিতে বিক্ষোভ তীব্র হতে পারে বুঝেই কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত আজই নিয়ে নিলেন পলানীস্বামী। জনরোষ যে কত তীব্র হতে পারে, রবিবারই তার আঁচ পেয়েছিলেন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী কদম্বুর রাজু। শহরের সরকারি হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। তখনই হাসপাতালে ভর্তি এক বিক্ষোভকারীর মায়ের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় মন্ত্রীকে। ছেলের মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে মন্ত্রীকে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘নিজের ছেলের সঙ্গে এমন ঘটলে মানতে পারতেন?’’ এত কিছুর পরেও কী কারণে স্টারলাইট কপার পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না, তা নিয়ে মন্ত্রীর জবাব চান তাঁর ছেলে। ক্ষোভের মুখে মন্ত্রী বলেন, ‘‘কারখানা বন্ধ হবেই।’’ বিক্ষোভকারীদের একটি দল আজ মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল। পরে সরকারি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ‘জনস্বার্থে’ কারখানা বন্ধের কথা জানানো হয়।

আলাদা বিবৃতি দিয়ে পলানীস্বামী বলেছেন, ‘‘তুতিকোরিনের বাসিন্দারা দূষণের অভিযোগ এনে চিরদিনের জন্য ওই কারখানা বন্ধের দাবি করেন। সে কথা ভেবেই পদক্ষেপ করা হল।’’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এ ব্যাপারে প্রয়াত জয়ললিতার পথকেই মেনে চলছেন তিনি। আর পরিবেশ আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, মহারাষ্ট্র, গুজরাত কিংবা গোয়ায় জায়গা না মেলাতেই তুতিকোরিনে কারখানা গড়েছিল স্টারলাইট কপার। সেখান থেকেও ব্যবসা গোটাতে হল তাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE