Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

দিল্লিতে অনাহারে মৃত্যু এ রাজ্যের ৩ শিশুর

সংসদের চৌহদ্দি থেকে মাত্র দশ কিলোমিটার দূরে, পূর্ব দিল্লির মান্ডাবলী এলাকায় খেতে না-পেয়ে মারা গেল তিনটি শিশু। তাদের পরিবার আদতে মেদিনীপুরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ময়নাতদন্তের ভিত্তিতে বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই অপুষ্টিতে ভুগছিল তিন শিশুকন্যা। গত সাত দিন কোনও খাবারই জোটেনি তাদের।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫৮
Share: Save:

অনাহারে মৃত্যু এ বার খাস রাজধানীতে।

সংসদের চৌহদ্দি থেকে মাত্র দশ কিলোমিটার দূরে, পূর্ব দিল্লির মান্ডাবলী এলাকায় খেতে না-পেয়ে মারা গেল তিনটি শিশু। তাদের পরিবার আদতে মেদিনীপুরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ময়নাতদন্তের ভিত্তিতে বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই অপুষ্টিতে ভুগছিল তিন শিশুকন্যা। গত সাত দিন কোনও খাবারই জোটেনি তাদের।

পেশায় রিকশাচালক মঙ্গল মেদিনীপুর থেকে দিল্লি আসেন ১৫ বছর আগে। দশ বছর আগে বিয়ে করেন বীণাকে। তাঁদের তিনটি মেয়ে— মানসী (৮), পারুল (৪) ও শিখা (২)। পুলিশের বক্তব্য, পাঁচ-ছ’বছর ধরে মানসিক ভাবে অসুস্থ বীণা। বাচ্চারা যে না-খেয়ে রয়েছে, সেটা তেমন ভাবে বুঝতেই পারেননি তিনি। পুলিশকে বীণা জানিয়েছেন, বাচ্চারা গত ক’দিন ধরে বমি করছিল। তাই তাদের কিছু খেতে দেননি।

মঙ্গলবার দুপুর থেকেই নেতিয়ে পড়ে তিনটি মেয়ে। তাদের লালবাহাদুর শাস্ত্রী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, আগেই মৃত্যু হয়েছে তাদের। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বলছে, বাচ্চাগুলির পেট অস্বাভাবিক ফোলা ছিল। তাদের শরীরে খাবার বা জলের ছিটেফোঁটা পাওয়া যায়নি। যা থেকে বোঝা যায়, বাচ্চাগুলি দীর্ঘদিন ধরেই অপুষ্টির শিকার। এবং অন্তত সাত দিন তাদের পেটে কিছু পড়েনি। ডিসিপি (ইস্ট) পঙ্কজ কুমার বলেন, ‘‘নিশ্চিত হওয়ার জন্য দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবারই মান্ডাবলীর পন্ডিত চকের ৭২ নম্বর বাড়িতে আসে পরিবারটি। বাড়িটি মঙ্গলের বন্ধু নারায়ণ যাদবের। তিনি জানান, মঙ্গল আগে যে বাড়িতে থাকতেন, তার মালিকের রিকশা-ই চালাতেন। সেটি চুরি গেলে
মঙ্গলদের বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়। তাঁরা নারায়ণের বাড়িতে এসে ওঠেন। তার পর কাজের সন্ধানে বেরিয়ে যান মঙ্গল। তাঁর সঙ্গে আজ বিকেল পর্যন্ত যোগাযোগ করতে পারেনি পুলিশ।

প্রতিবেশীরা পুলিশকে বলেছেন, সদ্য আসা পরিবারটি সম্বন্ধে তাঁরা বিশেষ কিছু জানতেন না। তারা এখানে আসা ইস্তক দরজা অধিকাংশ সময়ে ভেজানো থাকত। ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের আদেশ দিয়েছেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। যদিও দিল্লির বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারির বক্তব্য, ‘‘গণবণ্টন ব্যবস্থার যে কী হাল, সে তো দেখাই যাচ্ছে!’’ আপ পাল্টা বলছে, এমন মর্মান্তিক ঘটনা নিয়েও রাজনীতি করছে বিজেপি! অথচ পরিকাঠামো আদৌ দায়ী কি না, সেটাই এখনও বলা যাচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Starvation Death Delhi West Bengal Midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE