লাগাতার অশান্তি, বার বার পাক হানা, সেনা-জঙ্গি সংঘাতে উত্তপ্ত ভূস্বর্গ দেশের পর্যটন মানচিত্রে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বেশ ক’বছর ধরেই। তবু পুজোর মরসুমে আশায় ছিল কাশ্মীর। কিন্তু তাতে জল ঢেলে এখনও পর্যন্ত বুকিং হয়েছে হাতে গোনা কয়েকটি হোটেল ও হাউসবোটে। এর জন্য বিদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের প্রচারকে দায়ী করছেন বেসরকারি হোটেল মালিক বা ট্যুর অপারেটররা। তাঁদের দাবি, উপত্যকার পরিস্থিতি এমনিই অশান্ত। তার উপর টিভিতে সেই খবর দিনরাত সম্প্রচার হওয়ায় আতঙ্কে পা দিচ্ছেন না পর্যটক। যার ফলে গত ক’বছরে পর্যটক সমাগম ৮০% কমেছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, দু’দশকের মধ্যে এত বড় ক্ষতির মুখে পড়েনি কাশ্মীরের পর্যটন ব্যবসা।
হোটেল মালিকদের বক্তব্য, পর্যটক না এলেও কর্মীদের বাঁধা বেতন দিতে হচ্ছে তাঁদের। অন্য খরচও মেটাতে হচ্ছে। ফলে লাভ হোক না হোক খরচ বাড়ছে। অনেকেই বন্ধ করেছেন হোটেল। কাশ্মীরের হাউস বোট ওনার্স অ্যাসোশিয়েশনের চেয়ারম্যান গুলাম রসুল সিয়াফ বলেছেন, ‘‘পুজোয় এ বার মাত্র ০.১ শতাংশ বুকিং হয়েছে।’’ তাঁর মতে, এ ভাবে সন্ত্রাসের প্রচারই চলতে থাকলে কাশ্মীরের পর্যটন শিল্প ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা নেই। গুলাম জানান, পর্যটক এখন ভিড় জমাচ্ছেন লাদাখের দিকে। বিদেশি পর্যটকও ঝুঁকছেন সে দিকেই।
ক্ষতির ধাক্কায় নাজেহাল হয়ে তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের দ্বারস্থ হন এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্তদের একাংশ। গুলাম বলেছেন, ‘‘বিক্ষিপ্ত ভাবে অশান্তি হচ্ছে ঠিকই তবে তা সীমান্ত এলাকায় বেশি। পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয় অঞ্চলগুলির থেকে সেগুলি দূরে। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীও মানুষকে জানান, কাশ্মীর নিরাপদ।’’ কাশ্মীর নিয়ে মানুষকে সদর্থক বার্তা দিতে ডাল লেকের ধারে আদনান সামির অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে জম্মু ও কাশ্মীর সরকার।
কিন্তু তা সত্ত্বেও আশার আলো দেখছেন না গুলামরা। পর্যটন ব্যবসায় টান পড়ার জন্য জিএসটিকেও দুষছেন তাঁরা। এক হোটেল মালিকের কথায়, ‘‘ নানা রকমের ট্যুর প্যাকেজ রেখেছি। আশা ছিল এই পুজোয় ভাল ব্যবসা হবে। কিন্তু বুকিংয়ের হাল হতাশাজনক।’’ পর্যটন দফতর জানাচ্ছে, পুজোয় গুলমার্গ, পহেলগাম, সোনমার্গের মতো জায়গাতে ভিড় জমান পর্যটক। এ বার সেখানেও মাছি মারবে হোটেলগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy