সংগৃহীত চিত্র
এক দিকে কটুকাটব্য এবং রাজনৈতিক দ্বৈরথ, অন্য দিকে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বিরোধ— সব মিলিয়ে লোকসভার শেষ দিনে প্রকট হল বিরোধীদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। যার ফলে কৃষি সংক্রান্ত বিল নিয়ে আন্দোলনের শেষ লগ্নে পাশাপাশি আসতে পারল না কংগ্রেস এবং তৃণমূল। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার মতে, “আন্দোলনের শুরুটা দুরন্ত হলেও শেষে যেন একটু চোনা পড়ে গেল।’’
লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য আহ্বায়ক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এ জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় তুলেছেন কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরীকে। তাঁর কথায়, “ইচ্ছাকৃত ভাবে অধীরবাবু বিষয়টি ভন্ডুল করেছেন। ওঁর বিজেপি তথা প্রধানমন্ত্রীর উপর প্রতি আনুগত্য রয়েছে। যেটা লোকসভায় বিরোধী ঐক্যকে নষ্ট করেছে।’’ বুধবার বিকেল পাঁচটার সময় লোকসভার বিরোধী দলগুলি সংসদ চত্বরে ধর্না দেবে জানা সত্ত্বেও তিনি কেন কলকাতার উড়ান ধরলেন, তার ব্যাখ্যায় কল্যাণের দাবি, “মঙ্গলবার সমস্ত বিরোধী দলের উপস্থিতিতে স্থির হয়, বুধবার দুপুর দুটোয় গাঁধী মূর্তির সামনে ধর্না হবে। কিন্তু দুটোয় কংগ্রেস নিজেদের বৈঠক ডেকে বসে। আমরা শুধু টিআরএস-কে নিয়ে ধর্না দিই।’’
অন্য দিকে অধীর বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাচ্ছি, উনি যেন দয়া করে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠান অথবা সৌগত রায়কে দায়িত্ব দিন। যে হেড কনস্টেবলটিকে তিনি পাঠিয়েছেন, তার সঙ্গে তো কথাই বলা যায় না। তিনি নিয়মকানুনও বোঝেন না। আমরা লোকসভার অধিবেশন শুরুর ঠিক আগে ধর্নায় বসেছি, যাতে অধিবেশনে তার প্রভাব পড়ে।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, লোকসভা ও রাজ্যসভায় কংগ্রেসের দুই দলনেতার মধ্যেও দূরত্ব স্পষ্ট। রণকৌশল ঠিক করতে তাঁদের মধ্যে এক বারও বৈঠক হয়নি। দুই কক্ষের কংগ্রেস সাংসদেরা আলাদা ভাবে সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কৃষি সংক্রান্ত বিল নিয়ে সমস্ত বিরোধী দল লোকসভা বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলেও অধীর জানান, তিনি স্পিকারের সমাপ্তি বক্তৃতায় উপস্থিত থাকতে চান। মুখ্য সচেতক কে সুরেশ অধীরের পক্ষে থাকলেও উপ-দলনেতা গৌরব গগৈ, শশী তারুর ও কেরলের অন্য সাংসদেরা বিরোধিতা করেন। এ সবের পিছনে মূলত দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কাজ করছে বলে কংগ্রেস শিবিরের ব্যাখ্যা। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ-সহ কংগ্রেসের ২৩ জন নেতা সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে সক্রিয় নেতৃত্ব, সাংগঠনিক রদবদলের দাবি তুলেছিলেন। সেই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ছিলেন শশী তারুর, মনীশ তিওয়ারির মতো লোকসভার সাংসদ। তাঁরা অধীরকে লোকসভার দলনেতা করায় ক্ষুব্ধ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy