Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অনশনে বসেই ঋণ আদায় নিশ্চিত করলেন বেকাররা

প্রধানমন্ত্রীর গ্রামীণ রোজগার যোজনায় ঋণের আবেদন মঞ্জুর হলেও টাকা দিতে চাইছে না ব্যাঙ্ক। প্রতিবাদে চার দিন ধরে অনশন করলেন ২৭ জন বেকার যুবক। ঋণের টাকা ছাড়া যাবেন না, এই প্রতিজ্ঞা নিয়েই তাঁরা বসে পড়েন ব্যাঙ্কের সামনে। প্রথম দু’দিন কেউ বিশেষ গুরুত্ব না দিলেও কাল তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়লে শুরু হয় প্রশাসনের দৌড়ঝাঁপ।

উত্তম সাহা
শিলচর শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৫ ০৩:২৭
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রীর গ্রামীণ রোজগার যোজনায় ঋণের আবেদন মঞ্জুর হলেও টাকা দিতে চাইছে না ব্যাঙ্ক। প্রতিবাদে চার দিন ধরে অনশন করলেন ২৭ জন বেকার যুবক। ঋণের টাকা ছাড়া যাবেন না, এই প্রতিজ্ঞা নিয়েই তাঁরা বসে পড়েন ব্যাঙ্কের সামনে। প্রথম দু’দিন কেউ বিশেষ গুরুত্ব না দিলেও কাল তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়লে শুরু হয় প্রশাসনের দৌড়ঝাঁপ। আজ জেলা শিল্প কেন্দ্র এবং ব্যাঙ্ককর্তারা অনশনস্থলে গিয়ে তাঁদের ঋণের টাকা শীঘ্র মিলবে বলে আশ্বস্ত করেন। তাঁদের আশ্বাস পেয়ে অনশন প্রত্যাহার করে নেন তাঁরা।

অনশনকারীদের মুখপাত্র সৌরভ দেব বলেন, ‘‘জেলা শিল্প কেন্দ্র থেকে প্রধানমন্ত্রীর গ্রামীণ রোজগার যোজনায় ঋণের আবেদন পত্র চাওয়া হয়েছিল। অন্যদের সঙ্গে তাঁরাও আবেদন করেন। যাঁদের ঋণ মঞ্জুর হয়েছে, তাঁদের নাম বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২৭ জনকে ঋণ দেওয়ার দায়িত্ব পড়ে ইউকো ব্যাঙ্কের রংপুর শাখার উপর। কিন্তু ব্যাঙ্ক শুরু থেকেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছিল না। তাঁদের নানা ভাবে ঘোরানো শুরু হয়। অন্যান্য ব্যাঙ্ক থেকে ২০১৪-১৫ অর্থ বর্ষের ঋণ বহু আগেই বন্টন করা হয়। কিন্তু ইউকো-র রংপুর শাখা থেকে একটি টাকাও কাউকে দেওয়া হয়নি।’’ এরই প্রতিবাদে আমরণ অনশনে বসেন তাঁরা। রংপুর শাখার ম্যানেজার জ্যোত্স্না দাস বলেন, ‘‘প্রায় সবকটি আবেদনে এক বা একাধিক গড়মিল ছিল। এতে ঋণ আদায়ের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই যোজনায় আগেও বহু টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। তাই আমরা সমস্ত কাগজ জেলা শিল্প কেন্দ্রে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছি।’’ তাঁর এই কথায় অবশ্য আন্দোলনকারীরা নড়তে নারাজ। পরে ব্যাঙ্কের রিজিওনাল ম্যানেজার, নাজিরপট্টি শাখার ম্যানেজার প্রদীপ পালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনিই আজ জেলা শিল্প কেন্দ্রের ম্যানেজার গৌতম দাসকে সঙ্গে নিয়ে অনশনস্থলে ছুটে যান। কথা বলেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। তাঁদের ঋণের টাকা দ্রুত প্রদানের অঙ্গীকার করেন তাঁরা।

গৌতমবাবু বলেন, ২০১৪-১৫ সালের মঞ্জুরি বাতিল হয়ে গিয়েছে। তাই নতুন করে সবাইকে আবেদন করতে হবে। তবে ওই ২৭ জন যেহেতু ইন্টারভিউ দিয়ে মনোনীত হয়েছেন, তাঁদের আর নতুন করে ইন্টারভিউ দিতে হবে না। তিনি সে সব কাগজ দেখে দ্রুত ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেবেন। প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘মঞ্জুরি সংক্রান্ত কাগজ পেলেই টাকা দিয়ে দেব।’’

অনশনকারীদের সমর্থনে চারদিন ধরে সঙ্গে ছিলেন কল্পতরু, প্রভা ইত্যাদি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মকর্তারাও। কল্পতরুর সভাপতি অংশুমান ভট্টাচার্য বলেন, তাঁরা বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রাখবেন। কোনও ভাবে এই তরুণ-তরুণীদের হয়রান করা হলে আন্দোলনে নামবেন তাঁরা। সবাইকে দ্রুত ঋণ প্রদানের আর্জিও তিনি জানান। সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে স্মারকপত্র দিয়ে তাঁরা ঋণমঞ্জুরির পরও কেন ব্যাঙ্ক থেকে টাকা মেলে না, তার তদন্ত দাবি করেছেন। তাঁদের আশঙ্কা, ঋণ না দিয়ে ভর্তুকি সরিয়ে নেওয়ার একটা চক্র বিভিন্ন জায়গায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ব্যতিক্রম নয় শিলচরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE