Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মুখ্যমন্ত্রী হবেন এক শিবসৈনিক, বার্তা উদ্ধবের

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগেও দু’দলের আসন সমঝোতা মসৃণ ভাবে হয়নি। শেষমেশ জট ছাড়িয়ে তা চূড়ান্ত করতে মাঠে নামতে হয়েছিল খোদ অমিত শাহকে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৯ ০১:১৯
Share: Save:

জোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে বড় শরিকের ‘জায়গা’ বিজেপিকে ছেড়ে দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু এক দিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে এক ‘শিবসৈনিক’ নিশ্চয় বসবেন বলে ফের বার্তা দিলেন শিবসেনার কর্ণধার উদ্ধব ঠাকরে। দলীয় মুখপত্রে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “এক দিন এক শিবসৈনিক মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আমার বাবা এবং শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরের কাছে।” তবে একই সঙ্গে জানালেন, ছেলে আদিত্য ব্যালটের লড়াইয়ে নেমেছেন মানে এই নয় যে, তিনি নিজে অবসর নিতে চলেছেন।

উদ্ধবের শপথের কথা শুনে বিজেপির তরফে প্রকাশ জাভড়েকরের মন্তব্য, ‘‘ মনের বাসনার কথা সকলেই বলতে পারেন। বাস্তবে কী ঘটবে, তা আমরা দেখব।’’ শিবসেনা বিজেপির অন্যতম পুরনো জোটসঙ্গী হলেও, এ বার তাদের গাঁটছড়া হয়েছে বিস্তর দড়ি টানাটানির পরে। ঠিক হয়েছে, ২১ অক্টোবরের ভোটে রাজ্যের মোট ২৮৮টি বিধানসভা আসনের মধ্যে শিবসেনা প্রার্থী দেবে ১২৪টি আসনে। ১৫০ টিতে বিজেপি। বাকি ১৪টি জুটেছে জোটের ছোট শরিকদের বরাতে।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগেও দু’দলের আসন সমঝোতা মসৃণ ভাবে হয়নি। শেষমেশ জট ছাড়িয়ে তা চূড়ান্ত করতে মাঠে নামতে হয়েছিল খোদ অমিত শাহকে। দু’দলের জোটে কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছিল ২০১৪ সালের বিধানসভা ভোটও। তবে জোট বেঁধে লড়লেও মাঝেমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তাঁর সরকার এবং বিজেপির বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করে শিবসেনা। তা সে নোটবন্দির জেরে অর্থনীতি থমকে যাওয়াই হোক, বা হালে এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের বিরুদ্ধে ইডি-র তৎপরতা। যদিও তা ভোটে আসন ভাগাভাগির প্রক্রিয়ায় চাপ বাড়ানোর কৌশল বলেই অনেকে মনে করেন। এই আবহে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আদিত্যর ব্যালট-যুদ্ধে প্রবেশ তাই সাড়া ফেলে দিয়েছে মরাঠা রাজনীতিতে।

এক বার এক টিভি-অনুষ্ঠানে মহারাষ্ট্রের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের সামনেই আদিত্যের কাছে সঞ্চালকের প্রশ্ন ছিল, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন তিনি দেখেন কি না। তখন কৌশলে সেই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছিলেন উদ্ধব-পুত্র। কিন্তু তিনি প্রার্থী হওয়ার পর থেকে উদ্ধব যে ভাবে বার বার বালাসাহেবের কাছে শিবসৈনিককে মুখ্যমন্ত্রী করার প্রতিজ্ঞার প্রসঙ্গ তুলছেন, তাতে অনেকেরই মনে হচ্ছে, আদিত্যকেই ভবিষ্যতে ‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখ’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করতে পারে সেনা।

তবে ছেলের ভোট-রাজনীতিতে প্রবেশ যে আদপে তাঁর নিজের বাণপ্রস্থের প্রস্তাবনা নয়, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন উদ্ধব। বলেছেন, “আদিত্য ভোটে লড়ছে মানে এই নয় যে, সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে যাচ্ছি আমি।” একই সঙ্গে যোগ করেছেন, আপাতত চাষবাস করতে যাওয়ার কোনও ইচ্ছে তাঁর নেই। অনেকের মতে যা পওয়ারের ভাইপো তথা এনসিপি নেতা অজিত পওয়ারকে কটাক্ষ। কারণ, ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারিতে ইডি-র তদন্ত শুরুর পরে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অজিত। একই সঙ্গে ছেলেকেও পরামর্শ দিয়েছেন রাজনীতির বদলে চাষবাস কিংবা ব্যবসাকে বেছে নিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uddhav Thackeray Shiv Sena Politics Maharashtra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE