বেলুন বিক্রি করেই দিন কাটে শিলচরের রাহুল-সাগরদের। ছবি: সংগৃহীত।
বেলুন নিয়ে সারাক্ষণই মেতে থাকে রাহুল পাল, স্বপন কীর্তনিয়া, সাগর মণ্ডল। কত আর বয়স তাদের! ১৩ থেকে ১৫। এই বয়সে এমনটাই তো হওয়ার কথা!
রাহুলদের অবশ্য বেলুন নিয়ে লোফালুফির সুযোগ নেই। শিলচরের গোলদীঘি মলের সামনে শিশু-কিশোররা বেলুনের জন্য বায়না ধরলেই তারা ছুটে যায়। হাতে তাদের বিভিন্ন আকারের বেলুন। একবার শিশুর হাতে ধরিয়ে দিতে পারলেই হল। সেই বেলুন বিক্রি না হয়ে আর যায় না!
রাহুল-সাগররা সকাল থেকেই তৈরি হয়। দুপুর গড়াতেই পসরা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। এক সঙ্গে ২০টি। তার বেশি সামলাতে পারে না তারা। একটাই লক্ষ্য, সব ক’টি বিক্রি করে ঘরে ফেরা। সাধারণ দিনগুলিতে রাত ৯টার মধ্যেই লক্ষ্যপূরণ করে বাড়ি চলে যায় তারা। পুজোর দিনগুলিতে আলাদা ব্যাপার। দফায় দফায় বাড়ি ছুটতে হয়। স্টক আনতে। বেলুন ফোলানোর পাম্পটা যে বাড়িতেই থাকে!
অন্য কিশোরদের কাছে পুজো মানেই নতুন জামা-জুতো। ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া স্বপন কীর্তনিয়ার কাছে দুর্গাপূজা হল বাড়তি রোজগার। ২০টির জায়গায় ৬০-৭০-৮০টি বেলুন একদিনে বিক্রি করে দেওয়া। দিন নেই, রাত নেই, সারাক্ষণ কেনাবেচা। সে সময় স্কুল ছুটি থাকে বলে সুবিধে হয়।
তাদের প্রত্যেকেরই টানাটানির সংসার। কারও বাবা রিকশা চালান, কেউ আবার রংমিস্ত্রির ছেলে। সংসার টানতে মা পরিচারিকার কাজ করেন। বেলুন বিক্রির সামান্য উপার্জনেও মা-বাবাকে সাহায্য করা যায়। এ তাদের কাছে বড় তৃপ্তির, জানাল রাহুল-স্বপন। সাগর আবার কথা বলতে পারে না। তারাই তাকে দরদামে সাহায্য করে। বেলুন বিক্রির টাকা পকেটে ঢুকিয়ে সাগর যখন জোরে হেসে ওঠে, রাহুল-স্বপন তা দেখেই আনন্দ পায়। বেলুন হাতে শিশুরা খিলখিল করে হেসে উঠলেও আনন্দ হয় তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy