Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

অসমে গিয়ে নিহতদের পরিজনদের আশ্বাস দিয়ে এল তৃণমূল

অসমের তিনসুকিয়ায় জঙ্গি হানায় নিহত পাঁচ জনের পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়ার দাবিতে রাষ্ট্রপতির দরবারে নিয়ে যাবে তৃণমূল।

নিহতদের পরিবারকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন বিধায়ক মহুয়া মৈত্র (বাঁ দিকে) এবং সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। নিজস্ব চিত্র

নিহতদের পরিবারকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন বিধায়ক মহুয়া মৈত্র (বাঁ দিকে) এবং সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৫৩
Share: Save:

অসমের তিনসুকিয়ায় জঙ্গি হানায় নিহত পাঁচ জনের পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়ার দাবিতে রাষ্ট্রপতির দরবারে নিয়ে যাবে তৃণমূল। ধলার খেরবাড়ি গ্রামে আজ নিহতদের স্বজনের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। সেই দলে ছিলেন তিন সাংসদ ও এক বিধায়ক। পরে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন তাঁরা। পরিবার পিছু এক লক্ষ টাকা করে সাহায্য দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে বাংলার শাসক দল।

তিন মাস আগে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) প্রকাশের পরে শিলচরের কুম্ভীরগ্রাম বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয়েছিল তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের। এ বার অবশ্য অসম সরকার আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল, প্রতিনিধিদলকে বাধা দেওয়া হবে না। তবে প্রশাসনের তরফে অনুরোধ ছিল, ঘটনাস্থলে গিয়ে কেউ যেন ‘প্ররোচনামূলক’ মন্তব্য না করেন। কার্যক্ষেত্রেও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা আজ ঘটেনি। বরং, বিজেপির স্থানীয় বিধায়ক নিজে উপস্থিত হয়ে তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সফর তদারকি করেন।

তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের গত বারের সফরের সময় শিলচল বিমানবন্দরে তাদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়েছিল। সেই সময়ে কুম্ভীরগ্রামে পুলিশ পেটানোর অভিয়োগ দায়ের হয় তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে। এ বারের সফরের আগে মহুয়া গত রাতেও জানিয়েছিলেন, তাঁর শরীর খারাপ। আসতে পারবেন না। কারা যাবেন, সেই বিষয়েও তিনি কিছুই জানেন না। কিন্তু আজ সকালে শার্ট-ট্রাউজার্সে ডিব্রুগড় বিমানবন্দরে নামেন তিনি। পরে পোশাক বদলে শাড়ি পরে ঘটনাস্থলে যান।

আরও পড়ুন: আমাদের থেকে উন্নয়ন প্রকল্পের দান নিয়ে মূর্তি বানাচ্ছ? ফুঁসছে ব্রিটেন

পুলিশ পাহারাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। টানা বৃষ্টির মধ্যে গ্রামে পৌঁছে নিহতদের বাড়ি গিয়ে তাঁরা আশ্বাস দেন, বাংলার মানুষ, বাংলার সরকার এবং তৃণমূল তাঁদের পাশে আছে। তাঁদের ন্যায়বিচার আদায়ের ব্যবস্থা হবে। ঘটনার জন্য রাজ্য সরকারকে দোষ দিতে ছাড়েনি তৃণমূল।

তৃণমূলের মুখপাত্র ও প্রতিনিধিদলের নেতা বলেন, ‘‘তৃণমূল রাজনীতি করতে নয়, নিহতদের পাশে দাঁড়াতে এসেছে। গুজরাত থেকে বিহারীদের তাড়ানো হচ্ছে। এখান থেকে বাঙালিদের তাড়ানো হচ্ছে। মানুষের রক্ত ঝরছে।” মহুয়ার বক্তব্য, “পরিবারগুলি এখানে দীর্ঘদিনের বাসিন্দা। কারও সঙ্গে অশান্তি হয়নি। তার পরেও কোন অপরাধে পাঁচ জনকে মেরে ফেলা হল, তা তাঁরা বুঝতেই পারছেন না। অসমে বাঙালি ও অসমিয়ারা এত বছর সহাবস্থান করছেন। কিছু অশুভ শক্তি এখানে সক্রিয়, তাদের খুঁজে বার করতে হবে।’’

আরও পড়ুন: রবিশঙ্কর ভারসাম্য চান তথ্য সুরক্ষায়

শদিয়ার বিজেপি বিধায়ক বলিন চেতিয়া (যিনি সফর তদারকিকে ছিলেন) বলেন, “আমরা মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। তৃণমূলকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছি। ওরা নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এসেছেন।” ঘটনাস্থল ঘুরে এসে তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা জানান, দল জঙ্গিদের বিরুদ্ধে, অসমিয়াদের বিরুদ্ধে নয়।

নিহতদের পরিবারের লোকজন তৃণমূল নেতাদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন, উগরে দেন ক্ষোভ। নিহতদের বাড়িতে টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা না করলেও পরে তৃণমূল সূত্রে জানানো হয় পরিবারপিছু এক লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। দলের মুখপাত্র জানান, কোনও ক্ষতিপূরণই যথেষ্ট নয়। তবু সামান্য সাহায্য করা হচ্ছে। পরিবারগুলিকে নিয়ে সাক্ষাৎ চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। স্থানীয় বাঙালি সংগঠন তাঁদের সংবর্ধনা দিতে চাইলেও নেননি তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। দুপুরের বিমানেই ফিরে যান তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Assam TMC Delegations Massacre
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE