প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজ্যপাল তথাগত রায়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। একই সঙ্গে শপথ নিয়েছেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী যিষ্ণু দেববর্মাও (মুখ্যমন্ত্রীর বাঁ দিকে)। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন মন্ত্রিসভার আরও সদস্যেরা।
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তা রাখলেনও বিজেপি নেতৃত্ব। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি ছোট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-সহ মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির হলেন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে এক ঝাঁক রাজনৈতিক তারকা। প্রথা ভেঙে রাজভবনের পরিবর্তে আগরতলার অসম রাইফেলস গ্রাউন্ডে আয়োজন করা হয় শপথগ্রহণের। অনেক বেশি মানুষ যাতে এই অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেন তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। শুক্রবার এক চোখধাঁধানো অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার নবম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন বিপ্লব কুমার দেব। তাঁর সঙ্গেই উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন যিষ্ণু দেববর্মাও।
কে না ছিলেন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ, লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর জোশী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ-সহ মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য, ত্রিপুরার নির্বাচনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া অসমের অর্থমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। একেবারে অনুষ্ঠান মঞ্চেই ছিলেন সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব আগেই জানিয়েছিলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ দিনের অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা দেখল এক ঝাঁক মুখ্যমন্ত্রীকেও। এসেছিলেন রাজস্থানের মুখমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে, অসমের সর্বানন্দ সোনোওয়াল, গুজরাতের বিজয় রূপাণী, মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিংহ চৌহান, মণিপুরের এন বীরেন সিংহ, নাগাল্যান্ডের নেফিয়ু রিও, ছত্তীসগঢ়ের রাজনাথ সিংহ, ঝাড়খণ্ডের রঘুবর দাস, বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী প্রমুখ। ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা মুকুল রায়ও।
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে মুরলী মনোহর জোশী, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং রাজনাথ সিংহ (বাঁ দিক থেকে)।
আরও পড়ুন:
তাণ্ডবের ক্ষতে প্রলেপ, মানিক-দুয়ারে বিপ্লব
নয়া বসত কোথায়, কত দিনের, জানেন না মানিকজায়া
মুখ্যমন্ত্রী পদে বিপ্লবকে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল তথাগত রায়। এ দিন আরও যে সাত জন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন তাঁদের মধ্যে আছেন বিজেপির নির্বাচনী জোটসঙ্গী আইপিএফটি (ইন্ডিজেনাস পিপল’স ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা)-র সভাপতি নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা ও আর এক নেতা মেবার জমাতিয়া। তাঁরা ছাড়াও রয়েছেন কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে আসা রতনলাল নাথ ও সুদীপ রায়বর্মন। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকার জন্য রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছিলেন বিজেপি নেতা রাম মাধব ও বিপ্লব দেব। রাজনৈতিক সৌজন্য মেনে মানিকবাবুও এই অনুষ্ঠানে যান। তাঁকে হালকা মেজাজে বিজেপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে গল্প করতেও দেখা যায়। অনুষ্ঠানের শেষে প্রধানমন্ত্রী মানিকবাবুকে বেরনোর রাস্তা পর্যন্ত এগিয়েও দেন।
সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়ে অমিত শাহ।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘‘এখন যাঁরা বিরোধী আসনে বসেছেন, তাঁরা দীর্ঘ দিন শাসন ক্ষমতায় ছিলেন। তাঁরা নিঃসন্দেহে অনেক অভিজ্ঞ। উল্টো দিকে, আমাদের এই দল নতুন, তুলনায় অভিজ্ঞতা কম।’’ তাঁর ভাষণে নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘এটা ত্রিপুরার এক ঐতিহাসিক দিন। যেন মনে হচ্ছে ত্রিপুরা দেওয়ালি পালন করছে।’’ বিজেপি-বিরোধীদের আস্থা অর্জনের চেষ্টায় মোদী বলেন, ‘‘আমরা এখানে এসেছি ত্রিপুরাবাসীকে আশ্বস্ত করতে যে যাঁরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন আর যাঁরা দেননি, এই সরকার তাঁদের সবার জন্যই। নির্বাচন মিটে গিয়েছে। আমাদের এখন সামনের দিকে এগোতে হবে।’’ এরই পাশাপাশি মোদী এ কথা জানাতেও ভোলেননি যে কেন্দ্রীয় সরকার উন্নয়নের জন্য ত্রিপুরা সরকারকে সব ধরনের সাহায্য করবে।
ছবি: বাপি রায়চৌধুরী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy