Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
National News

‘ওকে ছেড়ো না!’ মৃত্যুর আগে ভাইকে টেক্সট দিল্লির বিমানসেবিকার

ময়ঙ্কের বক্তব্য, স্ত্রীর মেসেজ পেয়েই ছাদে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়েও অ্যানিসিয়াকে খুঁজে পাননি। এর কিছু ক্ষণ পরেই তাঁর নিথর দেহ মেলে। তবে একে আত্মহত্যা বলতে নারাজ মৃতার পরিবার।

মৃত্যুর ঠিক আগে অনেককেই টেক্সট মেসেজ করেন অ্যানিসিয়া। ছবি: অ্যানিসিয়া বাত্রার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সৌজন্যে।

মৃত্যুর ঠিক আগে অনেককেই টেক্সট মেসেজ করেন অ্যানিসিয়া। ছবি: অ্যানিসিয়া বাত্রার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সৌজন্যে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮ ১১:৫৬
Share: Save:

নিজের স্বামী ময়ঙ্ককে যেন ছেড়ে দেওয়া না হয়। মৃত্যুর আগে তাঁর ভাইকে এমনটাই টেক্সট মেসেজ করেছিলেন দিল্লির মৃত বিমানসেবিকা অ্যানিসিয়া বাত্রা। অ্যানিসিয়ার ভাই কর্ণ জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগে ময়ঙ্ক ছাড়া তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন অ্যানিসিয়া। কর্ণ বলেন, “আমার বোন টেক্সট মেসেজ করে পুলিশ ডাকতে বলেছিল। ও বলেছিল, ময়ঙ্ক ওকে ঘরে বন্ধ করে রেখেছে। ...ময়ঙ্কের জন্যই তাঁর জীবন শেষ হয়ে যাবে।” অ্যানিসিয়া লিখেছিলেন, “ওকে ছেড়ো না!”

শুক্রবার দিল্লির বাড়ির ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন অ্যানিসিয়া। অভিযোগ, আত্মহত্যা করেছেন তিনি। মৃত্যুর আগে করা টেক্সট মেসেজ এই গোটা ঘটনায় নতুন করে রহস্যের জন্ম দিয়েছে।

ময়ঙ্কের বক্তব্য, স্ত্রীর মেসেজ পেয়েই ছাদে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়েও অ্যানিসিয়াকে খুঁজে পাননি। এর কিছু ক্ষণ পরেই তাঁর নিথর দেহ মেলে। তবে একে আত্মহত্যা বলতে নারাজ মৃতার পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, পণের দাবি না মেটানোয় অ্যানিসিয়াকে খুন করতে পারেন তাঁর স্বামী ময়ঙ্ক সিঙ্ঘভি। ঘটনার তিন দিন পর ফের মৃতার দেহের ময়নাতদন্ত করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: ছেলেধরা সন্দেহে কর্নাটকে গুগলের ইঞ্জিনিয়ারকে পিটিয়ে খুন

বছর দুয়েক আগে বিয়ে হয়েছিল অ্যানিসিয়া এব‌ং ময়ঙ্কের। ছবি: অ্যানিসিয়া বাত্রার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সৌজন্যে।

দিল্লির ডিসিপি (সাউথ) রোমিল বানিয়া জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ ওই ঘটনা ঘটে। মৃতের নাম অ্যানিসিয়া বাত্রা (৩২)। জার্মান বিমান সংস্থা লুফৎহান্‌সা এয়ারলাইন্স-এর বিমানসেবিকা অ্যানিসিয়া দক্ষিণ দিল্লির হজ খাস এলাকায় বছর সাতেক ধরেই ময়ঙ্কের সঙ্গে একটি বাড়িতে বসবাস করতেন। বছর দুয়েক আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে ওই ঘটনার সময় ময়ঙ্ক বাড়িতেই ছিলেন বলে জানিয়েছেন। মৃত্যুর ঠিক আগে ময়ঙ্ককে একটি টেক্সট মেসেজে অ্যানিসিয়া লিখেছিলেন, এ বার যে কোনও রকমের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন তিনি। সেই টেক্সট করার পরই ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ। ছাদ থেকে অ্যানিসিয়ার দেহ নীচে পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যান ময়ঙ্ক। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

পুলিশের এই বক্তব্যে অবশ্য সহমত নন অ্যানিসিয়ার পরিবারের লোকজন। মৃতার ভাই কর্ণ বাত্রা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, পণের দাবিতে তাঁর দিদিকে প্রায়শই শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতেন ময়ঙ্ক। এ নিয়ে গত জুনেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অ্যানিসিয়ার বাবা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আর এস বাত্রা। তাতে তিনি ময়ঙ্ক-সহ তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে মেয়ের উপর অত্যাচারের দাবি করেছিলেন। কর্ণের সন্দেহ, “আমরা সত্যিই জানি না, অ্যানিসিয়া নিজেই ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছিল, না ওকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল!”

সংবাদমাধ্যমের কাছে কর্ণের দাবি, টাকার দাবি করা ছাড়া মদ্যপ অবস্থায় বোনকে মারধর করতেন ময়ঙ্ক। এমনকী তাঁর শাশুড়ির উপরেও এক বার হাত তুলেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: হাজারিবাগে বুরারি! মৃত ৬

কর্ণ আরও জানিয়েছেন, রবিবার দ্বিতীয় বারের ময়নাতদন্তের গোটাটাই ভিডিয়োগ্রাফ করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ। তবে ভিডিয়োগ্রাফ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। কর্ণের আরও অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের সঙ্গে কোনও সহযোগিতাই করছে না।

তদন্তে নেমে সেই সব অভিযোগও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এটি পণের দাবিতে খুন কি না, তা-ও দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। এ বিষয়ে একটি মামলাও রুজু করা হয়েছে। ময়ঙ্কের পরিবারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Suicide Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE